খেলাধুলা

সুপার লিগ শুরুর আগেই মোহামেডানের অভিযোগ

ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত নৈপুণ্য আলো ছড়িয়েছে। সময়ের অন্যতম বয়োজ্যেষ্ঠ ক্রিকেটার মাশরাফি মর্তুজা, তুষার ইমরান, মোহাম্মদ শরীফ, শাহরিয়ার নাফীস, মোশারফ রুবেল থেকে শুরু করে যুবা আল আমিন, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, কামরুল ইসলাম রাব্বি ও নাইম ইসলাম জুনিয়রের মত সম্ভাবনাময় তরুণরা আলো ছড়িয়েছেন। ক্রিকেটারদের পারফরমেন্সের গ্রাফ উপরে থাকা মাঠের লড়াই হয়েছে জমজমাট। ঢাকার ক্লাব ক্রিকেট ইতিহাসে সম্ভবত সবচেয়ে হাড্ডহাড্ডি প্রথম লিগ হয়েছে এবার। ১২ দলের ৯ থেকে ১০টি দল শেষ রাউন্ড শুরুর আগে পর্যন্ত ছিল এক কাতারে- তা দেখা গেছে আর কবে? তিন যুগের বেশি সময় ধরে ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত জালাল আহমেদ চৌধুরীও ঠিক মনে করতে পারলেন না, আদৌ এমন জমজমাট লড়াই হয়েছে কি না? ক্রিকেটারদের নৈপুণ্যে মাঠে স্মরণাতীতকালের তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ লড়াই হলেও মাঠের পেছনের ঘটনা প্রবাহ ততটাই দুর্গন্ধ ছড়িয়েছে।  মাঠের বাইরে নানা অনিয়ম, পক্ষপাতদুষ্ট আম্পায়ারিং, ফিকশ্চার ও মাঠ বরাদ্দে কোন কোন বিশেষ দলকে বাড়তি সুযোগ-সুবিধা দেয়ার ঘটনার অভিযোগের কালো দাগ এবারের লিগের গায়ে রীতিমত লেগেছে। লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ, ভিক্টোরিয়া, কলাবাগান ক্রীড়া চক্র আনুষ্ঠানিকভাবেই অভিযোগ তুলেছে। আয়োজক সিসিডিম এবং কয়েকজন আম্পায়ার রীতিমত খলনায়ক বনে গেছেন। আয়োজক-ব্যবস্থাপক ও আম্পায়ারদের বিরুদ্ধে বিমাতাসুলভ আচরণ, কয়েকটি বিশেষ দলকে নানারকম সুবিধা প্রদানের সুষ্পষ্ট অভিযোগে ক্রিকেটপাড়া সরব। প্রিমিয়ার লিগে পক্ষপাতদুষ্ট আম্পায়ারিং এবং হাতেগোনা দু একটি দলকে ফিকশ্চার ও মাঠ বরাদ্দে বাড়তি সুবিধা দেয়ার ঢালাও অভিযোগটি এখন দেশের ক্রীড়াঙ্গনের আলোচিত ইস্যু। খোদ বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও শেষ পর্যন্ত সে সব অভিযোগ কানে নিতে বাধ্য হয়েছেন। তিনি অভিযোগগুলোর সত্যতা প্রমাণে তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন। বোর্ড তথা দেশের ক্রিকেটের অভিভাবক অনিয়মত ও পক্ষপতের তদন্তর আশ্বাস দিলেও তা বন্ধের কোনো লক্ষ্মণ নেই। বরং সুপার লিগ শুরুর আগে নতুন করে অভিযোগ উঠেছে। এবার অভিযোগকারী দল ঢাকা মোহামেডান লিমিটেড। ফিকশ্চার ও ভেন্যু নির্ধারণে সিসিডিএমের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য অভিযোগ মোহামেডানের। ঐতিহ্যবাহী সাদা-কালো শিবিরের এবারের ক্রিকেট কো অর্ডিনেটর জিয়াউর রহমান তপু জাগো নিউজকে জানান, ‘আমরা সুপার লিগ শুরুর আগেই ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছি।’ তার দাবি আবাহনী লিমিটেডকে মাঠ বরাদ্দে বাড়তি সুবিধা দেয়া হচ্ছে। বিষয়টির ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে জিয়ারউর রহমান তপু বলেন, ‘আবাহনী প্রথম লিগে শেষ তিনটি ম্যাচ খেলেছে বিকেএসপিতে। আকাশী-হলুদ শিবিরের সুপার লিগের প্রথম দুই ম্যাচও ওই মাঠে। সবচেয়ে বিস্ময়কর হলো, দেশের দুই শীর্ষ জনপ্রিয় দল এবং এবারের লিগে অন্যতম শিরোপা দাবিদার মোহামেডান-আবাহনী ম্যাচও বিকেএসপিতে! প্রসঙ্গত, আগামী ১৫ জুন দুই চির প্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী-মোহামেডান সুপার লিগের দ্বৈরথ অনুষ্ঠিত হবে বিকেএসপিতে। তার আগে ১২ জুন প্রাইম দোলেশ্বরের বিরুদ্ধে আবাহনীর সুপার লিগের প্রথম ম্যাচও সাভারের ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠটিতে। মোহামেডান ক্রিকেট কো-অর্ডিনেটর বেশ ক্ষোভের সঙ্গে অভিযোগ করেন, ‘কেন আবাহনী-মোহোমেডান বিগ ম্যাচ মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে হবে না? একান্তই যদি ওই মাঠে দেয়া সম্ভব না হয়, তাহলে অন্তত ফতুল্লার ওসমান আলী স্টেডিয়ামেও তো দেয়া যেত! যে ম্যাচের দিনে দর্শক, হাজারো সমর্থক ও অনুরাগীর চোখ স্থির- সেটা সাভারে বিকেএসপিতে আয়োজনের যথার্থতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তপু। তিনি জানিয়েছেন, মোহামেডান-আবাহনী খেলার ভেন্যু বদলের দাবিতে রোববার সকালে এ বিষয়ে মোহামেডান আনুষ্ঠানিক অভিযোগ তুলে বোর্ড ও সিসিডিএমের কাছে চিঠি দেবে।  এদিকে যার ওপর মাঠ বরাদ্দর দায়িত্ব, সেই আমিন খানের দাবি, ‘কোনো বিশেষ দলকে ফেবার করার প্রশ্নই আসে না। পর্যায়ক্রমে ছয় দলকেই ঘুরে ফিরে শের-ই বাংলা, ফতুল্লা ও বিকেএসপিতে খেলতে হবে।’ কিন্তু আবাহনীতো, প্রথম লিগের শেষ তিন রাউন্ডও বিকেএসপিতে খেলেছে, আবার সুপার লিগে প্রথম দুই রাউন্ডও একই মাঠে। বিষয়টি একটু অস্বাভাবিক ঠেকছে না? সিসিডিএম কো-অর্ডিনেটর মানতে না চাইলেও সাধারণ ক্রিকেট অনুরাগীদের কথা। বিকেএসপিতে খেলা মানেই তুলনামূলক কম দর্শকের উপস্থিতি। মিডিয়ার নজর ও খবরদারিও থাকবে তুলনামূলক কম। আম্পায়ারদের পক্ষপাতদুষ্ট সিদ্ধান্ত দেবার যে সেটাই শ্রেষ্ঠ মঞ্চ! এআরবি/আইএইচএস/এবিএস/এসকেডি

Advertisement