খেলাধুলা

মোসাদ্দেককে জাতীয় দলে চান সুজনও

খালেদ মাসুদ পাইলটের মত মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের পক্ষে খালেদ মাহমুদ সুজনও। লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ কোচের সুরে সুর মিলিয়ে আবাহনী কোচ মনে করেন, মিডল অর্ডার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত এখনই জাতীয় দলে খেলার দাবিদার। মঙ্গলবার জাগো নিউজের সাথে আলাপে এমনটাই জানিয়েছেন খালেদ মাহমুদ। ‘এবারের প্রিমিয়ার লিগে কাদের খেলা ভালো লেগেছে? কোন কোন ক্রিকেটারকে সম্ভাবনাময়ী মনে হয়েছে? কার কার জাতীয় দলে খেলার সম্ভাবনা খুব বেশি বলে মনে করেন?- এমন প্রশ্নের মুখোমুখি হয়ে বেশ কজনের নামই বলেন খালেদ মাহমুদ। তবে সবাইকে ছাপিয়ে বেশি উচ্চারিত হয়েছে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের নাম। জাতীয় দলের সাবেক এ অধিনায়কের মূল্যায়ন- ‘এবারের প্রিমিয়ার লিগে বেশ কজনার খেলাই চোখে পড়েছে, ভালো লেগেছে। কয়েকজন বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছেন। তাদের নজর কাড়া পারফরম্যান্স সত্যিই মাঠ আলোকিত হয়েছে।’ সিনিয়র জুনিয়র সবার পারফরম্যান্স ভালো হয়েছে বলে মনে করেন সুজন। তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে লক্ষণীয় বিষয় হলো সিনিয়র-জুনিয়র ও মাঝ বয়সী সবার মধ্য থেকেই ভালো পারফরম্যান্স বের হয়ে এসেছে। বেশ কজন সিনিয়র ভালো খেলেছে। রকিবুলের ব্যাটিং বেশ ভালেঅ লেগেছে আমার। ইমতিয়াজ তান্নার ব্যাটিংও বেশ উপভোগ করেছি। আবার তরুণ মেহেদী মারুফের ব্যাট চালনাও ছিল চমৎকার। ’তিন তরুণের কথাই বেশি উল্লেখ করেন আবাহনী কোচ। তার মতে, ‘তরুণদের মধ্যে ভিক্টোরিয়ার দুই উদ্যমী আল-আমিন ও আবদুল মজিদ এবং আবাহনীর মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত সত্যিই চমৎকার ব্যাটিং করেছে। তাদের ব্যাট চালনা দেখে আমার বেশ ভালো লেগেছে। পাশাপাশি আরেক তরুণ মাহমুদুল হাসান লিমনের এক দারুণ সেঞ্চুরি দেখেও মুগ্ধ হয়েছি। আমাদের সাথে দারুণ এক ম্যাচ জেতানো সেঞ্চুরি উপহার দিয়েছে মাহমুদ হাসান লিমন। তার ব্যাটেই ওই ম্যাচটা হেরেছি আমরা; কিন্তু তারপরও তার ব্যাটিংটা মনে গেঁথে আছে। সত্যিই কি অসাধারণ দক্ষতায় আমাদের হাত থেকে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজ অনুকূলে নিয়ে গেছে লিমন।’ তারপরও আবাহনী কোচের মূল্যায়ন, তিন তরুণ তুর্কি মজিদ, আল-আমিন ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত বাকিদের চেয়ে ঢের এগিয়ে। তিনজনের মাঝেই  সম্ভাবনার সুস্পষ্ট ইঙ্গিত পেয়েছেন তিনি। তবে খালেদ মাহমুদ সুজনের মনে হয় আল আমিন ও মজিদের চেয়েও মোসাদ্দেক সৈকত অনেক বেশি উজ্জ্বল। সৈকত সবাইকে ছাপিয়ে। এ তরুণ মিডল অর্ডারের স্বকীয়তা- স্বাতন্ত্র্য ও বৈশিষ্ট্যের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে খালেদ মাহমুদ সুজন বলেন,  ‘আবাহনীর মত সাপোটার্স নির্ভর দলে ছয় নম্বর পজিসনের মত ভাইটাল জায়গায় একজন তরুণের নিয়মিত খেলা চাট্টিখানি কথা নয়। এটা একটা বড় চাপ। আমার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, অনেক বড় বড় ব্যাটসম্যানও ওই পজিসনে খেলতে নেমে ঘেমে নেয়ে উঠেছেন; কিন্তু  মোসাদ্দেক সৈকত অসীম সাহস, অবিচল আস্থা আর প্রচন্ড আত্ববিশ্বাস নিয়ে ব্যাট করেছে। দেখে মনেই হয়নি একজন আনকোরা তরুণ খেলছে। মনে হচ্ছে একজন পরিণত, অভিজ্ঞ ও প্রতিষ্ঠিত ব্যাটসম্যান বুঝি ব্যাট করছে। তার ব্যাটিং দৃঢ়তা ও সাবলীলতায় আমি মুগ্ধ। কখনো কখনো তার ব্যাটিং শৈলি আমার কাছে অবিশ্বাস্য মনে ঠেকেছে।’ মোসাদ্দেক সৈকতের মেধা ও সামর্থ্যরে মূল্যায়ন করতে গিয়ে আবাহনী কোচের মনে হচ্ছে, এ তরুণ জাতীয় দলে খেলার জোর দাবিদার। এ সম্পর্কে তার ব্যাখ্যা, ‘আমাকে দ্বি-স্তর বিশিষ্ট নির্বাচক প্যানেলে রাখা হয়েছে। তারপরও শেষ কথা হলো, আমি তো আর দল নির্বাচন করবো না। সেটা নির্বাচকরাই করবেন। কাজেই আমার এখনই তার অন্তর্ভুক্তি নিয়ে কিছু বলা ঠিক হবে না। আমি তা বলতেও চাইনা।’তবুও তিনি মনে করেন, সৈকত জাতীয় দলে প্রবেশ করার জোর দাবিদার। তিনি বলেন, ‘এটা সত্যি, আমি মোসাদ্দেক সৈকতকে খুব কাছ থেকে দেখেছি, তাতে মনে হয়েছে, এ তরুণ এখনই জাতীয় দলে ঢোকার দাবিদার। তারপরও কথা থাকবে। তার পজিশনে শুভাগত হোম ও নাসির হোসেন আছে। তিনজনই এক ক্যাটাগরির ক্রিকেটার। সবাই মিডল অর্ডার কাম অফস্পিনার। শুভাগত হোম ও নাসিরকে পিছনে ফেলে মোসাদ্দেক দলে জায়গা করে নিতে আসতে পারবে কি না সেটাই দেখার বিষয়।’আইএইচএস/এমএস

Advertisement