দেশজুড়ে

সেনবাগে আ.লীগ-বিএনপি সংঘর্ষে আহত ২৫

নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার ছাতারপাইয়া বাজারে মাংস দোকানির নিকট চাঁদা দাবিকে কেন্দ্র করে আওয়ামী ও বিএনপির মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এসময় অনন্ত ২৫ জন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার মধ্যরাত পর্যন্ত এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সহকারী পুলিশ সুপার এসপি সার্কেল বেগমগঞ্জ হাসান ইমামের নেতৃত্বে সেনবাগ, সোনাইমুড়ী থানা পুলিশ এবং অতিরিক্ত দাঙ্গা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে শতাধিক রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এসময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দু জনকে আটক করে। আটকরা হলো, মহিন উদ্দিন (৩৫) ও আবদুল কাদের ওরফে বিপুল (২৮)। বুধবার দুপুরে সরেজমিনে ছাতারপাইয়া বাজারে গিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা দিকে ছাতারপাইয়া গ্রামের তোফাজ্জল হক প্রকাশ তফা মেম্বারের নেতৃত্বে একদল লোক যাকাতের জন্য সোনাকান্দি গ্রামের মাংস ব্যবসায়ী আবদুল কাদেরর নিকট একশ শাড়ি ও একশ লুঙ্গির দাম প্রায় ৬০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। এসময় ওই ব্যবসায়ী তফা মেম্বারকে পাঁচ হাজার টাকা দেয়। পরে তফা ও তার লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে ওই দোকানিকে মারধর শুরু করে। এসময় তার চিৎকারে পার্শ্ববর্তী দোকানের মালিক ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবদুর রহমানের ভাই আলী করিম প্রতিবাদ করেন। এতে তফা মেম্বার ও তার লোকজন আরো ক্ষিপ্ত হয়ে আলী করিমকে মারধর শুরু করেন। বিষয়টি দ্রুত এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে আওয়ামী লীগ-বিএনপির দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে এক পক্ষ চেয়ারম্যান গ্রুপ ছাতারপাইয়া বাজারের পূর্ব বাজারে ও তফা গ্রুপ পশ্চিম বাজারে অবস্থান নেয়। এরপর উভয়ের লোকজন একে অপরের ওপর ইটপাটকেল, কাঁচের বোতল ও লাঠি-সোটা নিয়ে হামলা চালায়। এক পর্যায়ে তফা গ্রুপ ওই বাজারের বিএনপি সমর্থিত অন্তত ১০ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মোক্কা এন্টারপ্রাউজ, আল্লা ভরসা স্টোর, ইশা টেলিকম, আল মদিনা স্টোর, আলী করিম স্টোরসহ অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে দোকানের সাঁটার খুলে দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এছাড়াও ৮/১০ পল্লী বিদ্যুতের মিটারও ভাঙচুর তফা গ্রুপের লোকজন।উভয়ের পক্ষের ইটপাটকেল ও বোতলের আঘাতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী নুরুল হক মজুমদার (৬০), আওয়ামী লীগ নেতা তফাজ্জল হক ওরফে তফা মেম্বার (৪৫) ও বাজারের ব্যবসায়ী ছিদ্দিক উল্যাহ (৫০),দুলাল মেম্বার (৫০), শাকিল (১৮), তারেক (২০), রাজন (২২), খলিল (২৬), আলা উদ্দিন (২২),কামাল (৩২), আনোয়ার (৩০), ইব্রাহিম (২৬), বাবুল (২২), আহত হয়। আহতদের সেনবাগ, সোনাইামুড়ী ও  নোয়াখালী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।এদিকে, এ ঘটনার পর পুরো ছাতারপাইয়া বাজারে ব্যবসায়ীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে সকাল থেকে অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ থাকলেও দুপুরের পর আস্তে আস্তে দোকান পাট খুলেতে দেখা যায়। সেনবাগ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন উর রশিদ চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে এবং অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বাজারে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।মিজানুর রহমান/এআরএ/পিআর

Advertisement