আল্লাহ তাআলা মানুষকে সফরের অবস্থায় রোজা না রাখার সুযোগ দিয়েছেন। এটা আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে বান্দার জন্য এক মহাঅনুগ্রহ। তবে সফরে অস্বাভাবিক কষ্ট না হলে রোজা রাখাই উত্তম। হজরত আছিম রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহুকে সফরকালে রোজা রাখার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেন, ‘যে রোজা রাখবে না সে অবকাশ গ্রহণ করলো। আর যে রোজা রাখল সে উত্তম কাজ করলো। সুতরাং সফর অবস্থায় রোজার কিছু করণীয় সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো-০১. সফরের সময় নিয়ত করে রোজা রাখা শুরু করলে তা আর ভাঙ্গা জায়েয নাই। কেউ ভেঙ্গে ফেললে গুনাহগার হবে। তবে কাফফারা আসবে না। শুধু কাযাই যথেষ্ট। হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘কেউ রোজা রেখে সফরে বের হলে রোজা ভাঙ্গবে না। তবে যদি পিপাসার কারণে প্রাণের আশঙ্কা হয় তাহলে রোজা ভাঙ্গতে পারবে, পরে তা কাযা করবে। ০২. কোনো ব্যক্তি যদি সফরের কারণে রোজা না রাখে; কিন্তু দিন শেষ হওয়ার আগেই সে মুকিম হয়ে যায়। তাহলে দিনের অবশিষ্ট সময় রমজানের মর্যাদা রক্ষার্থে পানাহার থেকে বিরত থাকবে। পরবর্তীতে অবশ্যই এ রোজার কাযা করতে হবে।০৩. প্রতিটি মুসলিমের জন্য সে যেখানে থাকবে সেখানেই তার নামাজ এবং রোজার হুকুম বর্তাবে। তাই রোজাদার যেখানে থাকবে, সে স্থানেই রোজা রাখবে বা ছাড়বে। চাই সে জমিনের উপর থাক বা বিমানে থাক কিংবা জলপথে নৌযানে থাকুক।০৪. সাধারণভাবে মুসাফিরের জন্য সফর অবস্থায় রোজা না রাখাই উত্তম। আর রমজানের সময় সফরের হালতে রোজা রাখা ও না রাখা যদি বরাবর হয় তবে রাখাই উত্তম। আর যদি রোজা রাখা কষ্টকর হয় তবে না রাখাই উত্তম। কিন্তু ‘যদি বেশি কষ্ট হয়, তবে রোজা না রাখা ওয়াজিব এবং পরে তা কাযা করে নিবে।পরিশেষে...বিশ্বনবির ছোট্ট একটি হাদিস দিয়ে শেষ করতে চাই, হজরত আনাস ইবনে মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে সফরে ছিলাম। রোজাদার বেরোজাদরকে এবং বেরোজাদর রোজাদারকে কোনো প্রকার দোষারোপ করেন নাই।’ তাই সফরে কষ্টকর হলে রোজা ভাঙতে কোনো দোষ নেই। সম্ভব হলে রোজা রাখাই উত্তম।আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সফরের সময় অবস্থানুযায়ী রোজার হক আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।এমএমএস/এবিএস
Advertisement