বরেণ্য অভিনেতা ও সংস্কৃতিকর্মী রাইসুল ইসলাম আসাদের মা রইসা খাতুন মৃত্যুবরণ করেছেন। আজ দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে তিনি রাজধানীর পুরানা পল্টন লাইনে নিজ বাসগৃহেই শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। প্রিয় সহকর্মী ও অভিনেতা আসাদের মাতৃবিয়োগের খবর পেয়ে তার মাকে শেষ দেখা দেখতে যাচ্ছেন সংস্কৃতি অঙ্গনের মানুষেরা। তাদের মধ্যে আছেন মঞ্চকুসুম খ্যাত নাট্য ব্যক্তিত্ব শিমুল ইউসূফ। তিনি বললেন, ‘একবুক ইতিহাস নিয়ে চলে গেলেন আমার শিক্ষক যিনি আমাকে তার পাশে রেখে নিজ হাতে শিখিয়ে ছিলেন লাশের গোসল করানো, কাফন পরানো। বিয়ের পর থেকেই দেখেছিলাম পাশাপাশি দুই বাড়ির মধ্যে কোনো দেয়াল ছিলনা। ও বাড়ির মানুষ এসে এ বাড়িতে খাচ্ছে ঘুমাচ্ছে। এ বাড়ির মানুষ ও বাড়িতে। তিনি ছিলেন আমার আপা। আজ তাকে বুঝি আমাকেই শেষ যাত্রার জন্য বসন পড়িয়ে দিতে হবে!’রইসা খাতুন দীর্ঘদিন বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। বাদ মাগরিব পল্টনের বাসা সংলগ্ন মসজিদে জানাজা সম্পন্ন হবে।প্রসঙ্গত, রাজধানীর পুরানা পল্টন লাইন সংলগ্ন বাড়িতে রাইসুল ইসলাম আসাদের জন্ম। বাবা আখতারুজ্জামান ও মা রয়িছা খাতুন। সেখানেই বেড় ওঠেছেন আসাদ ও তার আরো চার ভাই এবং তিন বোন। ১৯৭২ সালে মঞ্চ ও টেলিভিশনে রাইসুল ইসলাম আসাদের অভিনয়ে যাত্রা শুরু হয়। তবে চলচ্চিত্রে তার সম্পৃক্ততা ঘটে ১৯৭৩ সালে খান আতাউর রহমানের ‘আবার তোরা মানুষ হ’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্যদিয়ে। এরপর ১৯৮০ সালে সালাহ উদ্দীন জাকীর ‘ঘুড্ডি’, ১৯৮১ সালে সৈয়দ হাসান ইমামের ‘লাল সবুজের পালা’, ১৯৮৪ সালে কাজল আরেফিনের ‘সুরুজ মিঞা’সহ ‘মানে না মানা’, ‘নয়নের আলো’, ‘নতুন বউ’, ‘রাজবাড়ি’, ‘মীমাংসা’, ‘আয়না বিবির পালা’, ‘পদ্মা নদীর মাঝি’, ‘অন্য জীবন’, ‘লালন’, ‘লালসালু’, ‘ঘানি’, ‘মৃত্তিকা মায়া’সহ ৫০টির অধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করে মুগ্ধ করেছেন এদেশের সিনেমাপ্রেমী দর্শককে। চলচ্চিত্রে অভিনয় করে এখন পর্যন্ত তিনি ছয়বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন। ‘পদ্মা নদীর মাঝি’, ‘অন্য জীবন’, ‘লালসালু’, ‘দুখাই’, ‘ঘানি’ ও ‘মৃত্তিকামায়া’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে তিনি এই সম্মাননা লাভ করেন।এলএ/আরআইপি
Advertisement