খেলাধুলা

৫০ বছরেও কোন শিরোপা নেই ইংল্যান্ডের!

সবেধন নিলমনি ওই একটি শিরোপা। একটি মাত্র বিশ্বকাপ। পিটার মুরস, ববি চার্লটন, জিওফ হার্স্টদের হাত ধরে আসা সেই বিশ্বকাপটার আগে-পরে ইংলিশ ফুটবল দলের সাফল্য বলতে একেবারেই শূন্য। জিওফ হার্স্টের হ্যাটট্রিকে ১৯৬৬ বিশ্বকাপে পশ্চিম জার্মানিকে হারিয়ে ফুটবল ইতিহাসে একমাত্র শিরোপাটি জিতেছিল ইংল্যান্ড।১৯৬৬ সালের পর দেখতে দেখতে ৫০টি বছর পার হয়ে গেছে। সেই জয়ের সূবর্ণ জয়ন্তি উদযাপন করছে ইংল্যান্ড। তবে থ্রি লায়ন্সদের সবচেয়ে বড় দুঃখ এরপর কয়েকটি সোনালি প্রজন্ম আসার পরও বিশ্বকাপে ইংলিশদের দৌড় সর্বোচ্চ সেমিফাইনাল পর্যন্ত (তাও একবার, ১৯৯০ সালে)। সবচেয়ে বড় কথা, মহাদেশীয় টুর্নামেন্ট ইউরোয় ইংল্যান্ড তো একেবারেই পেছনের সারির দল। শিরোপা জয় তো দুরের কথা, ফাইনাল পর্যন্ত খেলতে পারেনি তারা। দু’বার খেলেছে মাত্র দু’বার। ১৯৬৮ সালের আগে তো খেলারই যোগ্যতা অর্জন করেনি। বিশ্বকাপ জয়ের পরের বছর ইউরোয় খেলতে পারলেও পরের দুই আসরে যোগ্যতাই অর্জন করতে পারেনি।এরপর ১৯৮০ সালে খেলতে এলেও বিদায় গ্রুপ পর্ব থেকে। ১৯৮৪ সালেও যোগ্য হতে পারেনি তারা ইউরোর চূড়ান্ত পর্বে খেলার জন্য। ১৯৮৮ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত টানা খেলতে পারলেও ১৯৯৬ আসরে খেলেছিল সেমিফাইনাল এবং ২০০৪ সালে খেলেছিল কোয়ার্টার ফাইনাল। এছাড়া বাকি তিন আসরেই বিদায় নিয়েছে তারা গ্রুপ পর্ব থেকে।২০০৮ সালে বেকহ্যাম-ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ড-জন টেরিদের মত ফুটবলার থাকা সত্ত্বেও ইউরোয় যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি। ২০১২ সালে বিদায় নিয়েছে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে। সর্বশেষ ২০১৬ ইউরোয় বিদায় নিয়েছে দ্বিতীয় রাউন্ডে আইসল্যান্ডের মত দলের কাছে হেরে। বিশ্বকাপে ১৯৫০ সালের আগে অংশগ্রহণই করেনি ইংলিশরা। ১৯৫০ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত ৬টি আসরে টানা অংশ নিয়েছিল ইংল্যান্ড। ১৯৭৪ এবং ১৯৭৮ সালে- টানা দুটি বিশ্বকাপ আসরে অংশই নেয়ার যোগ্যতা অর্জন করেনি ১৯৬৬ বিশ্বকাপজয়ীরা। এরপর ১৯৯৪ বিশ্বকাপেও ছিল তারা অযোগ্য হিসেবে অনুপস্থিত। বাকি আসর গুলোতে নিয়মিত অংশ নিলেও তাদের দৌড় সর্বোচ্চ (একবার) সেমিফাইনাল পর্যন্ত। অধিকাংশবারই ইংল্যান্ডকে বিদায় নিতে হয়েছে দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে।সবচেয়ে বড় কথা, বিশ্বকাপ বলুন কিংবা ইউরো- সবগুলো আসরেই ইংল্যান্ড আসে হট ফেভারিট হয়ে। ইংলিশ মিডিয়া তাদেরকে এমনভাবে পরিবেশন করে যাতে মনে হয়, তারা সত্যিকারের বাঘ; কিন্তু টুর্নামেন্ট শেষে সেই ইংল্যান্ড যে ‘কাগুজে বাঘ’ তা আর কেউ প্রমাণ করে দিতে হয় না। তারা নিজেরাই প্রমাণ করে ছাড়ে।ইংল্যান্ড ফুটবলের ইতিহাসে ১৯৬৬ সালের সেই দিনটিই সবচেয়ে বেশি উজ্জ্বল এবং গৌরবের। ওই একটি দিনকে ধারণ করেই বেঁছে আছে ইংল্যান্ডের ফুটবল। ৩০ জুলাই সেই দিনটির ৫০তম বার্ষিকী। গত ৫০ বছরে কোন সাফল্য না এলেও ইংলিশরা অর্ধ-শতাব্দীর আগের সেই দিনটিকে নতুন করে বরণ করে নেয়ার জন্যই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে।আইএইচএস/আরআইপি

Advertisement