দেশজুড়ে

১০ টাকার অ্যাকাউন্ট খুলতে এসে ভোগান্তিতে কৃষকরা

‘ফকরাণীর অ্যাকাউন্ট খোলার সময় ব্যাংকের নেই। তোমরা সারাদিন বসি থাকলেও কাজ হবে না।’ এরকম অভিব্যক্তি কুড়িগ্রামের ব্যাংক কর্মকর্তাদের। সরকার কৃষকের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিতে সব ধরণের প্রচেষ্টা চালালেও, কাঙ্খিত সেবা পেতে পদে পদে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে কৃষকদের। চলতি বোরো মৌসুমে সরকার খাদ্য বিভাগের মাধ্যমে কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান ক্রয়ের উদ্যোগ নেয়। যেখানে কৃষককে ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে অর্থ পরিশোধ করা হবে। সে অনুযায়ী বাংকে অ্যাকাউন্ট খুলতে এসে সাধারণ কৃষকরা পড়েছেন চরম হয়রানির মধ্যে। শুনতে হচ্ছে নানান কটূক্তি। দিনের পর দিন ব্যাংকে ধরনা দিয়েও অ্যাকাউন্ট খুলতে না পেরে হতাশ এসব কৃষক। এ ব্যাপারে নির্বিকার ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এছাড়া সরকার ১০টাকায় এ ধরনের অ্যাকাউন্ট খুলে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কৃষকদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা নিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ঘোগাদহ ইউনিয়নের কৃষক সুভাষ চন্দ্র জানান, গত ৪ দিন আগে ব্যাংক থেকে কৃষি অ্যাকাউন্ট খোলার ফরম নিয়েছি। তিন দিন ধরে ঘুরাচ্ছে ফরম জমা নিচ্ছে না। একই কথা জানালেন ওই ইউনিয়নের আহমদ আলী ও দিনেশ। তারা আরো জানান, সরকার ১০ টাকা দিয়ে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার কথা বললেও ব্যাংক ১শ থেকে ২শ টাকা পর্যন্ত নিচ্ছে। প্রতিদিন বাড়ির কাজ ফেলে ব্যাংকে যাতায়াত করতে অনেক ব্যয় হচ্ছে বলেও তারা অভিযোগ করেন। অপরদিকে সোনালী ব্যাংক ও অগ্রণী ব্যাংক ঈদের পর থেকে অ্যাকাউন্ট খোলার কাজ করবে বলে জানিয়েছে।কুড়িগ্রাম জনতা ব্যাংক শাখায় গিয়ে দেখা যায়, মানুষের উপচে পড়া ভিড়। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানালেন গত ১০ জুন থেকে শুরু হয়েছে কৃষকদের অ্যাকাউন্ট খোলার কাজ। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত ব্যাংকের লেজার অনুযায়ী ১৪৪৬৮ থেকে ১৪৭৪৭ নম্বর পর্যন্ত মোট ২৭৯ জনের অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। ব্যাংকের এই ধীরগতির কারণে গ্রাহকরা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে।সদর উপজেলার বেলগাছা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহবুর রহমান জানান, ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে কৃষক তাদের ধানের ন্যায্য দাম পাবে। কিন্তু অ্যাকাউন্ট খুলতে এসে গত এক সপ্তাহ যাবৎ ব্যাংকে আসা-যাওয়া করলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। বিষয়টি সমাধানের জন্য উপজেলা প্রশাসনকে আমরা অনুরোধ জানিয়েছি।এ ব্যাপারে জনতা বাংক কুড়িগ্রাম শাখার এজিএম নবীবুর রহমান জানান, কৃষকদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা নেয়ার প্রশ্নই ওঠে না। মাঝখানে ফরম শেষ হয়ে গিয়েছিল, এখন সে সমস্যা নেই। কৃষকরা ব্যাংকে টাকা জমা রাখছে ভবিষ্যতে স্বাভাবিক লেনদেন করতে পারবে। আমাদের এখানে চাপটা বেশি পড়ে গিয়েছে। ইউনিয়ন ভাগ করে দিলে চাপ কিছুটা কমে যেত।নাজমুল হোসেন/এফএ/এবিএস

Advertisement