বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতা থাকা সত্ত্বেও জিডিপি প্রবৃদ্ধি কিছুতেই ৭ ভাগের কম হবে না বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা মন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল। বৃহস্পতিবার পরিকল্পনা কমিশনে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে একথা বলেন তিনি।তিনি বলেন, গত ৬ মাসের অর্থনৈতিক সূচক যেভাবে এগুচ্ছে তাতে জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে আমরা ৬ ভাগে আটকে থাকা থেকে বের হয়ে আসতে পারবো। এছাড়া, দেশের পিছিয়ে থাকা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনীতিতে গতিশীলতা আনতে সরকার পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ করবেই করবে।এ সময় মন্ত্রী জিডিপি প্রবৃদ্ধি নিয়ে বলেন, প্রায় এক দশক ধরে আমরা ৬ ভাগ জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে আটকে আছি। গত ছয় মাসে প্রবাসী আয় ১০ শতাংশ হারে বাড়ছে। গত নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে রপ্তানী আয় হয়েছে ৫ মিলিয়ন ডলার। এভাবে চলতে থাকলে অর্থ বছর শেষে ৩৩ বিলিয়ন রপ্তানী আয় লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে। ফলে আমরা আশা রাখছি ইনশাল্লাহ এ বছর জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ ভাগ হবে।বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতা এ অর্জনে বাধা হবে না উল্লেখ করে মন্ত্রী আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে ও সঠিক ব্যবস্থাপনাই এ পরিস্থিতিতেও প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ব্যহত করবে না। আমাদের সবাইকে মনে রাখতে হবে একটি দেশ এগিয়ে যায় প্রাপ্ত সুযোগকে কাজে লাগিয়ে। সময় এখন আমাদের। শুধু দরকার প্রাপ্ত সুযোগগুলোকে কাজে লাগানো।অপরদিকে, সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনা মন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের উন্নয়ন চেহারা বদলাতে চায়। তাই পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর এখানে স্থাপিত হবেই। তবে আমাদের এখন সিদ্ধান্ত নিতে চট্টগ্রাম গভীর সমুদ্র বন্দরের স্থাপন বিষয়ে। কক্সবাজারের মাতারবাড়ী পাওয়ার প্লান্টের আওতায় একটি গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের কথা রয়েছে। কিন্তু এর ২৫ কি. মি. দক্ষিণে সোনাদিয়ার আরো একটি গভীর সমুদ্র বন্দর স্থাপিত হওয়ার কথা রয়েছে। আমাদের এখন খুঁজে দেখতে হবে চট্টগ্রামে দু’টো নাকি একটা গভীর সমুদ্র বন্দর হবে। যদি একটার সিদ্ধান্ত হয় তবে দেখতে হবে কোথায় হবে তা। সোনাদিয়ায় নাকি মাতারবাড়ীতে।চট্টগ্রামে গভীর সমুদ্র বন্দর স্থাপনের ব্যাপারে চীন, নেদারল্যান্ডস ও সংযুক্ত আরব আমিরাত আগ্রহী বলেও মন্ত্রী এ সময় উল্লেখ করেন। মূল্যস্ফীতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনা মন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম কমায় এবং চাহিদার তুলনায় যোগান বেশি হওয়ায় খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমেছে। অপরদিকে, আন্তর্জাতিক বাজার থেকে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি গত মাসে ২৮ ভাগ হওয়ায় খাদ্য বহির্ভূত মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পায়।প্রকল্প নিয়ে বলতে গিয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল বলেন, এখন যে সব প্রকল্প একনেকে অনুমোদিত হয় তার মোট ব্যয়ের মধ্যে প্রকল্প সাহায্যের পরিমাণ বেশি। অর্থাৎ ১০০০ কোটি টাকার একটা প্রকল্প হাতে নিলে আগে যেখানে ৮০০ কোটি টাকাই সরকার দিত এখন আর এমনটি হয় না। এখন উল্টো ৮০০ কোটি টাকা প্রকল্প সাহায্য হিসেবে পাওয়া যাচ্ছে। আমি আশা করছি এ বছর প্রকল্প বাস্তবায়ন হার ১০০ ভাগ হবে। এজন্য ইতোমধ্যে ৫৫টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে মিটিং করে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে প্রকল্প পরিচালকদের সাথে বসা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
Advertisement