আন্তর্জাতিক

অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি ব্রিটেন?

ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে বিপক্ষে বৃহস্পতিবারের ভোটাভুটির পর ব্রিটেনের ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা নিতে যাচ্ছে ইইউ। সরকারি বেসরকারি কর্মকর্তাদের মন্তব্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার বার্তাসংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে ইইউর পদক্ষেপের একটি পরিকল্পনা তুলে ধরেছে। বৃহস্পতিবার ব্রিটেনের স্থানীয় সময় রাত ১০টায় ভোটগ্রহণ শেষ হবে। মূলধারার বুথ ফেরত জরিপের পরিকল্পনা নেই। রাতজুড়ে ভোট গণনার পর ফল ঘোষণা করা হবে ব্রাসেলসের মধ্য দুপুরে। ফল ঘোষণার আগেই বড় ধরনের হিসাব-নিকেশ শুরু হয়েছে। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বলেছেন, ব্রিটেন ইইউ থেকে বেরিয়ে গেলে তিনি শিগরিরই তা ইউরোপীয় ইউনিয়নকে জানিয়ে দেবেন। কিন্তু এতে সময় নিতে পারেন তিনি। যদি হেরে যান ডেভিড ক্যামেরন তাহলে কনজারভেটিভ পার্টির একাংশের তীব্র চাপের মুখে পড়তে পারেন তিনি। শুধু তাই নয়, পদত্যাগের দাবিও উঠতে পারে। তবে ব্যতিক্রম হতে পারে যদি জয়ী হন তিনি।  বন্ধ হয়ে যাবে অনেক মার্কেট। ব্যাংক অব ইংল্যান্ড এবং ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক ভোটাভুটি-পরবর্তী ‘ব্রেক্সিট শক’ মোকাবেলা করার পরিকল্পনা নিয়েছে। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের নেতারা শুক্রবার সকাল ৭টায় ব্রাসেলসে সর্বদলীয় প্রধান ও স্পিকারের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। অনেকেই ব্রিটেনের প্রতিনিধিদের ওই বৈঠকে অংশ নেয়া ঠেকাতে চান।ব্রিটেন যদি ইইউ থেকে বেরিয়ে যায়, তাহলে ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক যিনি আগামী সপ্তাহে ইইউ সম্মেলনের সভাপতিত্ব করবেন; তিনি কাউন্সিলের নামে একটি বিবৃতি দেবেন। তার ওই বিবৃতি আসবে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ব্রিটেনের ইইউ ত্যাগ নিশ্চিত করার পর। শনিবার ইইউর পাঁচ প্রতিষ্ঠাতা জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস ও লুক্সেমবার্গের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা শুক্রবারের আলোচনার একদিন পর শনিবার ফের সাক্ষাৎ করবেন। ইউরো জোনের বেশ কয়েকজন অর্থমন্ত্রী জরুরি আলোচনায় বসার জন্য  ইউরোগ্রুপকে পরামর্শ দিয়েছে, যদিও জ্যেষ্ঠ নেতারা এতে দ্বিমত পোষণ করেছেন। ব্রেক্সিট ভোটের পর সদস্য দেশের রাষ্ট্রদূত ও নেতারা ব্রাসেলসে বৈঠকে বসতে পারেন বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক ২৮ নির্বাহী কমিশনারকে নিয়ে বৈঠকে বসবেন। তবে ব্রেক্সিট পরবর্তী কোনো অস্থিরতা তৈরি হলে তা এগিয়ে আনা হতে পারে।  ইইউর কর্মকর্তারা বলছেন, ব্রেক্সিটের জন্য কোনো ধরনের পরিকল্পনা নেই। এর আগে গত বছর ঋণে জর্জরিত গ্রিসের বিদায় ঘণ্টা বাজলেও একই ধরনের কথা বলা হয়েছিল। একজন কর্মকর্তা সেই সময় বলেন, গ্রিসের জন্য রুম-বি পরিকল্পনা নেই। এদিকে, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাদ বলেছেন, তিনি আগামী সপ্তাহে জার্মান চ্যাঞ্চেলর অ্যাঙ্গেলা মারকেলের সঙ্গে ইইউর পদক্ষেপের বিষয়ে আলোচনার জন্য বৈঠকে বসবেন। এরপর মঙ্গল ও বুধবার ব্রাসেলসে ইইউর বৈঠকে অংশ নেবেন তারা। ২৪ ঘণ্টার ইইউ সম্মেলনের সময় নির্ধারিত রয়েছে। যদি সত্যি সত্যি ব্রেক্সিটের পক্ষের সমর্থকরা জয়ী হন, তাহলে প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের রাজনৈতিক জীবনের বিদায় ঘণ্টা বেজে যেতে পারে। কেননা তার দলের অনেকেই ব্রেক্সিটের পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছেন। রাশিয়া, ইউরো মুদ্রা, বেকারত্ব ও শরণার্থী সমস্যা নিয়ে ব্রিটেনের সঙ্গে আলোচনার দ্বার বন্ধ করে দিতে পারেন ইইউর নেতারা। ব্রাসেলসের পরিকল্পনার কারণে ‘অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ’র মুখোমুখি হতে যাচ্ছে ব্রিটেন। এসআইএস/আরআইপি

Advertisement