বিয়ারের সঙ্গে মহাত্মা গান্ধীর ভাবমূর্তির কোনও বিরোধ নেই, ওই পানীয় মহাত্মার ‘সত্য ও ভালোবাসা আদর্শ’ ছড়ানোর ব্যাপারে সাহায্যও করতে পারে- এমনটাই হয়ত ভেবেছিল যুক্তরাষ্ট্রের কানেক্টিকাট অঙ্গরাজ্যের ‘নিউ ইংল্যান্ড ব্রুয়িং কোম্পানি’। আর তাই সাধ করে নিজেদের ব্র্যান্ডের বিয়ারের নামও রেখেছিল ‘গান্ধী বট’। যার ক্যান ও বোতলের গায়ে গান্ধীর ছবি পর্যন্ত রয়েছে। কিন্তু ভারতের জাতির জনকের এ ‘অপমান’ দেখে আদালতে মামলা ঠুকলেন হায়দরাবাদের এক আইনজীবী।সংশ্লিষ্ট মার্কিন কোম্পানির দাবি, ওই বিয়ারে বেশি তীব্রতার জন্য ভারতীয় হপ্স (পানীয় সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত ভেষজ ) এবং আমেরিকার তিন ধরনের হপ্স মেশানো রয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে এই বিয়ারটি বিক্রি হয় না বললেই চলে।ভারতে মামলার খবর জানার পরই ক্ষমা চেয়েছেন কোম্পানির মালিক ম্যাট ওয়েস্টফল। তিনি বলেন, `গান্ধীর নাতি ও নাতনি কিন্তু ওই লেবেল দেখে তাদের ভালো লাগার কথাই জানিয়েছেন।` বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘আশা করি, আমাদের সদিচ্ছার কথা আপনারা বুঝবেন। যে নতুন ও সৃষ্টিশীল পদ্ধতিতে মহাত্মাকে আমরা শ্রদ্ধা জানিয়েছি, তাকে সম্মান করবেন। তবে ভারতীয়দের আবেগে আঘাত লেগে থাকলে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। আমরা কাউকে অসম্মান করতে চাইনি।’গান্ধীর নামে বিয়ারের ব্র্যান্ড তৈরির সপক্ষে তিনি বলেছেন, এটা তাদের শ্রদ্ধারই বহিঃপ্রকাশ। খুব সাবধানতা আর যত্ন নিয়ে এই পানীয় তৈরি করা হয় বলেও জানিয়েছেন তিনি।বিজ্ঞাপন প্রচারের ঢঙে তিনি দাবি করেছেন, সুগন্ধি ও পুরোপুরি নিরামিষ ‘গান্ধী-বট’ মানুষকে আত্মশুদ্ধির পাশাপাশি সত্য ও ভালোবাসার পথে হাঁটতে সাহায্য করতে পারে। ভালো খাবার আর বন্ধুদের সঙ্গে উপভোগ করে খাওয়ার জন্য এই বিয়ার আদর্শ। পাশাপাশি, গান্ধী এবং তার আইন অমান্যের অহিংস পন্থাকে জানার আগ্রহ তৈরির ব্যাপারেও তা সাহায্য করতে পারে। আমেরিকায় বসবাসকারী বহু ভারতীয় এই উদ্যোগ পছন্দ করেছেন।তবে সুনীল জনার্দন নামে জনৈক আইনজীবী ওই কোম্পানির বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে পাশ হওয়া ভারতের জাতীয় সম্মানহানিবিরোধী আইন (পিআইএনএইচ ) এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪ (এ ) (বিদ্বেষমূলক শব্দ, চিহ্ন ও প্রতীক ব্যবহার) ধারায় হায়দরাবাদের সাইবেরাবাদ এলাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন। সোমবার এ মামলার শুনানি শুরু হবে। - টাইমস অব ইন্ডিয়া
Advertisement