আন্তর্জাতিক

সোনাগাছি পতিতাপল্লীর দুঃখগাথা

আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের মেকআপ করছিলেন। ঘরে বন্দী যাদের জীবন, জীবনের সামান্য ঝলকানিতে অনেক সময় নিজ সন্তানদের নিয়ে দুষ্টুমিতেও মেতে উঠেন। কিন্তু এই নারীরাই এশিয়ার বৃহত্তম পতীতাপল্লীতে কাটাচ্ছেন নিজেদের জীবন।  এই বৃহত্তম পতিতাপল্লীর অবস্থান ভারতের পশ্চিমবঙ্গ অঙ্গরাজ্যের কলকাতার সোনাগাছিতে। পতিতাপল্লীর আয়তন ঠিক যতটা না বড় তারচেয়েও বড় এখানে বসবাসকারী নারীদের জীবনের দুঃখগাথা। দেশটির অন্তত ১৪ হাজার পতিতা বাস করেন এই পল্লীতে।কলকাতার সোনাগাছির এই পতিতাপল্লীতে প্রত্যেক বছর এক হাজারেরও বেশি নারীর জায়গা হয়। কীভাবে তারা এই পল্লীতে এসে পৌঁছাচ্ছেন সে বিষয়ে রয়েছে প্রত্যেকের আলাদা আলাদা গল্প। অনেকেই যে স্বেচ্ছায় এসেছেন এই পল্লীতে তা কিন্তু ঠিক নয়; পাচারের শিকার হয়ে পল্লীতে এসে খদ্দেরের সঙ্গে বিছানায় যেতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। দিন-রাত বিশ্রামহীনভাবে চলে খদ্দেরের মনোরঞ্জনের চেষ্টা।কিন্তু ব্যতিক্রমও যে নেই তা নয়; এখানে অনেকেই এসেছেন একটু বেশি আয়ের লোভে, যাতে শেষ বয়সে গিয়ে ভালোভাবে কাটাতে পারেন। স্মার্টফোনে গান শুনতে শুনতে সোনাগাছির পল্লীর বৈশাখী নামের এক যৌনকর্মী ডেইলি মেইলকে বলেন, আগে গৃহকর্মীর কাজ করে তিনি ১৫ ইউরো আয় করতেন, কিন্তু এখানে এসে তার মাসিক আয় ১৭০ থেকে ১৮০ ইউরো। বৈশাখী আরো বলেন, আমি একজনের সহায়তায় এখানে এসেছি, যিনি নিয়ে এসেছেন তিনি পারিবারিকভাবেই এই পেশায় জড়িত।পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা; এই শহরকে বলা হয় ‘আনন্দের শহর’ এবং ভারতের সবচেয়ে সুন্দর শহরগুলোর একটি হিসেবে বিবেচনা করা হয় কলকাতাকে। কিন্তু রাতের রাস্তা ও সোনাগাছি পতিতাপল্লীর নিশাচর জীবন সুন্দর এই শহরের মলিনতার চিত্র তুলে ধরে। সপ্তাহের শেষ দিনে জমে উঠে এখানকার যৌনকর্মীদের ব্যবসা। সব বয়সীরাই ভিড় জমান পল্লীতে।বেশ কিছু বেসরকারি ও সরকারি উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও) এইডস প্রতিরোধে যৌনকর্মীদের বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে আসছে। ভারতে যৌনব্যবসা বৈধ হলেও সমাজের চোখে নষ্ট হিসেবে চিহ্নিত দেশটির এই যৌনকর্মীরা।এসআইএস/আরআইপি

Advertisement