দেশজুড়ে

রমজানে বেড়েছে মুড়ি শ্রমিকের ব্যস্ততা

রমজানে মুড়ির চাহিদা যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে, সেই সঙ্গে বেড়েছে শ্রমিকদের ব্যস্ততা। কেউ মুড়ি প্যাকেটে তুলছেন, কেউ ওজন করছেন, কেউ প্যাকেটের মুখ তাপ দিয়ে তা বন্ধ করছেন আবার কেউ প্যাকেটগুলো দেখছেন কোনো সমস্যা আছে কিনা।সরেজমিনে শনিবার নওগাঁ বিসিক শিল্পনগরী এলাকায় শোভা চিড়া ও মুড়ি মিলসে গিয়ে এমন চিত্রই দেখা গেল। এ কারখানায় ২৫ জন মহিলাসহ প্রায় ৩০ জন শ্রমিক কাজ করেন। বেতন কম, ধৈর্য্য ও যত্ন সহকারে কাজ করেন বলে মহিলাদের সংখ্যাই বেশি।শ্রমিক বিলকিস জানান, সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনি ওজনের কাজ করেন। রোজার মাস হওয়ায় আগের তুলনায়  ব্যস্ততা বেড়েছে। আগে প্রতি সপ্তাহে ৪০০/৫০০ টাকা পেলেও এখন ৭০০/৮০০ টাকা পারিশ্রমিক পেয়ে থাকেন তিনি। আর এ কাজ করেই এক মেয়েকে নিয়ে সংসার চালান। এছাড়া শ্রমিক লাভলি, সাবানা, মাহমুদা, কুলসুম, জোসনা সবারই একই রকম ব্যস্ত সময় পার হচ্ছে। তাদের সবার বাড়ি বিসিক শিল্পনগরীর আশপাশেই। মুড়ি কারখানায় কাজ করে যা আয় হয় তা সংসারের কাজে ব্যয় করেন।টিম লিডার মনোয়ারা জানান, প্রায় ১৬/১৭ বছর যাবৎ এ কারখানায় কাজ করছেন। অন্য শ্রমিকদের তুলনায় তার পারিশ্রমিক ১শ টাকা বেশি। কে কী করছেন তা তদারকি করাই তার কাজ। এছাড়া তিনি মুড়ির প্যাকেটগুলো গুছিয়ে রাখা ও ওজন চেক করে থাকেন।ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ভূপেন জানান, তিনি সদর উপজেলার দুবলহাটি থেকে মুড়ি নিতে এসেছেন। রমজানের সময় ক্রেতাদের মুড়ির চাহিদা বেশি থাকে। আগে দিনে ১০/১২ কেজি মুড়ি বিক্রি হলেও এখন ২৫/৩০ কেজি বিক্রি হয়। তবে রমজানে মুড়ির দাম একটু বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতি কেজি মুড়ি ৪৫/৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তিনি।নওগাঁ বিসিক শিল্পনগরীতে অবস্থিত শোভা চিড়া ও মুড়ি মিলস এর মালিক বরুন দাস জানান, চাউলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় মুড়ির দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। আগে ৫০ কেজি ওজনের বিরি আর-১৬ ও স্বর্ণা ধানের চাউলের বস্তা ১ হাজার ১শ টাকা ছিল। এখন প্রতি বস্তার দাম ৪শ টাকা বেড়ে ১ হাজার ৫শ টাকা হয়েছে।বরুন দাস জানান, আগে দিনে ৫০ কেজি ওজনের ৪০/৪৫ বস্তা মুড়ি তৈরি করা হতো। এখন রমজানের সময় ১১০/১২০ বস্তা মুড়ি তৈরি হচ্ছে। এ মুড়ি নওগাঁ জেলার সর্বত্র সরবরাহ করা হয়। মুড়ির চাহিদাও বেড়েছে ব্যাপক। তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিসিক শিল্পনগরীতে বিদ্যুতের সমস্যাটা প্রকট। একটু ঝড় বৃষ্টি হলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। শ্রমিকদের বসে বসে বেতন দিতে হয়। বিদ্যুৎ না থাকায় প্রয়োজনের তুলনায় মুড়ি উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে না।এফএ/আরআইপি

Advertisement