পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তার নিজ উদ্যোগে চট্টগ্রামের সাতটি প্রবেশপথসহ ২৬টি স্পর্শকাতর পয়েন্টে ৯৯টি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা লাগিয়েছিলেন। কিন্তু গত ফেব্রুয়ারি মাসে বিলবোর্ডের সাথে নামিয়ে ফেলা হয় ৭৮টি ক্যামেরা। গত রোববার নগরীর জিইসি মোড়ে দুর্বৃত্তের হাতে স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুর খুনের পর পুনরায় স্থাপন করা হচ্ছে ক্যামেরাগুলো। কিন্তু ততক্ষণে সব কিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছেন এসপি বাবুল। সিএমপি সূত্রে জানা গেছে, এখন সিএমপির নিজস্ব অর্থায়নেই পুনরায় স্থাপন করা হচ্ছে এসব ক্যামেরা। এ কাজ শনিবার থেকে শুরু হয়ে রোববারের মধ্যে শেষ হবে। ২০১৪ সালে এসব সিসি ক্যামেরা স্থাপনে উদ্যোগক্তা ছিলেন তৎকালীন উপ-পুলিশ কমিশনার (নগর গোযেন্দা দক্ষিণ) বাবুল আক্তার। গত ফেব্রুয়ারি মাসে যখন সিসি ক্যামেরাগুলো নামিয়ে ফেলা হয় তখন তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন যে নগরীর অপরাধ দমন ও ট্রাফিক নিয়ন্ত্র ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে। তার সেই আশঙ্কা সত্যি হল গত রোববার (৫ জুন) সকালে নগরীর জিইসি মোড়ে দুর্বৃত্তের হাতে স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যার পর। সিসি ক্যামেরা ফুটেজের ‘অভাবে’ খুনিদের ধরতে বেগ পোহাতে হচ্ছে সিএমপিকে। এর পরপরই নামিয়ে ফেলা ক্যামেরা লাগানোর উদ্যোগ নেয় সিএমপি।এসব ক্যামেরা মধ্যে গাড়ির নম্বর সংরক্ষণ করার জন্য পিটিজেড ক্যামেরা, ফেস ডিটেক্টর ক্যামেরা ও ১২০০ টিবিএলসহ মোট তিন ধরণের ক্যামেরা লাগানো হয়েছিল। ডব্লিউ থ্রি এক্সপ্লোরার নামে একটি সংস্থা এসব ক্যামেরা স্থাপন করেছিল। আর স্পট থেকে এসব ক্যামেরা নিয়ন্ত্রণের জন্য নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সাথে ফাইবার অপটিক সংযোগের কাজটি করেছিল বেসরকারি ক্যাবল অপারেটর প্রতিষ্ঠান চিটাগং কমিউনিকেশনস লিমিটেড (সিসিএল)। সিসি ক্যামেরাগুলো পুনঃস্থাপনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) দেবদাস ভট্টাচার্য। শনিবার সন্ধ্যায় তিনি জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।এদিকে সিএমপির সহকারী কমিশনার (আইসিটি,পিআর ও প্রশাসন) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বাবুল আক্তার স্যারের স্ত্রী হত্যার পর সিসি ক্যামেরা ফুটেজের অভাবটি আামরা বুঝতে পেরেছি। সে কারণে অতিরিক্ত কমিশনার মাইনুল স্যারের নির্দেশে আজ বিকেল থেকেই নামিয়ে ফেলা সিসি ক্যামেরাগুলো লাগানোর কাজ শুরু হয়েছে। রোববারের মধ্যে সবগুলো ক্যামেরা লাগিয়ে ফেলা হবে।জানা গেছে, সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাসিরের নির্দেশে নগরীর অবৈধ বিলবোর্ড উচ্ছেদ করা হয়। আর সিএমপির সিসি ক্যামেরাগুলো ছিল এসব অবৈধ বিলবোর্ডের খুঁটির সাথে লাগানো। যার কারণে ক্যামেরাগুলো নামিয়ে ফেলতে হয়। ফলে থমকে যায় নগরীর অপরাধ দমন ও ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম। পুরো নগরীর অপরাধ দমনের উদ্দেশে লাগানো ৯৯টি ক্যামেরার মধ্যে বর্তমানে সচল রয়েছে মাত্র ১৩টি সিসি ক্যামেরা।নগরীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সিসি ক্যামেরা না থাকায় পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু হত্যার পর অপরাধী শনাক্তে ব্যক্তিগত ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সিসি ক্যামেরার ফুটেজের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে সিএমপি। নগরীর জিইসি মোড়ের ওয়েল ফুড ও প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করলেও তা অস্পষ্ট হওয়ায় এখনো মামলার কোন ক্লু উদঘাটন করতে পারেছে না পুলিশ। এসকেডি
Advertisement