প্রবাসী আয়ের প্রায় ৭৫ শতাংশ অর্থ ব্যয় হচ্ছে ব্যক্তি খাতে বা ভোগ-বিলাসে। এর মধ্যে বাড়ি-ঘর নির্মাণ, সংস্কার, জমি ক্রয় ও ভোগপণ্য ক্রয়ে সিংহ ভাগ অর্থ ব্যয় হচ্ছে। বিদেশ থেকে বিশাল অংকের অর্থ দেশে আসলেও শিল্প বা উৎপাদন খাতে খুব একটা বিনিয়োগ হচ্ছে না।বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরস্থ এনইসি সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ‘প্রবাস আয়ের বিনিয়োগ সম্পর্কিত জরিপ ২০১৬’ এর প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন অর্থনৈতিক শুমারি-২০১৩ এর প্রকল্প পরিচালক দিলদার হোসেন।জরিপে দেখা যায়, ২০১৫ সালে প্রবাসী আয়ের ৭৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ অর্থ বিনিয়োগ হয়েছে বাড়িঘর/ফ্ল্যাট নির্মাণ ও সংস্কার খাতে। অন্যান্য খাতে ১-৭ শতাংশ অর্থ বিনিয়োগ হয়েছে।তবে প্রবাসী আয় গ্রহণকারী ৫৩ শতাংশ পরিবারই এই অর্থ কোথাও বিনিয়োগ করে না। এর মধ্যে ৪৭ দশমিক ২২ শতাংশ প্রবাস আয় গ্রহণকারী পরিবার বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করেছে। এর মধ্যে বরিশাল বিভাগের সর্বোচ্চ (৬৩ দশমিক ৯ শতাংশ) পরিবার এ বিনিয়োগ করেছে। এরপরের অবস্থানেই রয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগ (৫১ দশমিক ৭৩ শতাংশ) এবং সর্বনিম্ন বিনিয়োগ (৩৮ দশমিক ২০ শতাংশ) রাজশাহী বিভাগে।এছাড়া প্রতিবেদন বলা হয়, ২০১৫ সালে প্রবাসীর আয়ের মধ্যে ৭৬ হাজার ৫৪৬ কোটি টাকা বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে সর্বোচ্চ, পরের অবস্থানে বরিশাল, সিলেট ও চট্টগ্রামের নাম রয়েছে। তবে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে রংপুর বিভাগ সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে।এছাড়া ২০১৫ সালে প্রবাসী আয় গ্রহণকারী পরিবার কর্তৃক গৃহীত প্রবাস আয়ের গড় পরিমাণ ৩ লাখ ২ হাজার ১৮৩ টাকা। এর মধ্যে নগদে গৃহীত হয়েছে গড়ে ২ লাখ ৮৯ হাজার ৪৯৩ টাকা এবং দ্রব্যমূল্য হিসেবে গড়ে ১২ হাজার ৬৯০ টাকা। প্রাপ্ত গড় প্রবাস আয়ের হিসাবে বিভাগসমূহের মধ্যে ঢাকার অবস্থান প্রথম এবং পরের অবস্থানেই রয়েছে সিলেট বিভাগ। অন্যদিকে সর্বনিম্ন গড় প্রবাস আয় খুলনা বিভাগে।প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়, ২০১৫ সালে গৃহীত মোট প্রবাস আয়ের ২৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ জাতীয়ভাবে প্রবাস আয় গ্রহণকারী পরিবার কর্তৃক বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করা হয়েছে। এই বিনিয়োগের হার ঢাকা বিভাগে সর্বোচ্চ (২৭ দশমিক ৩৭ শতাংশ)। এর পরের অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে বরিশাল (২৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ), খুলনা (২৫ দশমিক ৯৩ শতাংশ), চট্টগ্রাম (২৪ দশমিক ৯৬ শতাংশ), সিলেট (২২ দশমিক ৬০ শতাংশ), রাজশাহী (২২ দশমিক ৪১ শতাংশ) এবং সর্বনিম্ন (১৮ দশমিক ৮৫ শতাংশ) রংপুর বিভাগে।এসময় উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব কে এম মোজাম্মেল হক, পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক আব্দুল ওয়াজেদ প্রমুখ।এমএ/এসকেডি/এসএইচএস/আরআইপি
Advertisement