প্যারিস থেকে লিসবন প্রায় ৫ ঘণ্টা ৫২ মিনিটের পথ। স্বাগতিক ফ্রান্সকে হারিয়ে প্যারিস থেকে পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে যেতে বিমানের এই পথ পাড়ি দিতেই হবে। মাঝে পড়বে স্পেনের আকাশসীমা। তবে রোনালদোরা যখন ইউরোর মুকুট নিয়ে দেশে ফিরছিলেন, তখন স্পেনের আকাশসীমা পার হওয়ার পরই অভাবনীয় অভ্যর্থনার সম্মুখিন হন। আকাশেই তাদের অভ্যর্থনা দিতে শুরু করে পর্তুগিজরা।এ যেন বিশ্বজয়ী বীর ফিরছেন নিজ দেশে। সুতরাং, নিজ দেশে বিমান এসকর্ট করতে হবে তাদেরকে। স্পেন পার হয়ে পর্তুগালের আকাশসীমায় প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোদের বহনকারী বিমানটিকে এসকর্ট করে সামনে এগিয়ে নিতে ছুটে আসে এক ঝাঁক যুদ্ধ বিমান। এ যেন কোন রাষ্ট্র প্রধানকে অভ্যর্থনা জানানোর মত। পর্তুগিজ সরকারের পক্ষ থেকেই এই আয়োজন।অভিভূত হওয়ার মত বিষয় আরও ছিল। লিসবন বিমান বন্দরে যখন রোনালদোদের বিমানটি অবতরণ করছিল, রানওয়ে ধরে যখন টার্মিনালের দিকে ছুটে আসছিল বিমানটি, তখন অভাবনীয় এক দৃশ্যের অবতারণা। দুটি জল কামান থেকে বিমানকে লক্ষ্য করে এমনভাবে লাল এবং সবুজ রংয়ের পানি ছিটানো শুরু করা হয়, যা দেখলে মনে হবে লাল-সবুজের একটি গেইট তৈরী করা হয়েছে। পর্তুগিজদের জাতীয় রংয়ের সঙ্গে মিল রেখে সেই অভ্যর্থনা একেবারেই নতুন, একেবারেই অভিনব।বিমান বন্দরে নামার পরই রোনালদোদের তুলে নেয়া হলো ছাদখোল ডাবল ডেকার বাসের ওপর। বিমান বন্দর থেকে শুরু করে শহরের কেন্দ্রস্থল স্কয়ার অব পমবেল পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে মানুষের সারি। সবার গায়েই জড়ানো পর্তুগালের জাসি। হাতে ফেস্টুন আর মাথায় বাধা জাতীয় পতাকা। এ এক অভাবনীয় দৃশ্য। না দেখলে বিশ্বাস করা সম্ভব নয়।স্বাগতিক ফ্রান্সকে ১-০ গোলে হারিয়ে প্রথমবারেরমত ইউরো কিংবা বড় কোন আন্তর্জাতিক ট্রফি জয়ের ইতিহাসকে সামনে উপস্থিত থেকে সাক্ষী হতে যেন ঢল নেমেছিল বিমান বন্দর থেকে স্কয়ার অব পমবেলে। হাজার হাজার জনতার মাঝ দিয়ে ধীরে ধীরে পর্তুগিজ ফুটবলারদের বহনকারী বাসটি এগিয়ে যেতে থাকে শহরের কেন্দ্রস্থলে। এ সময় স্লোগান ওঠে রোনালদোদের নামে। জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হয়।ছাদখোলা বাসের সামনে দাঁড়িয়ে দর্শকদের উদ্দেশ্যে ট্রফি উঁচিয়ে ধরেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। পর্তুগাল দলের অধিনায়ক। তার আগেই সতীর্থদের নিয়ে কতটা আনন্দ উদযাপন করেছেন ইউরো ট্রফি নিয়ে তার বেশ কিছু ছবি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেন রোনালদো। এ সময় একটি ছবিতে দেখা যায়, কিংবদন্তী পর্তুগিজ ফুটবলার, কিছুদিন আগে প্রয়াত, কালোচিতা নামে পরিচিত ইউসেবিওর একটি ছবি রাখা ইউরো ট্রফির সামনে। এমন আনন্দ আর উদযাপনের সময়ও রোনালদোরা ভোলেননি তাদের পথপ্রদর্শক কিংবদন্তীকে। ১৯৬৬ বিশ্বকাপে কিংবা তার আশপাশের সময়ে অসাধারণ খেলেও শিরোপার পথ খুঁজে পাননি ইউসেবিও। আকাশপথে যে যুদ্ধ বিমান তাদরকে এসকর্ট করে নিচ্ছিল তার ভিডিও পোস্ট করেন হোয়াও মোতিনহো।আইএইচএস/আরআইপি
Advertisement