অর্থনীতি

৬৩ হাজার কিমি. নতুন বিদ্যুৎ লাইন স্থাপনের উদ্যোগ

দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ বেড়েই চলছে। কিন্তু বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা উন্নত না হওয়ায় পর্যাপ্ত মেগাওয়াট বিদ্যুৎ থাকলেও গ্রাহকের কাছে তা পৌঁছানো যাচ্ছে না। এই অবস্থায় দেশের পশ্চিমাঞ্চলের গ্রাহকদের জন্য সহজে বিদ্যুৎ চাহিদা নিশ্চিত করতে ৬৩ হাজার কিলোমিটার নতুন বিদ্যুৎ লাইন স্থাপনের উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার।এজন্য দেশের ‘পশ্চিমাঞ্চলের (ওয়েস্ট জোন) বিভাগ, জেলা ও উপজেলায় বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার সম্প্রসারণ ও হালনাগাদকরণ (আপগ্রেডেশন)’ নামের একটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে বিদ্যুৎ বিভাগ। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ২৭৮ কোটি ২০ লাখ টাকা। প্রকল্পটি অনুমোদন পেলে ২০২০ সালের মধ্যে বাস্তবায়ন করবে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড।প্রকল্পটির আওতায় এক হাজার ৫৪ দশমিক ২৫ কিলোমিটার ৩৩ কেভি বিতরণ লাইন, ৬২ হাজার কিলোমিটার ১১ কেভি বিতরণ লাইন স্থাপন করা হবে। এছাড়া ৩৩/১১ কেভি ধারণক্ষমতা সম্পন্ন ৬৩টি উপকেন্দ্র এবং এক হাজার ৭২২টি ট্রান্সফরমার স্থাপন করা হবে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পরিকল্পনা কমিশনের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, আগামীকাল (মঙ্গলবার) সকাল ১০টায় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য উঠানো হবে। সভায় সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী এবং একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা।বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, ওজোপাডিকোর অধীনে ৬টি সার্কেল এবং ৪৮টি বিদ্যুৎ বিতরণ দফতর রয়েছে। বর্তমানে এই অঞ্চলের বিতরণ ব্যবস্থায় বিদ্যমান বিতরণ ট্রান্সফরমার ও ৩৩/১১ কেভি উপকেন্দ্রসহ যন্ত্রপাতিগুলো অনেক দিনের পুরনো হওয়ায় তা ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। অনেক ক্ষেত্রেই লাইন ও উপকেন্দ্রসমূহ ওভারলোডেড এবং যন্ত্রপাতিগুলো পুরাতন হয়ে গেছে।এছাড়া পশ্চিমাঞ্চলে বিদ্যুৎ গ্রাহকের সংখ্যা ও চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। প্রতিবছর গড়ে প্রায় ১০-১২ শতাংশ হারে বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে এ অঞ্চলের পুরো বিতরণ ব্যবস্থার পুনর্বাসন, সম্প্রসারণ ও বর্ধিতকরণের প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। এ প্রেক্ষাপটে ওয়েস্ট জোনের বিতরণ ব্যবস্থার পুনর্বাসন, সম্প্রসারণ ও বর্ধিতকরণের জন্য প্রকল্পটি হাতে নিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে দেশের পশ্চিমাঞ্চলের গ্রাহকদের বিদ্যুৎ সংযোগ সহজ হবে। পাশাপাশি পদ্মা সেতু ও সংশ্লিষ্ট এলাকায় অর্থনৈতিক জোন এলাকায় স্থাপিতব্য শিল্প কারখানায় বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ সম্ভব হবে বলে আশা করছে বিদ্যুৎ বিভাগ।যেসব এলাকায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে- ফরিদপুর, রাজাবাড়ি, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, শরিয়তপুর জেলা, ফরিদপুর সদর, মধুখালী সদরপুর, ভাঙ্গা, পংশা, গোয়ালন্দ, রাজবাড়ি সদর, মাদারীপুর সদর, গোপালগঞ্জ সদর এবং শরিয়তপুর সদর।খুলনা, যশোর, নড়াইল, বাগেরহাট, মাগুরা, সাতক্ষীরা, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদাহ জেলা, খুলনা সদর, ফুলতলা, বাগেরহাট সদর, মংলা, যশোর সদর, সাতক্ষীরা সদর, নড়াইল সদর, মাগুরা সদর, ঝিনাইদহ সদর, মেহেরপুর সদর, কুমারখালী, ভেড়ামারা, কুষ্টিয়া সদর, আলমডাঙ্গা, কালিগঞ্জ, কোটচাঁদপুর, চুয়াডাঙ্গা, শৈলকুপা এবং মহেশপুর উপজেলা।বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলা জেলা, বরিশাল সদর, পিরোজপুর সদর, ভান্ডারিয়া, ঝালকাঠি সদর, কাঁঠালিয়া, নলছিটি, পটুয়াখালী সদর, বরগুনা সদর, ভোলা সদর, বোরহানউদ্দিন, চরফ্যাশন এবং মনপুরা উপজেলা।এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প ও শক্তি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সদস্য জুয়েনা আজিজ বলেন, ‘দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার পুনর্বাসন, সম্প্রসারণ ও বর্ধিতকরণে এই প্রকল্পটি সহায়ক ভূমিকা রাখবে। তাই পরিকল্পনা কমিশন প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য একনেকে উপস্থাপনের সুপারিশ করেছি।’এমএ/বিএ/আরআইপি

Advertisement