সীমান্তে হত্যা বন্ধে বিজিবি-বিএসএফ যৌথভাবে কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স বা ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) ডিজি শ্রী দেবেন্দ্র কুমার পাঠক। সোমবার বিজিবির সদর দফতরে বিজিবি-বিএসএফ এর মহাপরিচালক পর্যায়ে চার দিনের বৈঠক শেষে তিনি এ কথা জানান।বিএসএফ এর ডিজি শ্রী দেবেন্দ্র কুমার পাঠক বলেন, সীমান্তে হত্যা বন্ধে যৌথভাবে কাজ করে যাচ্ছে বিজিবি-বিএসএফ। তবে সীমান্তে হত্যা শূণ্যের কোঠায় নামিয়ে আনার ক্ষেত্রে কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। তবে কি কি কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না এবং কোন কোন সীমান্ত এলাকায় এ হত্যা ঘটনা বেশি হচ্ছে তা শনাক্ত করে ওইসব এলাকায় বিশেষ নজরদারী বাড়নো হচ্ছে। এজন্য বিজিবি ও বিএসএফ যৌথভাবে কাজ করে যাচ্ছে।সম্মেলেনে বিজিবি মহাপরিচালক সংবাদ আজিজ আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে ভারতীয় কোন বিচ্ছিন্নতাবাদী দল কাজ করছে না। বিএসএফ ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সীমান্ত সম্মেলনে বিবিজি’র সহায়তা চেয়েছিল। বিজিবি তাদের জানিয়েছে বাংলাদেশে কোন ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী নেই।কোন দেশে কেউ ‘অপ্রীতিকর’ পরিস্থিতি তৈরি করলে তাদের ছাড় দেয়া হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সীমান্ত সম্মেলনে উভয় দেশই আবারো সীমান্তে হত্যা শূণ্যে নামিয়ে আনার জন্য প্রতিশ্রুতি বদ্ধ হয়েছে।বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, “এখনও সীমান্তে হত্যা শূণ্যে আনা সম্ভব হয়নি বলে প্রত্যেক সম্মেলনেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। মৃত্যুর বিষয়টিই এক নম্বর এজেন্ডা। তা শুণ্যে নামিয়ে আনতে জোর প্রচেষ্টা করা হচ্ছে।”তিনি আরও বলেন, “সীমান্তের যেসব এলাকায় মানুষ হত্যার শিকার হয় সেইসব জায়গা চিহ্নিত করার পরিকল্পনা করেছি। সেইসব জায়গায় যেন অপরাধ না ঘটে প্রয়োজনে যৌভথাবে টহল দেবার প্রাথমিক পরিকল্পনাও হয়েছে।”বিএসএফ মহাপরিচালক শ্রী দেবেন্দ্র কুমার পাঠক বলেন, “সীমান্ত সম্মেলনে ভারত বাংলাদেশ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছে। এ সম্মেলন দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরো এগিয়ে নেবে।”সীমান্তে হত্যার বিষয়ে সাংবাদিকের করা প্রশ্নের জবাবে বিএসএফ মহাপরিচালক বলেন, “যে কোন দেশের নাগরিকই যখন প্রাণ হারান তখন তা অত্যন্ত একটি দুঃখজনক ঘটনা। তবে পরিসংখ্যান বলছে সীমান্তে হত্যা আগের চেয়ে অনেক কমে এসেছে।”২০০৭ সালে সীমান্তে বিভিন্ন কারণে ১০৬ জনকে প্রাণ দিতে হয়েছে সেখানে ২০১২ সালে তার সংখ্যা ১১ জন বলেও জানান তিনি।বিএসএফ মহাপরিচালক আরও বলেন, কারো একার পক্ষে সীমান্তে হত্যা বন্ধে কাজ করা সম্ভব না। এজন্য বিজিবি-বিএসএফ যৌথভাবে সীমান্তে হত্যা বন্ধে কাজ করতে চায়। এরকম ঘটনাকে আমরা শূন্যে নিয়ে আসতে চেষ্টা করছি।সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “ফেলানী হত্যার বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। বিচারাধীন বিষয় নিয়ে কোন ধরনের মন্তব্য করা ঠিক হবে না।”এছাড়াও সীমান্তবর্তী এলাকায় মাদক চোরাচালান, অবৈধভাবে মানব পাচার, অস্ত্র ব্যবসা, সীমান্তে অপরাধে জড়িতদের আটকের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহনের বিষয়েও সম্মেলনে যৌথভাবে কাজ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেও জানান তিনি।প্রসঙ্গত, গত ২৫ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এ সীমান্ত সম্মেলন মঙ্গলবার ৩০ ডিসেম্বর পর্যেন্ত চলবে। সম্মেলনে ভারতের ১৯ সদস্যের ও বাংলাদেশের ২৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নিয়েছেন।
Advertisement