বিচার শুরুর ২৮ কার্যদিবসের মাথায় ব্যাংক ডাকাতির একটি মামলার রায় ঘোষণা স্বস্তিদায়ক বিষয়। আরো স্বস্তির বিষয় যে বিচারে দোষীর যোগ্য শাস্তি হয়েছে। কোনো সমাজে যদি ভাল কাজের পুরস্কার ও মন্দ কাজের তিরস্কার না থাকে তাহলে সেখানে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হয় না। এরফলে অপরাধের স্বর্গরাজ্য তৈরি হয়। একারণেই অপরাধীর শাস্তি হওয়াটা অত্যন্ত জরুরি। কেননা শাস্তি হলে নতুন করে অপরাধে জড়ানোর ক্ষেত্রে অপরাধীরা ভয় পাবে। শাস্তি এক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত হিসেবে কাজ করবে। গত বছরের ২১ এপ্রিল বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের আশুলিয়ার কাঠগড়া বাজার শাখায় ডাকাতি হয়। পালানোর সময় ডাকাতদের ছুরিকাঘাত ও গুলিতে ব্যাংকের কর্মচারীসহ আটজন নিহত হন। লুট করা হয় ৬ লাখ ৮৭ হাজার ১৯৩ টাকা। এ ঘটনায় ওই বছরের ২২ এপ্রিল ব্যাংকের কর্মকর্তা ফরিদুল হাসান আশুলিয়া থানায় মামলা করেন। এরপর আসামিদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তদন্ত শেষে, গত বছরের ১ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দেয় আশুলিয়া থানা-পুলিশ। আদালত অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে এ বছরের ২১ জানুয়ারি ১১ আসামির বিরুদ্ধে বিচার শুরু করেন। মোট ৯৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ৬৪ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। গতকাল মঙ্গলবার এ মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। রায়ে জঙ্গিসহ ছয়জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও দুই আসামিকে তিন বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। খালাস পেয়েছেন দুজন। ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ এস এম কুদ্দুস জামান এই আদেশ দেন।আশুলিয়ার ব্যাংক ডাকাতির ঘটনাটি ছিল খুবই দুঃখজনক। কেননা এই ঘটনায় শুধু অর্থ খোয়া যায়নি ডাকাতদের বাধা দিতে গিয়ে প্রাণ হারান ব্যাংক কর্মকর্তাসহ ৮ জন। এ ছাড়া জঙ্গিরা এই ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় এটি আরো ভয়াবহ ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। আশার কথা হচ্ছে অবশেষে অপরাধীরা শাস্তি পেয়েছে। তবে বিচারের এটিই শেষ ধাপ নয়। আইনি লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত যেন অপরাধীর শাস্তি নিশ্চিত করা যায় সে ব্যাপারে প্রয়োজীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। আর ব্যাংকিং সেক্টরের সার্বিক নিরাপত্তা নিয়েও নতুন করে ভাবতে হবে। এইচআর/পিআর
Advertisement