জাতীয়

অগ্নিদগ্ধ হওয়ার বছর

২০১৪ সালটি ছিল আগুনে ঝঁলসে মৃত্যুবরণ করার বছর। এ বছর দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় বিএনপি-জামায়াতের পেট্রোল বোমা হামলায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন অনেকেই।বছরের শুরুতেই ২ জানুয়ারি গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুর এলাকায় একটি গরুবাহী ট্রাকে পেট্রোল বোমা হামলা চালায় বিএনপির অবরোধকারীরা। এতে অগ্নিদগ্ধ হন চালকসহ দুই সবজি ব্যবসায়ি। এ ঘটনায় তাদের ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেখানে ৫ জানুয়ারি ভোর ৫টায় ট্রাক চালক নূর জামান (২৬) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।বছরের শেষের দিকে গত ২৮ ডিসেম্বর বিএনপির ডাকা হরতালের আগের দিন রাজধানীর মিরপুর কাজীপাড়া এলাকায় দুর্বৃত্তদের পেট্রোল বোমায় একই পরিবারের তিনজন অগ্নিদগ্ধ হয়। অগ্নিদগ্ধরা হলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র তানজিমুল হক (অয়ন), তার মা শামসুন নাহার বেগম ও বোন সালমা আনিকা। তারা বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের ৬০২ নম্বর কেবিনে চিকিৎসাধীন।৩ জানুয়ারি মাগুরা সদর উপজেলার পারনান্দুয়ালী এলাকায় রাত পৌনে ১০টার দিকে দুটি ট্রাকে পেট্রোল বোমার হামলা চালায় অবরোধকারীরা। এসময় ট্রাক দুটির ড্রাইভার ফারুক হোসেন ও মোসলেম অগ্নিদগ্ধ হন।একই দিন চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাটে অবরোধকারীদের পেট্রোল বোমার আগুনে একটি ফলের ট্রাকের চালক মো. আরিফ ও হেলপার আজিজুর রহমান অগ্নিদগ্ধ হন।ওই দিন দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার হিলিতে পেঁয়াজবাহী ট্রাকে পেট্রোল বোমা ছুড়ে দুর্বৃত্তরা। এতে অগ্নিদগ্ধ হয় শাহনেওয়াজ (৩২) ও আদিনুর রহমানের মৃত্যু হয়। আহত হন ট্রাকচালক ইউসুফ (৪৫), যাত্রী সুমন (৩০) এবং শাহাজাহান (২২) ।একই দিন সকাল সাড়ে ৬টায় রাজধানীর রূপসী বাংলা হোটেলের সামনে একটি যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোল বোমা  ছুড়ে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় বাসচালক বাবুল মিয়া ( ৪৮), বীমাকর্মী শাহিনা আক্তার রূপসা (৬৪) ও ফল ব্যবসায়ী ফরিদ মিয়া (৪৮) অগ্নিদগ্ধ হন।৪ জানুয়ারি ঝালকাঠি সদর উপজেলার বিনয়কাঠী এলাকার বিনয়কাঠী-বরিশাল সড়কে একটি লেগুনায় পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করলে চালক মোস্তফা হাওলাদার দগ্ধ হন। পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।ওই দিন দুপরে ফেনী সেন্টাল হাইস্কুলের সামনে ১৮ দলীয় জোটের পিকেটাররা সিএনজিতে আগুন দিলে মারাত্মক দগ্ধ হন সাহাব উদ্দিন। তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হলে ৯ জানুয়ারি ভোরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।৭ জানুয়ারি রাত পৌনে ৯টার দিকে চট্টগ্রাম মহানগরীতে হরতাল ও অবরোধ সমর্থকদের পেট্রলবোমা হামলায় টেম্পুচালক  মিতুল (২৫) মারাত্মকভাবে অগ্নিদগ্ধ হন। এতে মিতুলের শরীরের প্রায় ৯০ শতাংশই পুড়ে যায়।একই দিন সিরাজগঞ্জের বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতুর পশ্চিম সংযোগ সড়কের পাঁচলিয়া বাজারে দুর্বৃত্তদের ছোড়া পেট্রলবোমায় একজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছিলেন একজন।

Advertisement