হজ ইসলাম ধর্মাবলম্বী তথা বিশ্ব মুসলিমের জন্য জন্য একটি আবশ্যকীয় (ফরজ) ইবাদত বা ধর্মীয় উপাসনা। এটি ইসলাম ধর্মের পঞ্চম স্তম্ভ। শারীরিক ও আর্থিকভাবে সক্ষম প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর জন্য সমগ্র জীবনে একবার হজ সম্পাদন করা ফরজ বা আবশ্যক।হিজরি বছরের জিলহজ মাসের ৮ থেকে ১২ তারিখ হলো হজের জন্য নির্ধরিত সময়। মুসলিম উম্মাহ হজ পালনের জন্য বর্তমান সৌদি আরবের পবিত্র নগরী মক্কায় অবস্থিত বাইতুল্লাহ তাওয়াফ এবং মক্কার নিকটবর্তী মিনা, আরাফাত, মুযদালফা প্রভৃতি স্থানে গমন, অবস্থান ও তথায় নির্দিষ্ট কার্য সম্পাদন করতে হয়।হজ শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো ইচ্ছা করা বা সংকল্পবদ্ধ হওয়া। তবে ইসলামি বিধানে হজ বলতে বুঝায়- বাইতুল্লাহ শরিফকে প্রদক্ষিণ করা। আর্থিক ও শারীরিক সক্ষমতা সম্পন্ন মুসলিমের জন্য হজ অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাত।হজের গুরুত্ব সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত হাদিসে এসেছে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য হজ করে এবং অশ্লীল ও গোনাহের কাজ থেকে বেঁচে থাকে, সে হজ্জ থেকে এমন অবস্থায় ফিরে আসে, যেন আজই মায়ের গর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হয়েছে। অর্থাৎ জন্মের পর শিশু যেমন নিষ্পাপ থাকে, সেও তদ্রুপই হয়ে যায়। (বুখারি)`অন্য হাদিসে এসেছে, শয়তান আরাফার দিন হতে অধিক লজ্জিত ও অপদস্থ আর কোনো দিন হয় না, কেননা ওই দিনই আল্লাহ তাআলা স্বীয় বান্দার প্রতি অগণিত রহমত বর্ষণ করেন ও অসংখ্য কবিরা গোনাহ ক্ষমা করে দেন।রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন, "একটি বিশুদ্ধ ও মকবুল হজ সমগ্র পৃথিবী ও পৃথিবীর যাবতীয় বস্তুর চেয়ে উত্তম। বেহেশত ব্যতিত অন্য কোনো বস্তু তার প্রতিদান হতে পারে না।শারীরিক ও আথির্কভাবে সক্ষম প্রত্যেক মুসলমানের জন্য এ হজ সম্পাদনে তিনটি ফরজ, পাঁচটি ওয়াজিব এবং কিছু সুন্নাত কাজ আদায় করতে হয়। যা হজে গমনেচ্ছুদের জন্য বিস্তারিতভাবে পর্যায়ক্রমে তুলে ধরা হবে।পরিশেষে...হজ পালনের জন্য কোনো মুমিন যখন নিয়ত করে, তখন থেকেই সে আল্লাহর মেহমানে রূপান্তরিত হয়ে যায়। কারণ দুনিয়ার সব লোভ-লালসা থেকে নিজেকে মুক্ত করে পরকালের পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতিতে হজে গমনেচ্ছু ব্যক্তি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। হজ আদায়ের মাধ্যমে নিজের সব পাপ থেকে মুক্ত হতে সে বদ্ধপরিকর। গোনাহ মাফের মাধ্যমে সে নিজেকে উন্নত ও পবিত্র চরিত্রে আলোকিত করতে নেয় দীপ্ত শপথ।সুতরাং আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে যথাযথভাবে হজের সব আনুষ্ঠানিকতা পালনের তাওফিক দান করুন। হজের পূর্বেই হজের করণীয় কার্যক্রম সুষ্ঠ ও সুন্দরভাবে পালন করার প্রস্তুতি নেয়ার তাওফিক দান করুন। হজের মাধ্যমে নিজেকে নিষ্পাপ হিসেবে তৈরি করার জন্য চূড়ান্তভাবে দুনিয়ার মোহ ত্যাগ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।এমএমএস/পিআর
Advertisement