বিশ্বের দ্বিতীয় এবং বাংলাদেশের প্রথম ব্যক্তি হিসেবে সাইকেল নিয়ে হিমালয়ের অন্নপূর্ণা রেঞ্জের চারটি পয়েন্টে আরোহণ করেছেন জাবির সাবেক শিক্ষার্থী তোজাম্মেল হোসেন মিলন।
Advertisement
শনিবার (১২ এপ্রিল) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির কনফারেন্স কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এই রেকর্ডের দাবি করেন তিনি।
মিলন বর্তমানে রাজউক উত্তরা মডেল কলেজে গণিতের প্রভাষক হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি জাবির গণিত ৪২ ব্যাচের শিক্ষার্থী।
২০১৬ সালে মিলনের লিস্ফোমা টিউমার থেকে ক্যানসার ধরা পড়ে। চিকিৎসা নিয়ো সুস্থ হলেও নিয়মিত ঘাম ঝরানোর পরামর্শ দেন চিকিৎসক। ঘাম ঝরাতে সাইক্লিংকে বেছে নেন মিলন।
Advertisement
সংবাদ সম্মেলনে তোজাম্মেল হোসেন মিলন জানান, চলতি বছরের ১৭ মার্চ ২৫ দিনের এই অভিযান শুরু করেন তিনি। এরপর সাইকেলের প্যাডেলে চেপে হিমালয়ের অন্নপূর্ণা রেঞ্জের তিলিকো লেক, থরংলা পাস, অন্নপূর্ণা সার্কিট ও অন্নপূর্ণা বেসক্যাম্প পৌঁছান। যা বিশ্বের দ্বিতীয় ও প্রথম বাংলাদেশি ব্যক্তি হিসেবে এই চারটি চূড়ান্ত গন্তব্য সাইকেলে সম্পন্ন করার অনন্য রেকর্ড এনে দিয়েছে তাকে।
নিজের এ অনন্য অর্জন মেয়ে মানহার নামে উৎসর্গ করেছেন মিলন। তিনি বলেন, ‘এটি শুধু আমার জন্য নয়, বাংলাদেশের জন্যও এক নতুন ইতিহাস। এই অসাধারণ অর্জন আমি আমার মেয়ে মানহার নামে উৎসর্গ করছি। সে হয়তো এখন বুঝবে না, কিন্তু বড় হয়ে জানবে। তখন হয়তো বাবার এই স্বপ্ন, সংগ্রাম ও অর্জন তার অনুপ্রেরণার উৎস হবে।’
মিলন বলেন, এই অভিযানের প্রতিটি মুহূর্ত ছিল চ্যালেঞ্জিং। কয়েকবার ফিরেছেন মৃত্যুর ঝুঁকি থেকে; গুরুতর আহতও হয়েছেন। তবে সবার দোয়া, ভালোবাসা এবং সমর্থন তাকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করেছে।
সাইক্লিং নিয়ে ভবিষ্যত পরিকল্পনার বিষয়ে জানতে চাইলে তোজাম্মেল হোসেন মিলন বলেন, বিশ্বের আলোচিত হাইওয়ে, গিরিপথ, মালভূমি অতিক্রম করার ইচ্ছা আছে। পাশাপাশি ভ্রমণের অভিজ্ঞতা ও দুঃসাহসিক অভিযাত্রা অব্যাহত রাখতে চাই। এসব অভিজ্ঞতা নিয়ে বই লেখার ইচ্ছা আছে।
Advertisement
এর আগে, ২০১৮ সালে খারদুংলা পাস অভিযান করে প্রথম রেকর্ড গড়েছিলেন মিলন। সেবার টেকনাফ থেকে লাদাখের ৭০ দিনের ট্রিপে মিলন সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৮ হাজার ৩৮০ ফুট উচ্চতায় উঠেছেন শুধু প্যাডেলে চেপে। আর এবার সেই কীর্তির প্রায় সাত বছর পর আবারও প্রিয় সেই বাহন নিয়ে এই বিশ্ব রেকর্ডে নিজের নাম লেখালেন তিনি।
সৈকত ইসলাম/এসআর