বিশেষ প্রতিবেদন

নতুন টাকায় ঈদের আনন্দ

দুনিয়ায় টাকার গন্ধই নাকি সবচেয়ে মধুময়। আর যদি সে টাকা নতুন হয়, তাহলে তো কথাই নেই। টাকার গন্ধ যে সুখ দেয়, শৈশবেই তা অনুভূত হয়। সম্প্রতি বাঙালির ঈদ আয়োজনে নতুন টাকা বাড়তি আনন্দের সংযোজন ঘটিয়েছে।ঈদের দিন সকালে প্রিয়জনদের হাতে নতুন টাকা বিতরণ করার মজাই আলাদা। বাড়ির শিশু-কিশোররা বড়দের কাছ থেকে নতুন টাকা সংগ্রহ করতে মুখিয়ে থাকে। চলে নানা কায়দা-কৌশলেও। ঈদের দিনের সেলামিতে নতুন টাকা থাকা চাই-ই।রাজধানীতে নতুন টাকাকে কেন্দ্র করে ব্যবসা বেশ পুরোনো। তবে নতুন টাকার ব্যবসা যেন দিনকে দিন আরো জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ব্যাংক থেকে নতুন টাকা সংগ্রহ করে এসব ব্যবসায়ীরা বিশেষ লাভে (বাট্টা বা কমিশন) বিক্রি করে থাকেন।রাজধানীর গুলিস্তান মোড়ে নিত্যদিন নতুন টাকা বেচাকেনার হাট বসে। গুলিস্তান মার্কেটের (বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের বিপরীত পাশে) ফুটপাত ঘেঁষে প্রায় অর্ধশত নতুন টাকার দোকান। ছোট একটি টেবিল আর টুল নিয়েই দোকানের অবকাঠামো।টেবিলের ওপর থরে থরে সাজানো বিভিন্ন নোটের নতুন টাকার বান্ডিল। দোকানিরা বিশেষ কমিশনে নতুন টাকা বিক্রির হাক ছাড়ছেন। ক্রেতা আসছেন। কেউ কিনছেন, কেউ আবার দাম হাকিয়ে চলে যাচ্ছেন।দোকানিরা জানান, ১০০ টাকার নোটের ১০ হাজার টাকার বান্ডিলে বাট্টা ১০০ টাকা, ৫০ টাকার নোটের ৫ হাজার টাকার বান্ডিলে বাট্টা  ১০০ টাকা, ২০ টাকার নোটের দুই হাজার টাকার বান্ডিলে বাট্টা ৭০ টাকা, ১০ টাকার নোটে এক হাজার টাকার বান্ডিলে বাট্টা ১০০ টাকা, পাঁচ টাকার নোটের ৫০০ টাকার বান্ডিলে বাট্টা ৭০ টাকা, দুই টাকার নোটের ২০০ টাকার বান্ডিলে বাট্টা ৪০ টাকা।আসন্ন ঈদুল উল ফিতর উপলক্ষে নতুন টাকা বেচাকেনায় ধুম পড়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সরেজমিনে সে দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়। অনেকেই লাইন ধরে নতুন টাকা ক্রয় করছেন।কথা হয় শফিকুল ইসলাম নামের এক ক্রেতার সঙ্গে। বাড়ি বগুড়া। ঈদের ছুটিতে ২ জুলাই বাড়ি যাবেন। ঈদের কেনাকাটার সঙ্গে নতুন টাকাও কিনতে হবে তার। শফিকুল বলেন, বহু আগে থেকেই ঈদের ছুটিতে বাড়ি যেতে নতুন টাকা সঙ্গে করে নিয়ে যাই। সবার হাতে নতুন টাকা বিতরণ করার মজাই আলাদা। বিশেষ করে পরিবারের ছোটরা নতুন টাকা পাবার আশায় চেয়ে থাকে।শাহ আলম নামের নতুন টাকার দোকানি বলেন, এক বছর হয় নতুন টাকার ব্যবসা ধরেছি। অনেকেই ২০/৩০ বছর ধরেও এ ব্যবসা করছেন। অন্যান্য সময় বেচাকেনা হলেও দুই ঈদের সময় ধুম পড়ে যায়। বুধবার প্রায় সাড়ে তিন হাজার টাকা লাভ হয়েছে। আজও তাই হবে। মৌসুমই তো এখন। অনেকেই আবার ফিতরার জন্য নতুন টাকা বিতরণ করে থাকেন। তারা ব্যাংক থেকে সংগ্রহ করতে না পারলে আমাদের কাছ থেকে নতুন টাকা কিনে নেন।এএসএস/বিএ

Advertisement