মতামত

টিসিবিকে সক্রিয় করে দ্রব্যমূল্য স্বাভাবিক রাখুন

রমজানে দ্রব্যমূল্য স্বাভাবিক রাখার জন্য ভোক্তাদের পক্ষ থেকে সব সময়ই দাবি থাকে। কারণ এই সময়টায় এক শ্রেণির মুনাফালোভী মৌসুমী ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। অথচ অন্য দেশে কোনো উৎসব পার্বণে জিনিসপত্রের দাম কমিয়ে দেওয়া হয় যাতে ভালোভাবে সবাই সেই উৎসবে অংশ নিতে পারে। আমাদের দেশে এর উল্টো চিত্র। এ ব্যাপারে অনেক কথা হলেও কাজের কাজ খুব কমই হয়। এবারো রমজানের আগেই প্রয়োজনীয় অনেক নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে গেছে। এগুলো দেখার যেন কেউ নেই। ভোক্তাদের পকেট কাটা যাবে আর প্রশাসনযন্ত্র তাকিয়ে তাকিয়ে দেখবে এটা হতে পারে না। এ ব্যাপারে এখনই কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে যাতে ন্যায্যমূল্যে ভোক্তারা পণ্য পায়। আশার কথা হচ্ছে পবিত্র রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন পণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে ও স্বল্প আয়ের মানুষের সুবিধার্থে সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য বিক্রি শুরু করেছে সরকারের বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। গতকাল রোববার থেকে রাজধানীসহ সারাদেশে ১৭৯টি ট্রাকে পণ্য বিক্রি শুরু হয়েছে। পুরো রমজান জুড়ে টিসিবির পণ্য বিক্রয় কার্যক্রম চলবে। দেশি চিনি, ছোলা, মসুর ডাল, সয়াবিন তেল ও খেজুর এই ৫টি পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। রাজধানীতে ৩২টি ট্রাক ছাড়াও চট্টগ্রামে ১০টি, অন্য বিভাগীয় শহরে ৫টি ও জেলা সদরে ২টি করে ট্রাকে এসব পণ্য বিক্রি হবে। একেকটি ট্রাকে ৩০০ থেকে ৪০০ কেজি চিনি, ১৫০ থেকে ২০০ কেজি ডাল, ৩০০ থেকে ৪০০ লিটার তেল, ৪০০ থেকে ৮০০ কেজি ছোলা ও ৫০ কেজি করে খেজুর থাকবে। একজন ক্রেতা একসঙ্গে সর্বোচ্চ ৪ কেজি চিনি, ২ কেজি মসুর ডাল, ৫ লিটার সয়াবিন তেল, ৫ কেজি ছোলা ও ১ কেজি খেজুর কিনতে পারবেন। প্রতি কেজি চিনি ৪৮ টাকা, মসুর ডাল ৮৯.৯৫ টাকা, ছোলা ৭০ টাকা, খেজুর ৯০ টাকা ও সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ৮০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। টিসিবির এই কার্যক্রম আরো জোরদার করা অত্যন্ত জরুরি। কারণ বাজারে সমান্তরাল একটি সরবরাহ ব্যবস্থা থাকলে সিন্ডিকেট চক্র খুব বেশি সুবিধা করতে পারবে না। এ জন্য শুধু নামে কার্যক্রম চালালেই হবে না যথেষ্ট পণ্য যেন মজুদ থাকে সেটিও নিশ্চিত করতে হবে। পণ্যের গুণগত মান বজায় রাখাও জরুরি। আর টিসিবির পণ্য যেন  সব জায়গাতেই পাওয়া যায় সেটিও নিশ্চিত করতে হবে। এ ব্যাপারে ব্যাপক প্রচারণাও চালাতে হবে মানুষজন যাতে জানতে পারে কোথায় টিসিবির পণ্য পাওয়া যাচ্ছে। আর যে কোনো মূল্যে পণ্যমূল্য স্বাভাবিক রাখতে হবে। রমজানে দ্রব্যমূল্য যেন ভোক্তাদের বাড়তি কোনো বিড়ম্বনার কারণ না হয় সেটি নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। এইচআর/এমএস

Advertisement