দেশে বিভিন্ন টেলিভিশন বা স্যাটেলাইট চ্যানেলে প্রচারিত নাটক বা কাহিনীচিত্রের পরিচালকদের নিয়ে গঠিত সংগঠন ডিরেক্টর’স গিল্ড। সংগঠনটিতে নতুন কমিটি গঠনের লক্ষ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ২২ জুলাই অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ডিরেক্টর’স গিল্ডের নির্বাচনে সভাপতি পদে লড়বেন নন্দিত অভিনেতা ও দেশের জনপ্রিয় ইলেকট্রনিক্স পণ্যের প্রতিষ্ঠান ভিশনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর জাহিদ হাসান। নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হয়েছেন জনপ্রিয় তরুণ নির্মাতা মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ। নির্বাচনকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন নির্মাতারা। সমর্থনের আশায় প্রত্যেকেই নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন নাটক ও নাট্যনির্মাতাদের সেবার জন্য। রাজও আজ বুধবার বিকেলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের প্রতিশ্রুতি প্রকাশ করেছেন। তিনি লিখেছেন, প্রিয় নির্মাতা সহযোদ্ধাগণ-পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা নিবেন। আমরা সবাই জানি যে টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রিতে এই মুহূর্তে আমরা একটা চূড়ান্ত সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। এই চলতি সংকট মোকাবেলা এবং একটা সুন্দর কর্মপরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে আমরা আমাদের নির্মাতাদের সংগঠন ডিরেক্টর’স গিল্ড-এ ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। সংগঠনের একজন কর্মমুখী সদস্য হয়ে সবাইকে নিয়ে আমি যে সব বিষয়গু সবার আগে গুরুত্বসহকারে করতে চাই তা হলো -১) টেলিভিশন নাট্য নির্মাতাদের সংগঠন হিসেবে ডিরেক্টর’স গিল্ডকে সময়োপযোগী, আধুনিক, শক্তিশালী এবং কার্যকরী সংগঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা২) পেশাদারিত্বের জায়গা থেকে একজন পরিচালকের কোন রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি নেই। পরিচালকদের প্রথম শ্রেণির নাগরিকত্বের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি নিশ্চিত করা৩) যে সকল পরিচালক সময় সংকট ও সংযোগের অভাবে এখনো সদস্য হতে পারেননি, তাদের সদস্যপদ নিশ্চিত করা। এবং মেধা ও কাজের ভিত্তিতে নতুনদের সংগঠনে যুক্ত করে সংগঠনকে শক্তিশালী করা৪) প্রযোজক, শিল্পী সমিতি, নাট্যকার সংঘ, টেলিভিশন চ্যানেল, বিজ্ঞাপনদাতা বা এজেন্সি এবং কলাকুশলীসহ সকল সংগঠনের মধ্যে পারস্পরিক সমন্বয়ের মাধ্যমে অনিয়মগুলি দুর করে নিয়মনীতি স্থাপন ও প্রয়োগের মাধ্যমে একটি সুন্দর কর্মপরিবেশ তৈরি করা৫) চলতি নানা অসঙ্গতি নিয়ন্ত্রণ করে মেধা ও যোগ্যতানুযায়ী নির্মাতা, অভিনয়শিল্পীসহ সকল কলাকুশলীর উপযুক্ত পারিশ্রমিক নির্ধারণের বিষয়টি নিশ্চিত করা৬) টেলিভিশন নাটকের মান উন্নয়ন এবং নাটকের প্রয়োজনীয় বাজেট নিশ্চিত করা৭) টেলিভিশন চ্যানেল ও বিজ্ঞাপনী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে অতিরিক্ত বিজ্ঞাপনের বিষয়টি শিথিল করে একটা মাপকাঠি নিশ্চিত করা এবং টেলিশিন চ্যানেলকে পে-চ্যানেলে রূপান্তর করতে তাদের সঙ্গে একযোগে কাজ করা৮) ডিরেক্টর’স গিল্ড শুরু থেকে এ পর্যন্ত প্রায় অনেকটা অকর্যকর সংগঠন হিসেবে দাঁড়িয়ে ছিলো। তাই সংগঠনটির সাংগঠনিক ও আর্থিক সমৃদ্ধির কোন জায়গা তৈরি হয়নি। সুতরাং সম্মিলিত চেষ্টায় সাংগঠনিকভাবে এবং আর্থিকভাবে সংগঠনটিকে শক্তিশালী করা৯) ডিরেক্টর’স গিল্ড এর নিজস্ব আর্থিক ফান্ড সমৃদ্ধ করে, নানা প্রকার উন্নয়নমূলক কর্মপদক্ষেপ গ্রহণ করা। এই আর্থিক ফান্ডের একাংশ অস্বচ্ছল নির্মাতাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসাখাতে ব্যায় করা হবে১০) তরুণ মেধাবী নির্মাতাদের নাটক নির্মাণে উৎসাহ দেওয়ার লক্ষ্যে সহযোগিতামূলক কর্মপদক্ষেপ গ্রহন করা। যেন মেধাবী লোকজন দ্বারা আমাদের ইন্ডাষ্ট্রি সমৃদ্ধশালী হয়১১) আবাসন এবং চিকিৎসাক্ষেত্রে সহ অন্যান্য সকল ক্ষেত্রে নির্মাতাদের রাষ্ট্রীয় কোঠাভিত্তিক সুযোগ সুবিধা প্রাপ্তির লক্ষ্যে কাজ করা১২) ডিরেক্টর’স গিল্ড এর নিজস্ব স্থায়ী ঠিকানা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করা। একই সঙ্গে একটি প্রাক্টিক্যাল টেলিভিশন ইনিষ্টিটিউট করা, যেখানে নিজস্ব স্টুডিও, থিয়েটার হল, লাইব্রেরি, সেমিনার কক্ষে চর্চা ও প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা থাকবে১৩) বিদেশি চ্যানেলের আগ্রাসন বন্ধ করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া এবং দেশীয় টেলিভিশন চ্যানেলের অনুষ্ঠানের মান উন্নয়ন সম্মিলিত শক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা১৪) বিদেশি পরিচালকগণ যেন আমাদের এনওসি বা ছাড়পত্র ছাড়া কাজ করতে না পারে, সে জন্য কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া১৫) চলচ্চিত্রের মত আমাদের টেলিভিশন নাটকেও জাতীয় পুরস্কার প্রদানের জন্য সরকারকে প্রস্তাব দেয়া এবং বাস্তবায়নের কর্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা১৬) ডিরেক্টর’স গিল্ড’র উদ্যোগে মেধা যাচাইয়ের মাধ্যমে বাৎসরিক পুরস্কার (অ্যাওয়ার্ড) প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যেখানে আজীবন সম্মাননাসহ, সকল ক্যাটাগরিতে পুরস্কার প্রদানের ব্যবস্থা করা হবেএকই সঙ্গে ভবিষ্যতে যে কোনো সমস্যা সম্মিলিতভাবে মোকাবেলা করে এবং নতুন নতুন সাংগঠনিক ও কর্মমূখী পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে ডিরেক্টর’স গিল্ডকে আন্তর্জাতিক মানের সংগঠনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। তাই নির্মাতা সহযোদ্ধা হিসেবে আপনার সমর্থন নিয়ে সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করতে চাই ভবিষ্যৎ মেধাবীদের জন্য, দেশের জন্য।প্রসঙ্গত, প্রসঙ্গত, ডিরেক্টরস গিল্ড প্রদত্ত, ভোটার আইডি কার্ড ব্যতীত কোনো ভোটার তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন না। একজন ভোটার সভাপতি পদে একজন, সহ-সভাপতি পদে তিনজন, সাধারণ সম্পাদক পদে একজন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে দুইজন, অর্থ সম্পাদক পদে একজন, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে একজন, প্রচার সম্পাদক পদে একজন এবং কার্যনির্বাহী পরিষদ সদস্য পদে সর্বোচ্চ দশজন প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন।বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২২ জুলাই (শুক্রবার)। সকাল ৯টা হতে বিকেল ৫টা পর্যন্ত (জুমার নামাজ ও মধ্যাহ্নভোজের জন্য বেলা ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকবে) ভোটগ্রহণ চলবে। এলএ/এবিএস
Advertisement