খেলাধুলা

বৃহস্পতিবার শুরু বহুল আলোচিত ইংল্যান্ড-পাকিস্তান টেস্ট সিরিজ

দেখতে দেখতে অর্ধযুগ পার হয়ে গেলো। ২০১০ সালের জুলাই-আগস্টে অনুষ্ঠিত হয়েছিল ইংল্যান্ডে পাকিস্তান ক্রিকেট সিরিজ। ওই সিরিজেরই লর্ডস টেস্টে স্পট ফিক্সিং কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে ক্রিকেট থেকেই নির্বাসনে চলে গিয়েছিলেন মোহাম্মদ আমির, মোহাম্মদ আসিফ এবং সালমান বাট। ক্রিকেট দুনিয়া তোলপাড় করে দেয়া সেই ঘটনার পর কেটে গেছে ৬টি বছর। এরই মধ্যে ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আবারও ক্রিকেটে ফিরে এসেছেন মোহাম্মদ আমির। নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হয়েছে সালমান বাট এবং মোহাম্মদ আসিফেরও। তবে তারা দু’জন এখনও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন। এত দীর্ঘ সময়ে আর ইংল্যান্ড সফর করতে পারেনি পাকিস্তান। ৬ বছর পর আবারও সেই লর্ডস দিয়েই শুরু হতে যাচ্ছে ইংল্যান্ড-পাকিস্তান টেস্ট সিরিজ।এরই মধ্যে সিন্ধু নদ কিংবা টেমস নদী দিয়ে গড়িয়ে গেছে অনেক পানি। পাকিস্তান-ইংল্যান্ডের ক্রিকেট সম্পর্কে খুব বেশি উন্নতি হয়নি তাতে। পাকিস্তানের ক্রিকেটেও ঘটে চলছে একের পর এক বিপর্যয়। বিশেষ করে ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তো তাদের যাচ্ছে-তাই অবস্থা। ভালো মানের কোন ক্রিকেটারই উঠে আসছে না। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মহা বিপর্যয়ের পর তো তোলপাড় হয়ে গেছে পুরো পাকিস্তান ক্রিকেটে। টেস্টেই যা একটু ভালো অবস্থান মিসবাহ-উল হকদের।ইংল্যান্ডও এগিয়েছে একই গতিতে। টেস্টে নিজেদের অবস্থান পাকাপোক্ত হলেও ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টিতে খুব ভালো অবস্থানে নেই ইংলিশরা। ২০১৫ বিশ্বকাপ বলুন আর ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বলুন- সব জায়গাতেই যাচ্ছেতাই বাজে অবস্থা ইংলিশদের। তবে টেস্টে অসাধারণ একটি অবস্থান রেখেছে তারা। অ্যাশেজে পর্যন্ত তারা হারিয়ে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়াকে।এ পরিস্থিতিতে আবারও টেস্ট সিরিজে মুখোমুখি পাকিস্তান-ইংল্যান্ড। সিরিজটা নিয়ে যতটা না আলোচনা, তার চেয়েও বেশি উত্তেজনা তুঙ্গে মোহাম্মদ আমিরের ইংল্যান্ড সফর নিয়ে। স্পট ফিক্সিং কেলেঙ্কারিতে নিষিদ্ধ হওয়া ছাড়াও ইংল্যান্ডের আইনে সা্জা হয়েছিল আমিরের। ৬ মাস জেলও খেটেছিলেন তিনি। সেই আমিরকে ভিসা দেয়া নিয়েও বেশ নাটক হয়েছে। অবশেষে ইংল্যান্ড তার ভিসা ইস্যু করলেও, বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না। সেই বিতর্ক পাশ কাটিয়ে আমির কতটা স্বচ্ছন্দ হতে পারেন, কতটা নিজেকে মেলে ধরতে পারেন- সেটাই এখন দেখার বিষয়। বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪টায় ক্রিকেটের মক্কাখ্যাত লর্ডসে শুরু হচ্ছে চার ম্যাচের এই সিরিজের প্রথম টেস্ট। তার আগে অবশ্য দু’দলই দৃঢ় প্রতিজ্ঞ জয়ের ব্যাপারে। পাকিস্তানের ওয়াহাব রিয়াজ বলে দিয়েছেন, ‘আমরা এই টেস্টটা জিততে চাই। এ ছাড়া ভিন্ন কিছু ভাবছি না। দলের সব খেলোয়াড়ই একই চিন্তা করছেন।’এই টেস্টে খেলার সম্ভাবনা নেই ইংল্যান্ডের পেসার জেমস অ্যান্ডারসনের। সে কথাই উল্লেখ করলেন অ্যালিস্টার কুক। তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্যক্রমে জিমি এই টেস্টে খেলতে পারছেন না। আমরা তাকে মিস করবো। তবে জ্যাকের জন্য এটা বড় একটা সুযোগ। আমাদের বোলার এবং ব্যাটসম্যানরা সুযোগ কাজে লাগানোর জন্য মুখিয়ে আছে।’মিসবাহ আবার এটাকে নিজেদের পক্ষে টেনে বলেন, ‘ইংল্যান্ড তাদের মূল একজন বোলারকে মিস করাটা আমাদের জন্যই সুবিধাজনক দিক। আমরা প্রস্তুত। প্রস্তুতিও হয়েছে অনেক ভালো। সবাই ভালো কিছু করার জন্য মুখিয়ে আছে।’ইংল্যান্ড (সম্ভাব্য একাদশ): অ্যালিস্টার কুক (অধিনায়ক), আলেক্স হেলস, জো রুট, জেমস ভিন্স, গ্যারি ব্যালান্স, জনি ব্যারেস্ট, মঈন আলি, ক্রিস ওকস, স্টুয়ার্ট ব্রড, জ্যাক বাল, স্টিভেন ফিন।পাকিস্তান (সম্ভাব্য একাদশ): মোহাম্মদ হাফিজ, শান মাসুদ, আজহার আলি, ইউনিস খান, মিসবাহ-উল হক (অধিনায়ক), আসাদ শফিক, সরফরাজ আহমেদ (উইকেটরক্ষক), ওয়াহাব রিয়াজ, মোহাম্মদ আমির, রাহাত আলি/ইমরান খান, ইয়াসির শাহ। আইএইচএস/আরআইপি

Advertisement