মুনমুন হক একইসঙ্গে যুক্ত আছেন বহু পেশায়। ২০১৩ সাল থেকে যুক্ত আছেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সিনিয়র লেকচারার হিসেবে। তবে আমরা তাকে বেশি চিনি নিউজ প্রেজেন্টার হিসেবেই। এটিএন বাংলার সঙ্গে আছেন ২০০৭ সাল থেকে। এছাড়াও তিনি একজন নিউট্রিশনিস্ট। তার কাজের ছোঁয়া লেগেছে ইগলু ফুডস লিমিটেড এবং আব্দুল মোনেম গ্রুপেও। বর্তমানে কনসালটেন্ট নিউট্রিশনিস্ট অ্যান্ড ডায়েটেশিয়ান হিসেবে আছেন ইন্টারন্যাশনাল হসপিটাল অ্যান্ড অনলাইন মেডিকেয়ারে। একটি জাতীয় দৈনিকে পুষ্টি বিষয়ে নিয়মিত লিখছেন। মুনমুন হকের বহুমুখী এমনসব কাজ আর তরুণদের অনুপ্রেরণা দিতে জাগো জবসের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন গোলাম রাব্বী। জাগো জবস : শুরুতেই আপনার পড়াশোনা নিয়ে যদি কিছু বলতেন-মুনমুন হক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞানে স্নাতকসহ স্নাতকোত্তর করেছি। সম্প্রতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করার জন্য ভর্তি হয়েছি। এছাড়াও কাজের প্রয়োজনে প্রফেশনাল নানা প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামে অংশ নিয়েছি, এখনো নিচ্ছি।জাগো জবস : আপনার কাজের শুরুর অভিজ্ঞতাটা যদি শেয়ার করতেন-মুনমুন হক : শুরুটা গান দিয়ে; এটিএন বাংলায় লাইভ কনসার্টে গান গাইতে এসেছিলাম। তখন জানতে পারলাম, এখানে নিউজ প্রেজেন্টার নিয়োগ দেয়া হবে। অডিশন দিয়ে ২০০৭ সালে নিউজ প্রেজেন্টার হিসেবে জয়েন করলাম। সেই থেকে এখানেই আছি। সংবাদ উপস্থাপনটা আমার প্যাশন।জাগো জবস : কার অনুপ্রেরণায় আপনার এই মিডিয়ায় কাজ করা?মুনমুন হক : ছোটবেলা থেকেই আমি খুব সংস্কৃতিমনা ছিলাম। গান গাইতে ভীষণ ভালো লাগত। বিতর্কও করেছি। বিটিভির সংবাদ উপস্থাপকদের দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছি; কেমন করে তারা না দেখে খবর পড়েন, এটা আমার কাছে এক অবাক বিস্ময় ছিল। তখন নিজে নিজে খবরের কাগজ পড়ে নিউজ পড়া প্র্যাকটিস করতাম। আমার বাবা-মাও এ বিষয়টিতে অনেক সাপোর্টিভ ছিলেন।জাগো জবস : প্রেজেন্টার হওয়ার অভিজ্ঞতা বা এ বিষয়ে আপনার কোনো প্রশিক্ষণ রয়েছে?মুনমুন হক : আমি এটিএন বাংলায় যখন নিউজ পড়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করি, তখন ওখানেই ট্রেনিং করানো হয়েছিলো। আর ওই ট্রেনিং যে আমাকে নিউজ প্রেজেন্টার বানিয়েছে, তা কিন্তু নয়। এই প্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া নিউজ প্রেজেন্টেশনের শিক্ষা কিন্তু আমার ব্যক্তিগত জীবনকেও উন্নত করেছে। জাগো জবস : যারা প্রেজেন্টার হতে চান, তাদের জন্য আপনার পরামর্শ কি?মুনমুন হক : যারা প্রেজেন্টার হতে চান, তাদের অবশ্যই খবর দেখতে হবে, বুঝতে হবে, ট্রেনিং-ও নিতে হবে। ধৈর্য্য ধরে লেগে থাকতে হবে। তবেই সাফল্য আসবে।জাগো জবস : ফ্যানদের কমিউনিকেশন্স কেমন উপভোগ করছেন?মুনমুন হক : গণমাধ্যমে যুক্ত হওয়ার আগে ব্যক্তি মুনমুন হককে হয়তো কয়েকশ’ লোকে চিনত। যুক্ত হওয়ার পর সারা দেশের কোটি মানুষ চেনে। ভাবতেই ভালো লাগে। শপিং মলে গেলে অনেকেই চিনে ফেলে, সেলফি তুলতে চায়। কোনো অনুষ্ঠানে গেলে সবাই আলাদা সম্মান করে। তবে মিডিয়ার মানুষদের সবাই একটু আলদাই ভাবে, ব্যক্তিগত ধ্যান-ধারণা, উপলব্ধি এসব প্রকাশ করা যায় না। এটা একটা সমস্যা। ফ্যানদের কমিউনিকেশন্স বেশ উপভোগ করি। ফেসবুকে ব্যাপক সাড়া পাই। ইনবক্সে খবরের ছবি তুলে অনেকে পাঠায়। কাজের স্বীকৃতি পেলে মনটা ভরে যায়। সত্যি কথা বলতে কী- সংবাদ উপস্থাপন কিন্তু একটি সেবামূলক পেশা। এর সাথে যুক্ত হতে পেরে গর্বিত আমি।জাগো জবস : বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে নিজেকে কীভাবে দেখেন? মুনমুন হক : শিক্ষকতাই আমার মূল পেশা। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে সিনিয়র লেকচারার হিসেবে আছি। এ কাজটিও আমি গর্বের সাথে উপভোগ করি। আমার সব সময় ইচ্ছে ছিলো, যে বিষয়ে লেখাপড়া করেছি সেই বিষয়ে পাইওনিয়ার হবো। ছাত্রছাত্রীরা সম্মান করে- ভালোবাসে, খুব ভালো লাগে। মানুষ গড়ায় অবদান রাখতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে হয়। জাগো জবস : ক্যারিয়ার নিয়ে আপনার পরিকল্পনার কথা যদি বলতেন-মুনমুন হক : মিডিয়ায় কাজ করাটা আমার শখ বা নেশা বলতে পারেন। আর শিক্ষকতা আমার পেশা। দুটোই খুব গুরুত্বপূর্ণ আমার কাছে। যতদিন ভালো লাগা কাজ করবে, দর্শক বা শিক্ষার্থীরা আমাকে চাইবে, ততদিন দু’টোই চালিয়ে যাব। দেশের মানুষের কাজে লাগে এমন কিছু করতে চাই। জাগো জবস : সফলতা বলতে আপনি কী বোঝেন?মুনমুন হক : সফলতা বলতে আশা অনুযায়ী প্রাপ্তিকেই বুঝি। জাগো জবস : ক্যারিয়ারে নেতৃত্বস্থানীয় পর্যায়ে যারা যেতে চান, তাদের উদ্দেশে আপনার কোনো পরামর্শ-মুনমুন হক : জীবন বা ক্যারিয়ারে নেতৃত্বস্থানীয় পর্যায়ে যারা যেতে চান, তাদের জন্য বলব- ধৈর্য্য, অধ্যাবসায় এবং বিনয়ের সাথে কাজ করুন। সাফল্য আসবেই।জাগো জবস : আপনার মূল্যবান সময় দেয়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।মুনমুন হক : আপনাকে ও জাগো জবসকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এসইউ/এবিএস
Advertisement