দেশজুড়ে

অন্তিম গার্মেন্টস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার বরপা এলাকার রফতানিমুখী অন্তিম নিটিং ডাইং অ্যান্ড ফিনিশিং ও অন্তিম নীট কম্পোজিট কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছেন কর্তৃপক্ষ। রোববার সকালে কর্তৃপক্ষ কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করেন।কারখানা কর্তৃপক্ষ জানায়, গত ২২ জুন কারখানার সামনে একজন শ্রমিক সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন। আহত ওই শ্রমিককে কোম্পানির নিজস্ব অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় উন্নত চিকিৎসা দিয়ে ফের সুস্থ করে ফিরিয়ে আনা হয়। ওই দিন শ্রমিক আহতের অজুহাত দেখিয়ে কিছু  শ্রমিক কারখানায় কাজ বন্ধ করে দেয়। এরপর গত ২৩ জুন কারখানায় পানি সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও উশৃঙ্খল শ্রমিকরা `বেসিনে পানি সরবরাহ নেই` এমন অজুহাত দেখিয়ে ফের কাজ বন্ধ করে দেয় এবং ছুটির নির্ধারিত সময়ের আগেই কাজ বন্ধ করে চলে যান।  গত পবিত্র ঈদ-উল ফিতর উপলক্ষে ৩ দিন ছুটির সঙ্গে অতিরিক্ত ৮ দিনসহ মোট ১১ দিন কারখানা বন্ধ রাখার অযৌক্তিক দাবি নিয়ে ৩০ জুন ও ২ জুলাই কাজ বন্ধ রাখা হয়। পরের দিন এক শ্রমিক নেতার আশ্বাসে আবার কাজে যোগদান করেন শ্রমিকরা। ৪ জুলাই এক প্রকার মালিকপক্ষকে জিম্মি করে ৬ কর্ম দিবসসহ মোট ১১ দিন কারখানার কাজ বন্ধ করে চলে যায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ছুটির বিপরীতে ঈদের পর অতিরিক্ত কাজ করে দেয়ার আশ্বাস দেন শ্রমিকরা। কর্তৃপক্ষ আরো জানান, এ কারখানাটি একটি চলমান কারখানা ও নির্দিষ্ট পরিকল্পনা মাফিক পরিচালিত হয়ে থাকে। একটানা ১১ দিন কারখানা বন্ধ থাকার কারণে কোম্পানি বায়ার প্রদত্ত শিডিউল অনুযায়ী শিপমেন্ট করতে ব্যর্থ হয়। আর এজন্য কিছু গার্মেন্টস ইয়ার শিপমেন্ট করতে হবে এবং শিপমেন্ট শিডিউল ঠিক না থাকার কারণে বায়ার কিছু সংখ্যক অর্ডার বাতিল করে দেয়। গত ১৬ জুলাই সকালে কারখানা খুললেও অযৌক্তিক কিছু ইস্যু নিয়ে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে উশৃঙ্খল শ্রমিকরা কারখানার কাজ বন্ধ করে দেয়। নিরীহ শ্রমিকরা কাজ করতে চাইলেও তাদের হুমকি ভয় ভীতি প্রদর্শন করে কারখানা থেকে বের করে দেয়। যা বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ সংশোধিত ২০১৩ ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। উপরোক্ত বিষয়াদি নিয়ে রোববার থেকে কারখানাটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করতে বাধ্য হয়।নাম না প্রকাশ করার শর্তে বেশ কয়েকজন নিরীহ শ্রমিক জানান, তারা সঠিক সময়ে বেতন-ভাতাসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন মালিকপক্ষের কাছ থেকে। এছাড়া নির্ধারিত সময়ে কারখানায় প্রবেশ করে কাজও করতে চায়। তবে, শ্রমিক নেতাদের কথা না মানলে ক্ষতি করতে পারে। তাই বাধ্য হয়ে কারখানার কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। শ্রমিকরা সকালে এসে দেখতে পান কারখানার প্রধান গেইটে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণার নোটিশ সাটিয়ে দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। অন্তিম নিটিং ডাইং অ্যান্ড ফিনিশিং ও অন্তিম নিট কম্পোজিট কারখানার সুপারভাইজার আলী আশরাফ বলেন, হঠাৎ কারখানা বন্ধ করে দেয়ায় পরিবার নিয়ে পথে বসতে হবে। তিনি দ্রুত কারখানা খুলে দেয়ার দাবি জানান।এ বিষয়ে কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আলী আকবর বলেন, বিরাজমান পরিস্থিতির সঠিক এবং সুন্দর সমাধান চায় কর্তৃপক্ষ। এ ব্যপারে সঠিক এবং শিল্পবান্ধব নির্দেশনায় একটি সুন্দর সমাধানের জন্য বিকেএমইএ বরাবর একটি পত্র দেয়া হয়েছে। মীর আব্দুল আলীম/এসএস/এমএস

Advertisement