ক্রিকেট পাড়ায় এ মুহূর্তে মুস্তাফিজকে ঘিরে দুটি প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে সবার মনে। তিনি কি ইংলিশ কাউন্টি খেলতে যাবেন? বিসিবি কি তাকে ইংলিশ কাউন্টি খেলার অনুমতি দেবে? আর অনুমতি পেলে সাসেক্সের হয়ে কোন ফরম্যাটে খেলবেন, চার দিনের টুর্নামেন্ট? না টি-টোয়েন্টি আসর? তবে স্থানীয় বিশেষজ্ঞ, বর্তমান ও সাবেক ক্রিকেটারদের মত বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানও মনে প্রাণে চান প্রবল সম্ভাবনার আঁধার মোস্তাফিজ যেন ইংলিশ কাউন্টি খেলেন। ভারতের সাড়া জাগানো টি-টোয়েন্টি আসর আইপিএলের অন্যতম শীর্ষ তারকা সাকিবের আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতার ভাণ্ডার খুবই সমৃদ্ধ। একমাত্র বাংলাদেশি ক্রিকেটার যার আছে ইংলিশ কাউন্টি ( চার দিন ও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট) ক্রিকেটের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়ার বিগ ব্যাশ, ভারতের আইপিএল, শ্রীলঙ্কার সিপিএল, ক্যারিবীয় প্রিমিয়ার লিগ ও নিউজিল্যান্ডের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অংশ নেয়ার অভিজ্ঞতা। এতগুলো দেশের ঘরোয়া ক্রিকেট খেলার অভিজ্ঞতা থাকার পরও সাকিব বিশ্বাস করেন, তরুণ ও সম্ভাবনাময় ক্রিকেটারদের গড়ে ওঠা, পরিণত হওয়া এবং আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা বৃদ্ধিতে ইংলিশ কাউন্টিই সেরা। সাকিবের অনুভব ও উপলব্ধি, ইংলিশ কাউন্টি মানে চারদিনের আসর হচ্ছে টেস্ট ক্রিকেটের স্টেজ রিহার্সেল। ওই আসর খেলতে পারলে মেধা-মনন ও অভিজ্ঞতা অনেক বাড়ে।সোমবার বিকেলে জাগো নিউজের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় ইংলিশ কাউন্টির কার্যকারিতার ভূয়সী প্রশংসা করে সাকিব বারবার বোঝানোর চেষ্টা করেন, মোস্তাফিজের মত সম্ভাবনাময় ও মেধাবী তরুণদের ঠিক মত বিকশিত ও প্রতিষ্ঠায় কাউন্টি ক্রিকেট রাখতে পারে দারুণ ভূমিকা। তিনি মনে করেন, ইংলিশ কাউন্টির চারদিনের আসর খেলতে পারলে মোস্তফিজ অনেক পরিণত হবে। তার মেধা-মননে উন্নতির পাশাপাশি ক্রিকেট বোধও অনেক জাগ্রত হবে। সাকিবের ধারণা, ইংলিশ কাউন্টি হচ্ছে টেস্ট ক্রিকেটের আদর্শতম প্রস্তুতি ক্ষেত্র। একজন ক্রিকেটার ইংলিশ কাউন্টি খেলে কি ধরনের উপকার পেতে পারেন, তার কেমন উন্নতি হতে পারে- এ প্রশ্নের জবাবে সাকিবের সোজা সাপটা কথা,‘টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট নিয়ে আমি কিছু বলবো না। তবে ইংলিশ কাউন্টি মানে চার দিনের টুর্নামেন্ট। একজন সম্ভাবনাময় তরুণের মেধার স্ফুরণ ঘটাতে সর্বোচ্চ কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। সেখানে অনেক কিছু শেখার আছে। মোট কথা, ইংলিশ কাউন্টির চার দিনের আসর হচ্ছে একজন ক্রিকেটারের টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভের আদর্শ জায়গা। অভিজ্ঞতা সঞ্চয়েরও সেরা আসর। `আমি বিশ্বাস করি টেস্ট ক্রিকেটার হতে যেসব অতি আবশ্যকীয় গুণাবলি একান্তই দরকার, যে অভিজ্ঞতা প্রয়োজন তার প্রায় সবটুকুই মেলে ইংলিশ কাউন্টিতে। টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য কিছু বিশেষ অভিজ্ঞতা দরকার ; আমার মনে হয় ইংলিশ কাউন্টিতে সে অভিজ্ঞতার ভাণ্ডার সবচেয়ে সমৃদ্ধ হয়। পৃথিবীর আর কোথাও কোন আসরে খেললে অমন অভিজ্ঞতা হয় না।` শুধু এতটুকু বলেই থামেননি সাকিব। তার ধারণা, ইংলিশ কাউন্টি খেললে শুধু ক্রিকেট মেধারই উন্নতি ঘটে না, অনেক কিছু জানার সঙ্গে শেখাও যায়। ২০১১ সালে ওষ্টারশায়ারের হয়ে চার দিনের আসরে অংশ নেয়া সাকিবের মূল্যায়ন, `একজন ক্রিকেটারের মাঠে ও মাঠের বাইরের কিছু বিষয় জানা, শেখার ও বোঝার থাকে। ইংলিশ কাউন্টি খেলতে পারলে তার অনেকটাই জানা হয়। ক্রিকেটের খুঁটিনাটি বিষয়ে জ্ঞানের ভাণ্ডার সমৃদ্ধ হয়। টেকনিক, স্কিল ও টেম্পারমেন্ট উন্নতির পাশাপাশি ক্রিকেট জ্ঞান ও বুদ্ধি বাড়ে। কাউন্টি নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেন, ইংলিশ কাউন্টি আমার নিজের ক্রিকেট ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করেছে। স্কিল বাড়িছে। কখন কি করণীয় তাও জানা হয়েছে অনেক। তাইতো সাকিবের মুখে এমন কথা, ‘আমার ভাল মনে আছে, কাউন্টি খেলার পর (২০১১ সালে) আমার বোলিং ও ব্যাটিং অনেক উন্নীত করেছিল।’ এআরবি/এমআর/এমএস
Advertisement