বৈশ্বিক বাণিজ্যযুদ্ধ ঘিরে চলমান অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে বড় দরপতনের মুখে পড়েছে মার্কিন ডলার। গত সপ্তাহে সুইস ফ্রাঁ ও ইউরোর বিপরীতে ডলারের দাম বছরের সর্বনিম্ন স্তরে পৌঁছেছে, যা ২০২২ সালের পর সবচেয়ে বড় সাপ্তাহিক পতন।
Advertisement
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের জবাবে চীনের পাল্টা শুল্ক আরোপ বিশ্ববাজারে উদ্বেগ তৈরি করেছে। ফলে বিনিয়োগকারীরা মার্কিন ডলার থেকে মুখ ফিরিয়ে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ মুদ্রা ও সম্পদের দিকে ঝুঁকছেন।
আরও পড়ুন>>
ট্রাম্পের ‘শুল্ক বিরতি’তে ভরসা পাচ্ছেন না বিনিয়োগকারীরা ট্রাম্পের শুল্কারোপ, পণ্যের দাম বাড়ার শঙ্কায় ৭৩ শতাংশ মার্কিনি ট্রাম্পের শুল্কে আইফোনের দাম হতে পারে ২ লাখ ৭৮ হাজার টাকাগত শুক্রবার (১১ এপ্রিল) সুইস ফ্রাঁর বিপরীতে ডলারের দর ০ দশমিক ৯ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ০ দশমিক ৮১৬৫০, যা ২০১৫ সালের জানুয়ারির পর থেকে সর্বনিম্ন। এক পর্যায়ে এই হার ছিল ০ দশমিক ৮১৬১০, যা ২০২২ সালের নভেম্বরের পর সবচেয়ে বড় সাপ্তাহিক পতন।
Advertisement
অন্যদিকে, ইউরোর বিপরীতেও ডলারের মান কমে তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউরোপীয় অঞ্চল তুলনামূলক স্থিতিশীল থাকায় বিনিয়োগকারীরা এখন ইউরোতে বেশি আস্থা রাখছেন।
বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনগালস অ্যান্ড স্নাইডারের সিনিয়র পোর্টফোলিও কৌশলবিদ টিম ঘ্রিসকি বলেন, ট্রাম্পের নীতি এবং আলোচনার ধারা বর্তমানে বাজারে সবচেয়ে বড় অনিশ্চয়তার উৎস। শুল্ক নিয়ে আলোচনার সময়ে নানা গুজব ও অবস্থান গ্রহণ চলবে। ফলে ডলারের ওপর চাপ অব্যাহত থাকবে।
মার্কিন ভোক্তা আস্থা সূচক ও প্রযোজক মূল্যসূচকের দুর্বলতা আরও স্পষ্ট করেছে যে, বাজারে অর্থনৈতিক শ্লথগতির আশঙ্কা বাড়ছে। ফলে ফেডারেল রিজার্ভের ভবিষ্যৎ নীতিকৌশল নিয়েও বিনিয়োগকারীরা দ্বিধায় রয়েছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, ডলারের দরপতন কেবল মার্কিন বাণিজ্য নীতির প্রভাব নয়, বরং বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থার পুনর্বিন্যাসের ইঙ্গিত বহন করে। সোনার মতো নিরাপদ সম্পদের দাম এবং ইউরো, ফ্রাঁর মতো মুদ্রার প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি তারই ইঙ্গিত দিচ্ছে।
Advertisement
বিশ্ব অর্থনীতিতে বাণিজ্যসংক্রান্ত উত্তেজনা স্থায়ী লে ডলারের দর আরও চাপের মুখে পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
সূত্র: রয়টার্সকেএএ/