কথায় বলে, ‘আপনি আচরি ধর্ম অপরে শেখাও’। ট্রাফিক পুলিশ যদি তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব ও কর্তব্য যথাযথভাবে পালন করতো তাহলে এত যানজটও থাকতো না আর দুর্ঘটনায় এত মানুষের প্রাণও যেত না। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, অন্যকে আইন মানার ব্যাপারে পরামর্শ দেওয়া হলেও নিজেরাই আইন লঙ্ঘন করে চলেন অহরহ। এ অবস্থায় জনসাধারণের মধ্যে দেখা দিয়েছে বিরুপ প্রতিক্রিয়া। ট্রাফিক আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে সবার আগে ট্রাফিক পুলিশকেই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার লোকজনই যদি আইনের ব্যত্যয় ঘটায় তাহলে সেখানে আইন প্রতিষ্ঠা করা খুব কঠিন হয়ে পড়ে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের সচেতনতা ও দায়িত্বশীলতার কোনো বিকল্প নেই। ট্রাফিক সচেতনতায় ডিএমপি হাতে নিয়েছে নানা কর্মসূচি। ঢাকা মহানগর পুলিশের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে এ সংক্রান্ত বার্তাও প্রচার করা হয়েছে। প্রচারিত বার্তায় বলা হয়েছে, ‘আমি, আপনি, আমরা সবাই সচেতন নাগরিক। সুনাগরিক প্রত্যেকেই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাহলে কেন আমরা আইন অমান্য করছি? যানবাহন চালানোর সময় কেন ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করছি? কেন হাইড্রোলিক হর্ন, হুটার বেকন লাইট, কালো গ্লাস ব্যবহার করছি? উল্টো পথে চলাচল করছিই বা কেন? মোটরসাইকেল বা অন্য যানবাহন চালাতে গিয়ে মামলায় জড়ালে না হয় জরিমানা দিয়ে রেহাই পেলেন। কিন্তু দুর্ঘটনায় যদি আপনার জীবন হুমকিতে পড়ে, সেই জরিমানা কার কাছে দেবেন? আসুন সবাই ট্রাফিক আইন মেনে চলি। সুনাগরিকের পরিচয় দেই। সবার জন্য শুভকামনা।’এ ধরনের সুপরামর্শ দেয়া হলেও ট্রাফিক পুলিশ অনেক ক্ষেত্রে নিজেরাই তা মানে না। রাস্তায় অনেক সময়ই তারা উল্টো পথে চলে। হেলমেট ছাড়াই মোটরসাইকেলে চড়েন। কখনো তিনজন যাত্রীও বহন করা হয়। এছাড়া যানবাহন তল্লাশির নামেও চলে হয়রানি। এত তল্লাশির পরও রাজধানীতে লক্কড়-ঝক্কড় যানবাহন চলে কি করে? লাইন-লেন বন্ধ করে গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে। রাস্তার ওপর পার্কিংও হয় যত্রতত্র। ট্রাফিক পুলিশ তাহলে করেটা কি? এ অবস্থার উত্তরণ প্রয়োজন। সব পুলিশ দায়িত্বহীন তা বলা যাবে না। তবে সম্মিলিত একটি অবহেলা, দায়িত্বহীনতা যে রয়ে গেছে তা তো রাস্তার বেহাল অবস্থায়ই বলে দিচ্ছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টরা আরো দায়িত্বশীল হবেন এবং দায়িত্বে অবহেলাকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে-মানুষ এটাই দেখতে চায়। এইচআর/পিআর
Advertisement