বিশেষ প্রতিবেদন

সন্ত্রাসী হামলা : গুলশানের শপিং মলের বেচাকেনায় ধস

প্রত্যেক ঈদে কম করে হলেও লাখ টাকার কেনাকাটা করতে হবে। না হলে তো স্ট্যাটাস থাকে না, জমবে না ঈদের বাজার। করেনও বটে। বলছি নগরীর অভিজাত গুলশান-বনানী-বারিধারা এলাকার ক্রেতাদের কথা। তাদের কাছে দাম কোনো বিষয়ই নয়, বরং পছন্দটাই আসল। কিন্তু গুলশানের রেস্তোরাঁয় বন্দুকধারীদের হামলার আতঙ্ক ছড়িয়েছে রাজধানীর শপিং মলগুলোতেও। খুব বেশি জরুরি না হলে শেষ মুহূর্তের ঈদ কেনাকাটায় যাচ্ছেন না নগরবাসী। ফলে ঈদের কেনাকাটায় বা শপিং মলগুলোর বেচাকেনায় ব্যাপক ধ্বস নেমেছে। কেনাকাটায় ঘটেছে ছন্দপতন। রোববার রাজধানী গুলশান-বনানী এলাকার কয়েকটি বিপণী বিতান ও অভিজাত শপিং মল ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

Advertisement

অভিজাত এ অঞ্চলের শপিংমল শপার্স ওয়ার্ল্ড, নাভানা টাওয়ার, মনি ক্যাপিটাল সেন্টার, পিংক সিটি শপিং কমপ্লেক্স, বসুজা স্টিচ, রূপায়ন গোল্ডেন এজ, জব্বার টাওয়ারসহ অধিকাংশ শপিংমল ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতা সমাগম তুলনামূলকভাবে অনেক কম। যারা আসছেন তারাও বোশি ঘোরোফেরা না করে প্রয়োজনীয় পণ্যটি কিনে বাড়ি ফিরছেন। অবশ্য মার্কেটগুলোয় লোকসমাগম কম হওয়ার কারণ হিসেবে ঈদের ছুটি অনেক আগে শুরু হওয়ার বিষয়টিও উল্লেখ করছেন কেউ কেউ।বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশি পোশাকের পাশাপাশি পশ্চিমা বিশ্বের হাল ফ্যাশনের তৈরি পোশাক থরে থরে সাজানো হয়েছে ফ্যাশন হাউসগুলোতে। এসব এলাকার ক্রেতাদের কাছে দাম কোনো সমস্যাই নয়, বরং পছন্দটাই আসল। নগদে কিংবা ক্রেডিট কার্ডে ধর্নাঢ্য ক্রেতারা কিনে থাকেন লেটেস্ট ফ্যাশনের বাহারি ডিজাইনের পোশাক। কিন্তু শেষ দিকে এসে সন্ত্রাসী হামলার মতো অঘটনটি ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।গুলশান-১ এর জব্বার টাউয়ারের শাড়ি বিক্রেতা মাজিদুর রহমান নাহিদ বলেন, ঈদের মাত্র দুই দিন বাকি। আমরা আশা করেছিলাম আজ ব্যাপক বেচাকেনা হবে। কিন্তু প্রত্যাশার তুলনায় প্রাপ্তি অনেক কম।অন্যান্য দিনের তুলনায় অর্ধেক কাস্টমারও দোকানে আসেনি জানিয়ে তিনি বলেন, মানুষের মনে আতঙ্ক ঢুকে গেছে। কেনাকাটার জন্য এসে কখন যে জীবনাটাই হারাতে হয় বলা যায় না। যারা এসেছেন তারা অধিক দামাদামি না করে অল্প সময়ের মধ্যেই কেনাকাটা শেষ করে বাড়ি ফিরে গেছেন।জানা গেছে, ঈদের শপিংয়ের জন্য বিত্তবান ও সৌখিন ক্রেতাদের প্রতি লক্ষ্য রেখে দেশি এবং বিদেশি বিভিন্ন পোশাক ও অলংকারে সাজানো হয়েছে অভিজাত এলাকার শপিংমলগুলো। রাজনীতিবিদ, মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, শিল্পপতি, ব্যবসায়ী, মিডিয়ার তারকা, সরকারি-বেসরকারি উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা পরিবার-পরিজন নিয়ে শপিংয়ে আসেন। তাই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত প্রতিটি মার্কেটের সামনে গাড়ির বিশাল জটলা থাকাও স্বাভাবিক চিত্র। কিন্তু এখন ফাঁকা শুন্য এসব মার্কেটগুলো। ফলে ব্যবসায়ীরা চরম হতাশ।প্রতি বছর গুলশানের এসব এলাকা থেকে কেনাকাটা করেন ব্যবসায়ী শহিদুল চৌধুরী। তিনি বলেন, প্রতি বছর পরিবারের জন্য শপার্স থেকে কেনাকাটা করি। এবার আর চিন্তা করছি না, শুধু বাচ্চার জন্য একটা জামা কেনা খুবই জরুরি হয়ে পড়ায় এ মার্কেটে এসেছি।তিনি বলেন, গুলশানের ঘটনায় আমার মনে এতোটাই ভয় ঢুকে গেছে, যে বাচ্চার জন্য জামা কিনতে এসেছি, তাকে সাথে করে নিয়ে আসার সাহস হয়নি। এমএ/এমএম/এসকেডি