খেলাধুলা

সবচেয়ে বেশি রান বিজয়ের, শীর্ষ দশে অগ্রণী ব্যাংকের ৩ ব্যাটার

সবচেয়ে বেশি রান বিজয়ের, শীর্ষ দশে অগ্রণী ব্যাংকের ৩ ব্যাটার

শেষ হয়ে গেছে ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগের রবিন লিগ। ১২টি দলই ১১টি করে খেলায় অংশ নিয়ে ফেলেছে। পয়েন্ট সমান হলেও হেড টু হেডে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনীকে পেছনে ফেলে তালিকার শীর্ষে মোহামেডান। কিন্তু অবাক করা ব্যাপার হলো, রান তোলায় মোহামেডান কিংবা আবাহনীর কোনো ব্যাটার নেই সবার ওপরে। রাউন্ড রবিন লিগ শেষে টপ স্কোরার গাজী গ্রুপের অধিনায়ক ও ওপেনার এনামুল হক বিজয়। বিজয়ের সংগ্রহ ১১ ম্যাচে ৬৫৫ রান। সর্বোচ্চ অপরাজিত ১৪৯ রানের ইনিংসটি। মোহামেডানের বিপক্ষে বিকেএসপিতে ১৪৩ বলে ওই ম্যাচে জেতানো ইনিংস খেলেছেন বিজয়।

Advertisement

এবারের লিগে দুটি সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন গাজী গ্রুপ ক্যাপ্টেন। সাথে ৪টি হাফসেঞ্চুরিও আছে। প্রথম লিগ শেষে রান তোলায় সবার ওপরে থাকলেও লিগের প্রথম দুই খেলায় বিজয় রানের খাতাই খুলতে পারেননি। পরের ৯ ম্যাচে ৬ বারের ওপরে পঞ্চাশ পেরিয়ে গেছেন। বিজয়ের ব্যাটিং গড় ৭২.৭৮, স্ট্রাইকরেট ৯৬.৮৯।

এবারের লিগে শুরু থেকেই রান সংগ্রহে বিজয়ের সঙ্গে জোর লড়াই করেছেন নাইম শেখ। তার দল প্রাইম ব্যাংক সুপার লিগে যেতে পারেনি। ৭ নম্বর থেকেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে। তারপরও বাঁহাতি ওপেনার নাইম শেখ ঠিকই নজর কেড়েছেন। রাউন্ড রবিন লিগের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক নাইম শেখ। ১১ ম্যাচে তার সংগ্রহ ৬১৮ রান।

রান তোলায় তিন নম্বরে জায়গা করে নিয়েছেন আবাহনীর তরুণ মারকুটে ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন। ১১ ম্যাচে ইমন করেছেন ৫৬৯ রান।

Advertisement

দল সেরা ছয়ে নেই। লিগ টেবিলে নুরুল হাসান সোহানের দল ধানমন্ডি স্পোর্টস ক্লাবের অবস্থান ৮ নম্বর। কিন্তু রান তোলায় ধানমন্ডি অধিনায়ক ও উইকেটকিপার নুরুল হাসান সোহান ১১ ম্যাচে ৫২২ রান করে হয়েছেন চতুর্থ।

রান সংগ্রহে পঞ্চম স্থানটি সাদমান ইসলামের। তাকে টেস্ট ব্যাটার বলে গণ্য করা হয়। কিন্তু অগ্রনী ব্যাংকের এ বাঁহাতি ওপেনার ১১ ম্যাচে ৪৬৯ রান করে দেখিয়ে দিলেন ৫০ ওভারের ফরম্যাটেও তিনি কম যান না। দল হিসেবে এবারের লিগে বেশ ভালো ক্রিকেট খেলেছে অগ্রণী ব্যাংক। দলটির টিম পারফরম্যান্স ছিল চোখে পড়ার মত। তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ হলো রান সংগ্রহে সেরা দশে তিন-তিনজনের জায়গা করে নেওয়া। রান তোলায় পঞ্চম (সাদমান), ষষ্ঠ অমিত হাসান (১১ ম্যাচে ৪৫০) ও সপ্তম স্থান অধিকারী (ইমরুল কায়েস ৯ ম্যাচে ৪৪৪ রান) তিন ব্যাটারই অগ্রণী ব্যাংকের। রান সংগ্রহে যিনি ৮ নম্বরে জায়গা করে নিয়েছেন, সেই ইয়াসির আলী রাব্বির ১১ ম্যাচে রান ৪৪৪। তার দল ধানমন্ডি স্পোর্টস ক্লাবও নেই সেরা ছয়ে।

লিগ টেবিলে সবার ওপরে থাকলেও রান তোলায় শীর্ষ দশে মোহামেডানের ব্যাটার মাত্র একজন- মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। এ উইকেটকিপার কাম টপ অর্ডার ১১ ম্যাচে ৪৩১ রান করে হয়েছেন নবম।

শুরুতে নিয়মিত রান করলেও পরের দিকে দ্যুতি কমে গেছে। তারপরও রান তোলায় দশম লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের বাঁহাতি ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম (১০ ম্যাচে ৪১৯)। এছাড়া দারুণ শুরু করেছিলেন তামিম ইকবাল। মোহামেডান অধিনায়ক প্রথম ৩ ম্যাচেই ২টি সেঞ্চুরি করে বসেছিলেন। কিন্তু সপ্তম ম্যাচে হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হয়ে মাঠের বাইরে চলে গেছেন। তার আগে তামিমের ব্যাট ছিল আস্থা ও নির্ভরতার প্রতীক। ৭ ইনিংসে দুই সেঞ্চুরিসহ তামিম ইকবালের রান ৩৬৮।

Advertisement

সে তুলনায় হতাশ করেছেন মোহামেডানের দুই অভিজ্ঞ ও নামি পারফরমার মুশফিকুর রহিম আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তাদের কারো ব্যাটই কথা বলেনি। মুশফিকের সংগ্রহ ৭ ম্যাচে সাকুল্যে ১৯৩ রান। আর চরম হতাশ করা মাহমুদউল্লাহ ৫ ম্যাচে ৪ বার ব্যাট করে করেছেন মাত্র ৫০। তুলনামূলকভাবে কম পরিচিতির কয়েকজন আনকোরা তরুণ ভালো খেলে রান পেয়েছেন। সেই তালিকায় আছেন শাইনপুকুরের রায়ান রাফসান রহমান (১১ ম্যাচে ৪১৩), ব্রাদার্স ইউনিয়নের মাহফিজুল ইসলাম রবিন (৯ ইনিংসে ৪০৬), গাজী গ্রুপের ওপেনার সাদেকুর রহমান (১১ ম্যাচে ৩৬৭), পারটেক্সের আহরার আমিন (৯ ম্যাচে ৩৬২), গুলশান ক্রিকেট ক্লাবের অধিনায়ক ও ক্যাপ্টেন আজিজুল হাকিম তামিম (১০ ম্যাচে ৩৪৪), প্রাইম ব্যাংকের সাব্বির হোসেন (১০ ম্যাচে ৩৩২), গুলশান ক্রিকেট ক্লাবের ওপেনার জাওয়াদ আবরার (১০ ম্যাচে ৩৩০), ব্রাদার্স ইউনিয়নের আইচ মোল্লাহ (৮ ইনিংসে ৩০২) এবং গুলশান ক্রিকেট ক্লাবের মিডল অর্ডার ইফতিখার হোসেন ইফতি (৭ ম্যাচে ২৩৪ রান)।

এআরবি/এমএমআর/এমএস