সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে পুনঃনিয়োগ দিয়েছে সরকার। সাবেক এই প্রধান বিচারপতি আগামী তিন বছর এই সংস্থায় দায়িত্ব পালন করবেন।এর আগে ২০১৩ সালের ২৩ জুন সরকার তিন বছরের জন্য সাবেক এই প্রধান বিচারপতিকে আইন কমিশনের সপ্তম চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয়। তার পরের দিন দায়িত্বভার গ্রহণ করেন তিনি।বৃহস্পতিবার কমিশনের সচিব মো. আলী আকবর সাংবাদিকদের বলেন, আইন মন্ত্রণালয় থেকে চেয়ারম্যানের পুনঃনিয়োগ সংক্রান্ত চিঠি কমিশনে এসে পৌঁছেছে। বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে তিন বছরের জন্য পুনঃনিয়োগ দেয়া হয়েছে। আগামী ২৩ জুলাই তার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল।আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে আগের মতোই প্রধান বিচারপতির সমান বেতন, ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা পাবেন খায়রুল হক।গুরুত্বপূর্ণ এই সংস্থায় এর আগে দায়িত্ব পালনকারীদের প্রায় সবাই অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি ছিলেন। এর মধ্যে রয়েছেন বিচারপতি এফকেএমএ মুনেম, বিচারপতি কামাল উদ্দিন হোসেন, বিচারপতি মোস্তফা কামাল, বিচারপতি এ টি এম আফজাল প্রমুখ।বিচারপতি আব্দুর রশীদ ২০১০ সালের অক্টোবরে পদত্যাগ করার পর আইন কমিশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক মো. শাহ আলমকে। তিনি ২০১০ সালের ২৪ অক্টোবর থেকে ২০১৩ সালের ২৩ জুলাই পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক ২০১০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১১ সালের ১৭ মে পর্যন্ত দেশের ১৯তম প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করেন।১৯৪৪ সালের ১৮ মে মাদারীপুর জেলার রাজৈর থানায় জন্ম নেয়া খায়রুল হক ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন ১৯৬০ সালে। ১৯৬৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রি নেয়ার পর ১৯৭৫ সালে লন্ডনের লিংকনস ইন থেকে বার অ্যাট ল` করেন তিনি।১৯৭০ সালে আইনজীবী হিসেবে কাজ শুরু করে ১৯৭৬ সালে হাইকোর্টে এবং ১৯৮২ সালে আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন খায়রুল হক। এছাড়া ১৯৭৮ সাল থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে খণ্ডকালীন শিক্ষকতা করেন তিনি।১৯৯৮ সালের ২৭ এপ্রিল বিচারপতি খায়রুল হক হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। ২০০০ সালের ২৭ এপ্রিল তিনি হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি হন। এরপর ২০০৯ সালের ১৪ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান।হাইকোর্টে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা ছাড়াও সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা, স্বাধীনতার ঘোষণা ও ঘোষক সম্পর্কিত মামলা, রেসকোর্স ময়দানে স্বাধীনতার স্মৃতি সংরক্ষণ, ঢাকার চার প্রধান নদী রক্ষা, ঢাকার ট্যানারি স্থানান্তর এবং আপিল বিভাগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, ফতোয়াসহ বিভিন্ন আলোচিত মামলার রায় আসে খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন আদালত থেকে। অন্যদিকে জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের প্রধান হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন।এফএইচ/বি
Advertisement