চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার মহিপুরে স্কুলছাত্রীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা প্রমাণ করে বখাটেদের অত্যাচার এখন কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে। এ ধরনের নির্মম, হৃদয়বিদারক ঘটনা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। ঘাতক আব্দুল মালেককে (২৮) হাতেনাতে ধরে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। এখন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিই তার যোগ্য পাওনা। শুক্রবার সকালে এ মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে। সদর উপজেলার দিয়াড় ধাইনগর গ্রামের লক্ষণ ঘোষের মেয়ে কনিকা রানী ঘোষ (১৪) ও তার অপর সহপাঠি তারিন আফরোজ (১৫), তানজিমা আক্তার (১৪) এবং মরিয়ম আক্তার স্থানীয় এক শিক্ষকের কাছে সকাল ৭টায় প্রাইভেট পড়তে যায়। ৯টার দিকে প্রাইভেট শেষে বাড়ি ফেরার সময় বখাটে মালেক তাদের কুপিয়ে মারাত্মক যখম করে। এতে কনিকা রানী ঘোষ অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে হাসপাতালে নেয়ার আগেই মারা যায়। অন্যদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। নিহত কনিকা রানীরা দুই বোন। কিছুদিন আগে বাবা মারা গেছেন। মামার কাছে থেকে সে পড়াশোনা করতো। কনিকা ছিল দশম শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী। বিজ্ঞান নিয়ে পড়ছিল সে। অনেক স্বপ্ন ছিল তার। কিন্তু ঘাতকের নির্মম জিজ্ঞাংসা অকালে তার জীবনপ্রদীপ নিভিয়ে দিল। ঘাতক মালেক মাদকাসক্ত। মাদক সেবনের দায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতে তার সাজা হয়েছিল। সাজা খেটে বেরুনোর পরও তার চরিত্রে কোনো পরিবর্তন আসেনি। যার কারণে একজন মেধাধী ছাত্রীকে অকালে পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে হলো। আহত হলো আরো কয়েকজন।সমাজে এ ধরনের মালেকদের সংখ্যা কম নয়। এদের কারণে মেয়েরা ইভটিজিংসহ নানা রকমের নির্যাতনের শিকার হয়। এখন যখন তারা প্রাণ সংহারের কারণ হচ্ছে তখন বিষয়টি নিয়ে অত্যন্ত জরুরি ভাবে ভাবতে হবে। মালেকদের সংখ্যা যাতে আর বাড়তে না পারে সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ আহতদের দেখতে গিয়েছিলেন। তাদের চিকিৎসার ব্যাপারে সবকিছু সরকারকে করতে হবে। কনিকা রানীর অসহায় পরিবারের পাশেও দাঁড়াতে হবে। এ ধরনের মর্মান্তিক ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে অপরাধীর দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির পাশাপাশি ভাবতে হবে সামাজে ঘাতক তৈরি হওয়ার কার্যকারণগুলো নিয়েও। এইচআর/পিআর
Advertisement