খেলাধুলা

২৯-এ পা রাখলেন মেসি

মেসির নাম শোনেনি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। সারা পৃথিবীতে তার অসংখ্য ভক্ত অনুরাগী রয়েছে। তাদের কাছে মেসিই সেরা খেলোয়াড়। আর এই সেরা খেলোয়াড়টাই ২৯ বছরে পা রাখলেন আজ। ১৯৮৭ সালের ২৪ জুন রোজারিওতে এক দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন বিশ্বের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় আর্জেন্টিনার লিওনেল মেসি। মেসির বাবার নাম হোর্হে হোরাসিও মেসি এবং মায়ের নাম সেলিয়া মারিয়া কুচ্চিত্তিনি। চার ভাইবোনের মাঝে মেসি তিন নম্বর। মেসির বাবা শখের ফুটবল কোচ হলেও সেই কোচিং দিয়ে খুব একটা রোজগার হতো না তার। পরবর্তীতে তিনি ইস্পাতের একটি কারখানায় কাজ শুরু করেন। তার মা পরিবারের অভাব মেটানোর জন্য খণ্ডকালীন পরিচ্ছন্নতা কর্মী হিসেবে কাজ করতেন। তারপরেও পরিবারে সকলে মিলে স্বচ্ছল জীবন যাপন সম্ভব ছিল না মেসিদের জন্য।ছোটবেলা থেকেই ফুটবলের প্রতি অনেক ঝোঁক ছিল মেসির। লিওনেল মেসি মাত্র পাঁচ বছর বয়সে মেসি স্থানীয় ক্লাব গ্রান্দোলির হয়ে ফুটবল খেলা শুরু করেন। মেসির প্রথম কোচ তার বাবা হোর্হে। এরপর ১৯৯৫ সালে তিনি রোজারিও ভিত্তিক ক্লাব নিওয়েল’স ওল্ড বয়েজের হয়ে খেলা শুরু করেন। কিন্তু ১১ বছর বয়সেই মেসির ‘গ্রোথ হরমোনের’ ঘাটতি রয়েছে জানার পর মেসির ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে। প্রতিদিন প্রায় ৯০০ ডলার খরচ করতে হতো তার সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য। কিন্তু মেসির পরিবারের ছিল না সেই ব্যয়ভার বহন করার ক্ষমতা। স্বদেশী ক্লাব রিভার প্লেট মেসিকে দলে নিতে চাইলেও মেসির বেড়ে ওঠার ব্যয়ভার বহন করতে অস্বীকৃতি জানায়। কিন্তু মেসির কিছু আত্মীয় স্পেনে থাকায় তাদের কল্যাণে আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে মেসিকে স্পেনের বার্সেলোনা ক্লাবে নিয়ে আসেন তখনকার বার্সা কর্তৃপক্ষ। তারপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি মেসি। আজ মেসির ঝুলিতে কি নেই! বার্সেলোনার হয়ে জিতেছেন ৮টি লা লিগা, ৪টি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, ৩টি ফিফা ক্লাব ওয়ার্ল্ড কাপ, ৩টি উয়েফা সুপার কাপসহ অসংখ্য পুরষ্কার।  হয়েছেন পাঁচবারের ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলার। আর্জেন্টিনার হয়ে জিতেছেন অলিম্পিকে সোনা। তাছাড়া আর্জেন্টিনার বয়স ভিত্তিক দল অনুর্ধ্ব-২০ এর হয়ে সেটির বিশ্বকাপও জিতেছেন মেসি। বার্সেলোনার সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন, হয়েছেন এল ক্লাসিকোর ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলদাতা, আর্জেন্টিনার শীর্ষ গোলদাতাও হয়েছেন ২০১৬ কোপা আমেরিকায় এতকিছুর পরেও মেসির অর্জনের তালিকাতে নেই আর্জেন্টিনার মূল দলের হয়ে কোন ট্রফি। নিন্দুকের চোখে সর্বকালের সেরা হতে জাতীয় দলের ট্রফি জিততে হয় কোন সেরা খেলোয়াড়কে। কিন্তু তিনি সেই ট্রফি ছাড়াই হয়ে গেছেন সর্বকালের সেরাদের একজন। আরআর/পিআর

Advertisement