অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জাতীয় সংসদে আজ ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব পেশ করবেন। নানা দিক থেকেই এবারের বাজেট নিয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে। গত বছরের চেয়ে এবারের বাজেট আকারে বড়। শুধু আকারেই বড় নয় সঙ্গত কারণেই এর রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রাও বাড়ছে। ব্যয়ের খাত বাড়লে আয়ের উৎসও বাড়াতে হবে। তবে বাজেট যেন জনসাধারণের জন্য বোঝা না হয়ে তাদের কল্যাণকে প্রাধান্য দিয়ে হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। নতুন অর্থবছরের জন্য তিন লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাবনা পেশ করবেন অর্থমন্ত্রী। প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে দুই লাখ ৪২ হাজার ৭৫২ কোটি টাকা। ব্যয়ের ক্ষেত্রে থাকা ৯৭ হাজার ৮৫৩ কোটি টাকার ঘাটতি মেটানো হবে ব্যাংক খাত, সঞ্চয়পত্র ও বৈদেশিক খাত থেকে ঋণ নিয়ে। সম্ভাব্য উন্নয়ন ব্যয় এক লাখ ১৭ হাজার কোটি টাকার ওপরে। অনুন্নয়ন ব্যয় দুই লাখ ১৫ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকা। এবার বাজেটের আগে সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয়েছে ভ্যাট প্রসঙ্গ। এ নিয়ে ব্যবসায়ীরা সরকারের কাছে তাদের মতামতও তুলে ধরেছে। বাজেট কেবল একটি দেশের এক বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব নয়। একটি রাজনৈতিক সরকারের দর্শন ও অর্থনৈতিক নীতি প্রতিফলিত হয় বাজেটের মধ্য দিয়ে। সেবা থেকে উন্নয়ন, বিভিন্ন খাতে রাষ্ট্রের নাগরিকরা যেসব ক্ষেত্রে যা পেতে চান বা রাষ্ট্র যে সেবা নিশ্চিত করতে চায়, তা এই বাজেটের মধ্য দিয়ে নির্ধারিত হয়। ফলে অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ অন্য যে কোনো ধরনের উন্নয়নও নির্ভর করে বাজেটের ওপর। বাজেট এলে মানুষের মধ্যে যেমন আশার সঞ্চার হয় তেমনি দেখা দেয় দুর্ভাবনাও। জিনিসপত্রের দাম বাড়া থেকে শুরু করে বাড়িভাড়া ও জীবনযাত্রার সার্বিক ব্যয় আরো বাড়লো কিনা এ নিয়ে চিন্তায় থাকেন তারা। এছাড়া করের বোঝা কতোটা চাপলো, বেকারত্ব দূর করা থেকে শুরু করে নাগরিক সুযোগ সুবিধা কতোটা নিশ্চিত হলো-এ বিষয়গুলোও ভাবনায় থাকে। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী সৃষ্টির প্রয়াস কতোটা থাকছে বা ব্যাংকের সুদের পরিমাণ কমছে কিনা-এসবও ভাবনায় থাকে। পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরাও তাকিয়ে থাকেন বাজেটের দিকে। এক্ষেত্রে কী প্রণোদনা থাকছে সেটিও দেখার বিষয়। সবদিক মিলিয়ে সরকারের কাজ হচ্ছে জনসাধারণের আর্থ-সামাজিক সকল ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এবারের বাজেটে জনপ্রত্যাশা পূরণ হবে-এমনটিই দেখতে চায় দেশের মানুষ্।এইচআর/এবিএস
Advertisement