গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে সিলেটে তৌহিদী জনতার মিছিল থেকে কেএফসি, ইউনিমার্ট, বাটা, ডমিনোজ পিজ্জাসহ বিভিন্ন শোরুমে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়েছে। ইসরায়েলি পণ্য রাখা ও বিক্রির অভিযোগ তুলে এসব প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালানো হয়।
Advertisement
সোমবার (৭ এপ্রিল) বিকেল ৩টার দিকে নগরীর মীরবক্সটুলা এলাকায় প্রথমে কেএফসি ভাঙচুর করা হয়। এরপর একে একে বাটার বিভিন্ন শোরুম, ইউনিমার্ট ও বিভিন্ন নামিদামি ব্র্যান্ডের প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনার পর থেকে আতঙ্কে নগরীর বন্দরবাজার, জিন্দাবাজার, চৌহাট্টা এলাকার বেশিরভাগ ব্যবসা প্রতিতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নগরীর বিভিন্ন মোড় ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার দুপুর ২টার পর নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে বন্দরবাজার কোর্ট পয়েন্টে জড়ো হতে থাকেন বিক্ষুব্ধ জনতা। বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকেও অনেকে মিছিল সহকারে যোগ দেন। এর সেখান থেকে হাজার হাজার বিক্ষুব্ধ জনতা মিছিল নিয়ে জিন্দাবাজার হয়ে চৌহাট্টা শহীদ মিনার এলাকায় অবস্থান নেন। একপর্যায়ে উত্তেজিত জনতা প্রথমে ইসরায়েলি পণ্য বিক্রির অভিযোগ তুলে মীরবক্সটুলা এলাকার কেএফএসিতে ভাঙচুর করেন। এসময় প্রতিষ্ঠানটির বিপুল পরিমাণ পানীয় নষ্ট করেন তারা। এরপর দরগাহ গেট এলাকার বাটা শোরুম ও আশপাশের কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করা হয়।
এর কিছুক্ষণ পরে ভাঙচুর চালান আম্বরখানা এলাকার ইউনিমার্টে। এতে সবকটি প্রতিষ্ঠান বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে যান সেনাবাহিনীর সদস্যরাও।
Advertisement
ইউনিমার্টের ভেতরে কেনাকাটা করতে যাওয়া তাহমিনা বেগম বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় বাজার কিনতে প্রায়ই এখানে আসি। আজও আসি বাসার বাজার করতে। হঠাৎ মার্কেটে হামলা করে মানুষজন। আমার ছোট ছেলে একটুর জন্য ইটের আঘাত থেকে রক্ষা পেয়েছে।’
বিক্ষুব্ধ জনতার ভাষ্য, নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের গণহত্যাকারী ইসরায়েলি কোনো প্রতিষ্ঠান বাংলার মাটিতে থাকতে দেওয়া হবে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বন্দরবাজার, জিন্দাবাজার, দরগাহ গেট ও আম্বরখানা এলাকার বাটার চারটি শোরুম ভাঙচুর-লুটপাট, দরগাহ গেট এলাকার বনফুল, নয়াসড়ক এলাকার হোটেল রয়েল মার্ক ও কেএফসি, আম্বরখানা এলাকার ইউনিমার্ট, জিন্দাবাজার এলাকার কয়েকটি জুতার দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে।
এদিকে, নগরীর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুরের পর আতঙ্কে নগরীর প্রাণকেন্দ্র জিন্দাবাজার, বন্দরবাজার ও আম্বরখানা এলাকার বেশিরভাগ শপিংমল ও সড়কের পাশের দোকানপাট বন্ধ করে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে নামিদামি ব্র্যান্ডের খাবারের দোকান থেকে শুরু করে কাপড়ের শোরুমও বন্ধ রয়েছে। এতে নগরবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
Advertisement
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল হক বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে আর যাতে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে, সেজন্য বাড়তি নজরদারি রয়েছে।
আহমেদ জামিল/এসআর/এমএস