হেফাজতে ইসলামের আমীর আল্লামা শাহ আহমদ শফি ও মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর সঙ্গে একই মঞ্চে অতিথি হিসেবে যোগ দেন সিলেটের গোলাপগঞ্জ পৌরসভার মেয়র, আওয়ামী লীগ নেতা সিরাজুল জব্বার চৌধুরী। গোলাপগঞ্জ পৌরশহরে নবনির্মিত একটি মার্কেটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের একই মঞ্চে এই তিন নেতা পাশাপাশি বসেন। এ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।ধর্মভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে সরকার সখ্যতা গড়ে তুলতে চাইছে, দেশজুড়ে চলমান এমন আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেই হেফাজতের দুই শীর্ষ নেতার সঙ্গে একই অনুষ্ঠানে অতিথি হলেন এক আওয়ামী লীগ নেতা।যদিও ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে সরকার ও গণজাগরণবিরোধী অবস্থান, বিভিন্ন সময়ে ব্লগার ও সরকারের সমালোচনা করে বক্তৃতা দিয়ে গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছেন হেফাজতের এই দুই শীর্ষ নেতা। বিভিন্ন ইস্যুতে সরকারবিরোধী আন্দোলনেরও ডাক দেয় হেফাজত। তবে সাম্প্রতিক সময়ে সরকার ও হেফাজতের মধ্যে দূরত্ব কমে আসছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।হেফাজতের দুই শীর্ষ নেতার সঙ্গে একই অনুষ্ঠানে অতিথি হওয়া প্রসঙ্গে গোলাপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সিরাজুল জব্বার চৌধুরী বলেন, `এটি হেফাজতের কোনো অনুষ্ঠান ছিল না। হেফাজতের অনুষ্ঠান হলে আমি যেতাম না। অনুষ্ঠানটি ছিল একটি টাওয়ারের উদ্বোধন উপলক্ষে দোয়া মাহফিল। আয়োজকরা আল্লামা শফী ও বাবুনগরীকে নিয়ে এসেছেন। আমাকেও দাওয়াত করেছিলেন। তাই সেখানে গেছি।’এক প্রশ্নের জবাবে এই পৌর মেযর বলেন, ‘এ অনুষ্ঠানে শফী সাহেব সরকারের পক্ষেই কথা বলেছেন। তিনি এমনটি সব সময় বলে থাকলে তো ভালোই হয়। এ রকম লোকদের মুখ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ-সরকারের পক্ষে কথা বলানোর দরকার আছে।’দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শাহ আহমদ শফি বলেন, ‘দেশের সবাই শান্তি চায়। দেশ কখনও খারাপ হয় না। মানুষের জন্য দেশ খারাপ হয়।’আল্লামা আহমদ শফি বলেন, ‘ইসলামে অসত্য, অন্যায়, সন্ত্রাসের কোনো স্থান নেই। ইসলাম ন্যায় ও শান্তির ধর্ম। ইসলামকে অনুসরণ করতে পারলে এ দেশে কোনো হানাহানি ও সন্ত্রাস থাকবে না। আজ সর্বত্র ইসলামকে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা চলছে। ইসলামের ওপর আঘাত হানা হচ্ছে নানাভাবে।মাওলানা হিলাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও হাফিজ মাওলানা আব্দুল আহাদের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। বক্তব্য রাখেন- গোলাপগঞ্জ পৌরসভার মেয়র সিরাজুল জব্বার চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন মার্ভেলাস টাওয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাফিজ মাওলানা নুরুল হুদা।উল্লেখ্য, গত পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মেয়র নির্বাচিত হন সিরাজুল জব্বার। বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় উপজেলা যুগ্ম সম্পাদক পদ থেকে তাকে বহিষ্কার করে আওয়ামী লীগ। তবে রোববার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিক আহমদ জাগো নিউজকে বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় উপজেলা যুগ্ম সম্পাদক পদ থেকে তাকে বহিষ্কার করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন ছিল। বহিষ্কার করা হয়নি। হেফাজতের দুই নেতার সঙ্গে একই অনুষ্ঠানে অতিথি হওয়া ও একই মঞ্চেওঠা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে এ বিষয়ে দলীয় ফোরামে এখনো কোনো আলাপ-আলোচনা হয়নি। তাই এ বিষয়ে আমি আর কিছু বলতে চাই না। ছামির মাহমুদ/এসএস/আরআইপি
Advertisement