দেশজুড়ে

জামালপুরে বন্যায় দুই শতাধিক স্কুল প্রতিষ্ঠান বন্ধ

ভারি বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জামালপুরে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। ক্রমাগত পানি বৃদ্ধিতে অনেক স্কুল প্রতিষ্ঠান পানিতে তলিয়ে গেছে। পাশাপাশি জেলার প্রায় দুই শতাধিক স্কুল প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে।  গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনার পানি ১৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৮০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে চার উপজেলার ২০টি ইউনিয়নের ৭০টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।মঙ্গলবার সকাল থেকে যমুনার পানি বিপদসীমার ৮০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার ইসলামপুর, মেলান্দহ এবং সরিষাবাড়ীসহ আরো ৭০টি গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। জানা যায়, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি ১৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে বিপদসীমার ৮০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে জেলার ইসলামপুর উপজেলার ইসলামপুর সদর, কুলকান্দি, চিনাডুলি, বেলগাছা, নোয়ারপাড়া, সাপধরী, পার্থশী, পলবান্ধ, গোয়ালেরচর, দেওয়ানগঞ্জের চিকাজানি, চুকাইবাড়ি, ডাংধরা, বাহাদুরাবাদ, মাদারগঞ্জের বালিজুড়ী, চরপাকেরদহ, কড়ইচূড়া, জোড়খালী এবং মেলান্দহ উপজেলার মাহমুদপুর, ঘোষেরপাড়া, আদ্রা ইউনিয়নের প্রায় ৭০টি গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পানি নতুন নতুন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। স্থানীয় বিভিন্ন সড়ক ও ফসলি জমিতে পানি ওঠায় কর্মহীন হয়ে পড়েছে দুর্গত মানুষ। বসতঘরে বন্যার পানি ওঠায় বিভিন্ন বাঁধ এবং উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে বন্যাদুর্গত বাসিন্দারা। সেই সঙ্গে দুর্গত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বন্যার পানি ওঠায় একটি কলেজ, ১৩টি মাদরাসা, ১৩টি হাই স্কুল এবং ১৫৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া ৩৭৫ হেক্টর আউশ ধান ক্ষেত, ১৯০ হেক্টর রোপা আমন বীজতলা, ৩১৫ হেক্টর সবজি ক্ষেত, ১৫০ হেক্টর পাট ও ১০ হেক্টর কলার বাগান বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এদিকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যাদুর্গত এলাকায় এখন পর্যন্ত ৭০০ পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে। তবে প্রতিদিন বন্যার পানিতে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ায় সেই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলে জানিয়েছেন বন্যাদুর্গতরা। এ ব্যাপারে জামালপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. রাসেল সাবরিন জানিয়েছেন, বন্যাদুর্গত এলাকায় ৫৭ মেট্রিক টন চাল, নগদ ১ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। বন্যা মোকাবেলায় জেলা প্রশাসনের কাছে পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুদ রয়েছে। সেগুলো বিতরণ করা হবে।শুভ্র মেহেদী/এএম/এবিএস

Advertisement