বিশেষ প্রতিবেদন

বৃষ্টি উপেক্ষা করে ঈদ যাত্রা : ভোগান্তিতেও আনন্দ

বৃষ্টির ভোগান্তিও ঠেকাতে পারছে না ঈদের ঘরমুখো মানুষকে। বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করেই বাস-ট্রেন-লঞ্চে শুরু হয়েছে ঈদ আনন্দের মহাযাত্রা।ভোর থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন বাস টার্মিনালে শনিবারের চেয়ে মানুষের ভিড় বেড়েছে। যদিও আগের বছরগুলোর চেয়ে বাসযাত্রী ‘ঢের কম’ বলে দাবি পরিবহন ব্যবসায়ীদের।রোববার সকালে গাবতলী বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, রাত থেকে রাজধানীতে টানা বৃষ্টির পরও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক যাত্রী এসেছে। থেমে থেমে বৃষ্টি ভোগান্তিতে ঈদ উপলক্ষে রাজধানী ছাড়ছেন হাজারো মানুষ। অনেকে অগ্রিম টিকিট কিনেও বাসের জন্য টার্মিনালে বসে আছেন। সমস্যা হতে পারে এ বিষয়টি মাথায় রেখেই নির্দিষ্ট সময়ের আগে টার্মিনালে আসেন তারা। তবে অনেক বাসই নির্দিষ্ট সময়ে টার্মিনালে আসেনি বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা। অধিকাংশ দূরপাল্লার পরিবহন আধা ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ছে। টিকিট কাউন্টার মাস্টাররা জানান, বৃষ্টির কারণে মহাসড়কে যানজট লেগে আছে। এছাড়া ফেরি পারাপারে সময় নষ্ট হচ্ছে। এ কারণে বাস ছাড়তে কিছুটা দেরি হচ্ছে। যারা অগ্রিম টিকিট কিনে রেখেছিলেন তাদের জন্য ঈদযাত্রা ভোগান্তির না হলেও অন্য যাত্রীদের টিকিট নিয়ে হয়রানি হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।শ্যামলী কাউন্টারের সামনে অপেক্ষারত ব্যবসায়ী সহিদুর আলম মৃধা জানান, বাস আসার কথা আরো ৪০ মিনিট আগে। কিন্তু এখনও আসেনি। পরিবার নিয়ে এখানে বসে আছি প্রায় ১ ঘণ্টার বেশি। কাউন্টারের লোকরা বলছে, বৃষ্টির কারণে রাস্তায় জ্যাম, তাই দেরি হচ্ছে। বৃষ্টি হওয়ায় বাইরেও বের হতে পারছি না।কাউন্টারের টিকিট বিক্রেতা মিলন জানান, ঈদের কারণে বাসের শিডিউলে কিছুটা হেরফের হচ্ছে। তবে খুব একটা দেরি হচ্ছে না। তিনি বলেন, ঈদ উপলক্ষে যে ভাড়া নির্ধারণ হয়েছে, তাই নিচ্ছি, এর বেশি নয়।বরিশালগামী যাত্রী ফারুক মিয়া বলেন, ঈদের সময় বাড়ি যাওয়া এক কঠিন বিড়ম্বনা। তারপরও বাবা-মা এবং আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে ঈদে বাড়ি থাকলে আনন্দের কমতি থাকে না। ঈদের দু-একদিন আগে ভিড় বেশি থাকে, তাই আগেভাগে বাড়ি যাচ্ছেন তিনি।এবার যাত্রীর চাপ প্রত্যাশা অনুসারে না হলেও আশা ছাড়েননি পরিবহন ব্যবসায়ীরা। সোমবার গার্মেন্টসহ সব ধরনের বেসরকারি অফিস বন্ধ হচ্ছে। এজন্য ওইদিন জমজমাট পরিবহন বাণিজ্যের আশা করছেন তারা।এ সম্পর্কে জানতে চাইলে নাবিল বাস কাউন্টার মাস্টার ফজলুল হক বলেন, ঈদ উপলক্ষে বাড়ি ফেরার সময় এখনো আছে। দীর্ঘ ছুটির কারণে সবাই ধীরে সুস্থে বাড়ি ফিরছেন। তাই খুব বেশি ভিড় নেই। তবে সোমবার থেকে চাঁদরাত পর্যন্ত যাত্রীদের ভিড় থাকবে বলে মনে করেন তিনি।এদিকে পরিবহন সেক্টরে নৈরাজ্য রোধে ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ট্রাফিক ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখতে পুলিশসহ ভলান্টিয়ার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এছাড়া কল্যাণপুর থেকে গাবতলী ব্রিজ পর্যন্ত ১০-১২টি ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করেছে ডিএমপি। যেখান থেকে সার্বক্ষণিক তদারকি নিশ্চিত করা হচ্ছে।এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের এসআই সিদ্দিক হোসেন বলেন, সার্বক্ষণিক তদারকি নিশ্চিত করা হয়েছে। বিপুল পরিমাণ ভলান্টিয়ারও আমাদের সঙ্গে কাজ করছে। এছাড়া র‌্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অস্থায়ী ক্যাম্প করা হয়েছে। ওয়াচ টাওয়ারের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক রাস্তা মনিটরিং করা হচ্ছে। তিনি আরা জানান, আমরা রাস্তায় কোন বাস দাঁড়াতে দিচ্ছি না। এজন্য রাস্তায় গাড়ির জটলা বাধার সুযোগ কম। এখন পর্যন্ত কোথাও কোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি বলে দাবি করেন তিনি।এমএ/এমএমজেড/পিআর

Advertisement