ওমানে গৃহবন্দী হয়ে রয়েছেন বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের গৃহকর্মীরা। বুধবার একটি প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। মানবাধিকার সংস্থাটি বলছে, ওমানে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে অনেক বিদেশী গৃহকর্মী। ওমানের অনেক বাড়িতে বিদেশী গৃহকর্মীরা বন্দী জীবন-যাপন করছেন। খবর বিবিসির। ওমানে বর্তমানে ১ লাখ ৩০ হাজার বিদেশী শ্রমিক রয়েছে। বাংলাদেশ ছাড়াও ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, ভারত, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল আর ইথিওপিয়ার শ্রমিকরা বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন।এমনই একজন আসমা। তিনি বাংলাদেশ থেকে কাজের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতে গিয়েছিলেন। কিন্তু এক রিক্রুটিং এজেন্ট তাকে এক ওমানি ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দেয়। ওই ব্যক্তি তার পাসপোর্ট আটকে রেখে তাকে ওমানে নিয়ে যায়। ওই ব্যক্তি তার বাড়িতে আসমাকে দিনে ২১ ঘণ্টা কাজ করতে বাধ্য করতেন। ঠিক মতো তাকে খাবার দেয়া হতো না। শুধু তাই নয় তাকে যৌন হয়রানি করা হতো এবং সারাদিনের কাজের জন্য তাকে কোনো বেতনও দেয়া হতো না। আসমা খাতুন জানান, আমি ভোর সাড়ে ৪টায় কাজ শুরু করতাম। আমার কাজ শেষ হতো রাত ১টায়। সারাদিনে তারা একবারও আমাকে বসতে দিতো না। আমি কাজ ছেড়ে দিতে চাইলে বলতো তোমাকে আমরা কিনে এনেছি। আমাদের টাকা পরিশোধ করতে পারলেই তুমি চলে যেতে পারবে।ওমানের কাফালা পদ্ধতির কারণে অভিবাসী শ্রমিকদের এই হয়রানির সুযোগ পাচ্ছেন মালিকরা। মানবাধিকার সংস্থাটি বলছে, ওমানের অনেক বাড়ির দরজার আড়ালে বন্দী হয়ে রয়েছে অভিবাসী শ্রমিকরা। দাসত্ব, যৌন নির্যাতন, মারধর, বেতন না দেয়াসহ আরো অনেক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন তারা।হিউম্যান রাইটস ওয়াচ আসমার মতো ৫৯জন অভিবাসী শ্রমিকের সাক্ষাৎকার নিয়েছে। এদের অনেকেই বলেছেন, তাদের পাচার করে বা জোর করে কাজে বাধ্য করা হচ্ছে। তাদের মালিকরা বলছেন তাদের তারা কিনে আনা হয়েছে। আর এ কারণে তারা যা ইচ্ছা তাই করছেন। অভিবাসী শ্রমিকদের রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা রাখার জন্য ওমানের কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থাটি। এভাবে যেন গৃহকর্মীদের নির্যাতন করা না হয় সেদিকে কর্তৃপক্ষকে সদয় হওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। টিটিএন/এমএস
Advertisement