নওগাঁয় মালটা ফল চাষে অপার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। চাকরির পাশাপাশি শখের বসে আত্রাই উপজেলার ভবানীপুর বাজার এলাকার আবু বক্কর সিদ্দিক নিজ বাড়িতে শুরু করেন বিভিন্ন জাতের ফল চাষ। ফল চাষে তিনি ব্যাপক সফল হয়েছেন। এতে একদিকে যেমন বাড়ির সকলের পুষ্টির চাহিদা মেটে অন্যদিকে প্রতি বছর প্রায় ২০ হাজার টাকার বেশি ফল বাজারেও বিক্রি করে থাকেন। অন্যান্য ফলের পাশাপাশি ২০১২ সালে উপজেলার মিরাপুর একটি নার্সারি থেকে একটি মালটা ফলের গাছ এনে লাগান আবু বক্কর সিদ্দিক। চলতি বছর ওই গাছে প্রায় ৮০/৮৫টি মালটা ফল ধরেছে। প্রায় প্রতিদিনই স্থানীয়রা এই ফল দেখতে আসেন। এলাকাবাসীদেরও এই ফল চাষে আগ্রহ দেখা দিয়েছে। জানা গেছে, আবু বক্কর সিদ্দিক বাংলাদেশ রেলওয়ে বিভাগে দিনাজপুরের হিলিতে কর্মরত আছেন। ফল গাছের প্রতি ভালোবাসা ও নিজ প্রয়োজনে চাকরির পাশাপাশি ২০০৪ সালের দিকে বাড়ির ২৭ শতক জায়গায় প্রথমে উন্নত জাতের দেশীয় আম, লিচু, জাম, আমড়া, কামরাঙ্গা, পেঁপে, বেদেনা, পেয়ারা, কাঁঠাল, কলার গাছ লাগান। কয়েক বছরের মধ্যে এই গাছগুলো থেকে ফলও পেতে শুরু করেন। এমতাবস্তায় বিভিন্ন মিডিয়াতে ফল চাষের সংবাদ দেখে ও পড়ে ২০১০ সালের দিকে, আপেল, আঙ্গুর, কমলা, চেরি ফল, জামরুল, গোলাপজাম, সফেটা, পাম ফলের গাছ লাগান। এর মধ্যে একটি মালটা গাছে প্রায় ৮০/৮৫টি মালটা ফল ধরেছে। এ ছাড়াও তার বাগানে নারিকেল, সুপারি, মসলা গাছসহ প্রায় অর্ধশত ফলের গাছ রয়েছে।আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, প্রথম গাছে মালটা ফল ধরায় পর থেকে নওগাঁয় এই ফল চাষের ব্যাপক সম্ভবনা দেখা দিয়েছে। প্রতিদিনই স্থানীয়রা এই ফল দেখতে আসেন এবং কিভাবে চাষ করা যায় এই পরামর্শ নিয়ে যান। তিনি আরো জানান, আম, লিচু, জাম, আমড়া, কামরাঙ্গা, পেঁপে, পেয়ারা, কাঁঠাল ফলের বাড়ির চাহিদা মিটিয়েও প্রতি বছর প্রায় ২০ হাজার টাকার বিক্রি করা সম্ভব হয়। এছাড়াও আগামী দুই/এক বছরের মধ্যে অন্যান্য ফল চাষে সাফল্য দেখা দিবে বলে আশা ব্যক্ত করেন তিনি। ভবানীপুর ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শফি উদ্দিন আহম্মেদ জানান, আমাদের এলাকায় এটাই প্রথম মালটা চাষ। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পক্ষ থেকে সার্বিক পরামর্শ দিয়ে আসছি। আত্রাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ড. কেএম কাউছার বলেন, আবু বক্কর সিদ্দিক মালটা চাষে সাফল্য হওয়ায় নওগাঁ অঞ্চলে মালটা চাষের অপার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। আশা করছি আবু বক্কর সিদ্দিকের সাফল্য দেখে এলাকার মানুষ আরো উদ্বুদ্ধ হবে। এসব ফলমূল চাষে এগিয়ে আসলে দেশে চাহিদা মিটানো সম্ভব হবে। আব্বাস আলী/এআরএ/পিআর
Advertisement