‘মেয়ে মিতুকে হত্যার পরিকল্পনার ছক জামাতা বাবুল আক্তার নিজেই করেছিলেন’, কয়েকটি গণমাধ্যমে এমন সংবাদ প্রচার হয়েছে। মেয়ের বাবা হিসেবে এমন অভিযোগ বিশ্বাস করেন কিনা জানতে চাইতেই তেলেবেগুনে জ্বলে উঠলেন বাবুল আক্তারের শ্বশুর সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন। জাগো নিউজের এ প্রতিবেদককে তিনি বলেন, ‘আমি মোটেও এমন ফালতু সংবাদ বিশ্বাস করি না। এমন বাজে খবর প্রকাশের কথা আপনার মুখেই প্রথম শুনলাম। যদিও শুরু থেকেই একটি চক্র দুটি পরিবারের চরিত্র হননের চেষ্টা করে আসছে। সেই চক্রের চক্রান্তেরই অংশ এমন সংবাদ।’ শনিবার বিকেল সোয়া ৫টার দিকে ঢাকার খিলগাঁও মেরাদিয়া ভূঁইয়াপাড়ায় (বাসা নং ২২০/এ) নিজ বাড়িতে জাগো নিউজকে এসব কথা বলেন এসপি বাবুল আক্তারের শ্বশুর মোশাররফ হোসেন। শুধু তাই নয়, এসপি বাবুল আক্তারের নিহত স্ত্রী মাহবুবা আক্তার মিতুর ছোট বোন শায়লা মোশাররফ নিনজা দুটি সংবাদ মাধ্যমের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করারও হুমকি দিয়েছেন। বাবুল আক্তার কখন বাসায় ফিরেছেন- জানতে চাইলে শ্বশুর মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘বিকেল ৪টার কিছুক্ষণ পরপরই সে (বাবুল আক্তার) বাসায় ফিরেছে। এরপর গোসল করে ঘুমিয়ে পড়ে।’ কোথা থেকে তাকে নিয়ে আসা হলো, কারা পৌঁছে দিলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, ডিবি ডিসি (পূর্ব) মাহবুবুল আলমের গাড়িতে তাকে পৌঁছে দেয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদ সম্পর্কে জানতে চাইলে মোশাররফ হোসেন বলেন, ডিবি পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে কিনা সঠিক জানি না। এখনো বাবুলের সঙ্গে আমার সবিস্তারে কথা হয়নি। পরে জানতে পারবো। বাতাসে গুঞ্জন ও দু-একটি সংবাদমাধ্যমে ‘স্ত্রী মিতু হত্যা পরিকল্পনার ছক স্বামী বাবুল আক্তার নিজেই করেছিলেন’ এমন সংবাদ প্রচার হয়েছে। আপনার কি মনে হয় জানতে চাইতেই রেগে যান তিনি। বলেন, ‘আমার জামাতা এমন কাজ করবে এটা আমি বিশ্বাস করি না। তাছাড়া এমন অভিযোগ এই প্রথম শুনলাম। এমন সংবাদ প্রচার করা কুরুচির পরিচয় দেয়।’ এসপি বাবুল আক্তারের নিহত স্ত্রী মাহবুবা আক্তার মিতুর ছোট বোন শায়লা মোশাররফ নিনজা জাগো নিউজকে বলেন, ‘কথিত একটি অনলাইন পত্রিকা, একটি পত্রিকার অনলাইন পেজে অত্যন্ত বাজেভাবে আমার বোন-জামাইকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। অথচ সেখানে আমাদের কারো কোনো বক্তব্য নেয়া হয়নি। এতো অরুচিকর সংবাদ বিশ্বাস করা তো দূরের কথা, কল্পনারও বাইরে। কোনো পাঠকই এমন সংবাদ বিশ্বাস করতে পারে না।’ শায়লা বলেন, আমরা এমন সংবাদ প্রচারকারী অনলাইন ও পত্রিকার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করার কথা ভাবছি। মানবাধিকার কমিশনেও আমরা এ বিষয়ে অভিযোগ করবো। এর আগে গত শুক্রবার রাত পৌনে ১টার দিকে বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তুলে নেয় খিলগাঁও থানা পুলিশ। পরে স্ত্রী হত্যার বিষয়ে তাকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তবে শনিবার সকাল পর্যন্ত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কেউই বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়টি স্পষ্ট করেননি। অবশেষে শনিবার দুপুরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, এই মামলার বাদী তিনি। তাই শনাক্তকৃত আসামিদের বিষয়ে জানার জন্য তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রায় ১৪ ঘণ্টা পর ডিএমপি’র গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনারের (ডিসি পূর্ব) গাড়িতে তাকে খিলগাঁও মেরাদিয়ার ভূঁইয়াপাড়ার শ্বশুরবাড়িতে নামিয়ে দেয়া হয়।জেইউ/এসএইচএস/এবিএস
Advertisement