আন্তর্জাতিক

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেন এরদোয়ানের টার্গেটে?

তুরস্কে ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের পর এখন পর্যন্ত পঞ্চাশ হাজারেরও বেশি সরকারি কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এদের বড় একটি অংশকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।প্রথম দুদিনে সরকারের টার্গেটে সেনাবাহিনী এবং বিচারকসহ বিচার বিভাগের কর্মচারীরা ছিলেন। এখন আওতা বাড়িয়ে চলেছে এরদোয়ান সরকার। প্রধান টার্গেট হয়ে দাঁড়িয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এখন পর্যন্ত ২১ হাজার শিক্ষক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া, ১৫ হাজারেরও বেশি শিক্ষা কর্মকর্তাকে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে।পাশাপাশি, সারা দেশে সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দেড় হাজারেরও বেশি ডিনকে পদত্যাগ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বুধবার শিক্ষকদের ওপর খড়গ আরো শানিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের বিদেশ সফর আপাতত নিষিদ্ধ করা হয়েছে।অভ্যুত্থানের পর কেন শিক্ষকদের প্রধান টার্গেটে পরিণত করেছেন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান? এর উত্তর খুঁজতে ১৯৯৭ সালে ফিরতে হবে যখন শেষবার তুরস্কে সেনাবাহিনী সফল অভ্যুত্থান করে। অভ্যুত্থানের পর সারা দেশে বহু ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়েছিলো। নতুন করে জোর দেয়া হয় ধর্ম-নিরপেক্ষ শিক্ষা।২০০২ সালে এরদোয়ানের ইসলামপন্থী একে পার্টি নির্বাচনে জিতে ক্ষমতা নেয়ার পর পরিস্থিতি বদলাতে থাকে।তুর্কী সরকারের শুদ্ধি অভিযানে যাদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন ৩৭ হাজার ৭৭৭ জন শিক্ষক এবং শিক্ষাখাতের কর্মকর্তা, ৮ হাজার পুলিশ অফিসার, ৬ হাজার সৈন্য, ৩ হাজার ৪৫০ সরকারি কর্মচারী ও ২ হাজার ৭৪৫ বিচারক।ইস্তাম্বুল থেকে বিবিসির পল কারবি লিখছেন, ইসলামি শিক্ষা জোরদার করাকে এরদোয়ান তার ব্যক্তিগত মিশন হিসাবে নিয়েছিলেন। ক্ষমতায় এসেই এরদোয়ান বলেন, ধমনী কেটে দিলে কোনো মানুষ কি বাঁচতে পারে।গত ১৪ বছরে ছেলে-মেয়েদের জন্য আলাদা আলাদা ধর্মীয় স্কুল, যেগুলো তুরস্কে ইমাম-হাতিপ নামে পরিচিত, তা প্রায় শতভাগ বেড়ে গেছে। বন্ধ করে দেওয়া দেওয়া অনেক ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়। এরদোয়ান একাধিকবার খোলাখুলি বলেছেন, তিনি একটি ‘ধার্মিক’ প্রজন্ম তৈরি করতে চান এবং সেজন্য পুরো শিক্ষা খাতকে সংস্কার করতে চান।ঐতিহাসিক কারণে, তুরস্কে সমাজের মতই শিক্ষা খাতেও ইসলামপন্থী এবং ধর্মনিরপেক্ষতার একটি দ্বন্দ্ব সবসময়ই রয়েছে, এবং গত দেড় দশকে তা বেড়েছে।এসআইএস/এবিএস

Advertisement