অল্প খরচে ভালো লাভ হওয়ায় ঝালকাঠির কৃষকরা ঝুঁকছেন শসা চাষে। জেলার প্রায় ৩০টি গ্রামে শসার চাষ হচ্ছে। আর এর জনপ্রিয়তা রয়েছে দেশজুড়ে।কৃষকরা জানান, এক বিঘা জমিতে শসা চাষ করতে খরচ হয় প্রায় ৩০ হাজার টাকা। আর বিক্রি করা যায় প্রায় লাখ টাকা। বীজ রোপণের এক মাসের মাথায় ফল ধরতে শুরু করে। বিক্রি করা যায় চার মাস ধরে।রমজান উপলক্ষে সহস্রাধিক কৃষক পরিবার এখন শসার ক্ষেতে পরিচর্যা এবং তোলার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে। ট্রাক, ভ্যান ও নৌকা বোঝাই করে শসা যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।ঝালকাঠিতে ১৪৫ হেক্টর জমিতে শসা চাষ করা হয়। সদর উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নের উদচড়া, শিমুলিয়া, শিমুলেশ্বর, হিমানন্দকাঠি, বেতরা, কাপুরকাঠি, জগদীশপুর, শতদশকাঠি, শাখাকাঠি, গৈহার, ডুমুরিয়া, ভীমরুলী এবং গাভারামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের পোষন্ডা, সাওরাকাঠি, রমজানকাঠি, তেরআনা, বালিঘোনা, কাঁচাবালিয়া, বিলকাঁচাবালিয়া, বীলমহল, রামচন্দ্রপুর ও মদনকাঠি গ্রামে কাদিতে চাষ হয় রকমারি সবজির।এছাড়া রাজাপুর, কাঁঠালিয়া ও নলছিটি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বাণিজ্যিক ও পারিবারিকভাবে শসার চাষ করা হয়। সাথী ফসল হিসেবে কৃষকরা বছরের পর বছর নিয়মিত শসা চাষ করে আসছে। শসার বাজারদর ওঠানামা করলেও এখন কেজিপ্রতি ৭০-৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।শুধু সংসারের খরচই নয়; ছেলে-মেয়ের লেখাপড়ার খরচ, আত্মীয়-স্বজন দেখাশোনাসহ সব খরচই করা হয় এ লাভজনক শসা চাষ করে। আর্থিক দিক দিয়েও স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন এসব শসা চাষী।নবগ্রাম বাজারে শসা ক্রয়ের সময় ব্যবসায়ী রেজাউল করিম জানান, গত ১০ বছর ধরে তিনি এই বাজার থেকে শসা কিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাচ্ছেন। দেশীয় ও ভারতীয় ভ্যারাইটিস নামে দু’জাতের শসার চাষ হয় এখানে। চৈত্র মাসের মাঝামাঝি বীজ বপনের পর বৈশাখের মাঝামাঝি থেকে শসার ফলন শুরু হয়।সপ্তাহের তিন দিন ট্রাক, ভ্যান, ট্রলার ও নৌকায় শসা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যায়। মূল্য ভালো পাওয়ায় কৃষকরা শসা চাষে ঝুঁকছে বলে জানায় কৃষি অফিস।সদর উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মণিকা বিশ্বাস জানান, আধুনিক চাষ পদ্ধতি, ভালো বীজ বিতরণসহ মাঠ পর্যায়ে শসা চাষীদের পরামর্শ দেয়া হয়।তিনি জানান, শসা উৎপাদনের তিনটি মৌসুম আছে। প্রথম মৌসুম মাঘ মাসের মাঝামাঝি থেকে জ্যৈষ্ঠের মাঝামাঝি। দ্বিতীয় মৌসুম ভাদ্রের মাঝামাঝি থেকে কার্তিকের মাঝামাঝি। কার্তিকের শেষ সময় থেকে পৌষের মাঝামাঝি পর্যন্ত চলে তৃতীয় মৌসুম। শসা চাষের জন্য দোআঁশ ও এঁটেল-দোআঁশ মাটি উপযোগী। তবে জলাবদ্ধ স্থান হলে চলবে না।এসএস/আরআইপি
Advertisement