কুষ্টিয়ার দৌলতপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য রেজাউল হক চৌধুরীর ভাইয়ের বিরুদ্ধে চোর সন্দেহে যুবক হাসানকে (২৩) পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার বিকেলে রক্তাক্ত অবস্থায় ওই যুবকের মরদেহ উপজেলার তারাগুনিয়া ডাকবাংলো চত্বরে পড়ে থাকতে দেখা যায়। খবর পেয়ে পুলিশ সেখান থেকে মরদেহ উদ্ধার করে। হাসান উপজেলার সোনাইকুন্ডি পশ্চিমপাড়া গ্রামের আবুল কাসেমের ছেলে। প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, স্থানীয় সংসদ সদস্য রেজাউল হক চৌধুরীর ছোট ভাই মিন্টু চৌধুরী ও তার লোকজন চুরির অভিযোগে মঙ্গলবার সকালে হাসানকে ধরে গণপিটুনি দিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় পুলিশে সোপর্দ করে। হাসানের অবস্থা খারাপ হওয়ায় সকাল ১০টার দিকে দৌলতপুর থানা পুলিশ তাকে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করে। পরে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে ভর্তি না করে উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দিয়ে রেফার্ড করেন। অবস্থা বেগতিক দেখে পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয়। একপর্যায়ে তার মরদেহ তারাগুনিয়া ডাকবাংলো চত্বরে পড়ে থাকতে দেখা যায়। তারাগুনিয়া বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, বিকেল ৫টার দিকে একটি ভ্যানে তাকে তারাগুনিয়া ডাকবাংলো চত্বরে কয়েকজন ফেলে রেখে যায়। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার পায়ে ব্যান্ডেজ ছিল। পরে খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে। দৌলতপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. এহসানুল আলম বলেন, তার অবস্থা খারাপ হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছিল। সংসদ সদস্যের ভাই মিন্টু চৌধুরী হাসানকে পেটানোর কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘চুরির অপরাধে স্থানীয়রা তাকে ধরে গণপিটুনি দিয়ে সকালে আমার বাড়ির সামনে নিয়ে আসলে আমি তাকে পুলিশে সোপর্দ করি। আমি তাকে কোনো শারীরিক নির্যাতন করিনি।’ দৌলতপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিদুল ইসলাম শাহিন জানান, হাসান মাদক সেবন ও চুরি করতো। সকালে স্থানীয় লোকজন তাকে মারপিট করে পুলিশে দেয়। পরে দৌলতপুর হাসপাতালে প্রেরণ করলে চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্যত্র প্রেরণ করতে বলেন। ওসি আরো বলেন, হাসানের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না থাকায় স্থানীয় ইউপি সদস্যের জিম্মায় চিকিৎসার জন্য তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। তবে হাসানকে উন্নত চিকিৎসা না দিয়ে কার নির্দেশে কারা তাকে থানা সদর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরের তারাগুনিয়া ডাকবাংলো চত্বরে ফেলে রেখে আসে এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি। আল-মামুন সাগর/এআরএ/এবিএস
Advertisement