ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার সদরে (পুরাতন বাজার) তরকারি বাজার সংলগ্ন খালের ওপর এক কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে প্রায় দুই বছর আগে। কিন্তু সেতুর দুই পাশে করা হয়নি সংযোগ সড়ক। ফলে কোনো উপকারেই আসছে না সেতুটি। প্রতিদিন যাতায়াতকারী হাজারও মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বাজারের ব্যবসায়ী, ক্রেতা ও স্থানীয়রা জানান, সেতু নির্মাণ হওয়ায় তাদের আশা ছিল জনভোগান্তি দূর হবে। অথচ এখন উল্টো তাদের দুর্ভোগ বেড়েছে। মালবাহী বা যাত্রীবাহী কোনো যানবাহন সেতুতে উঠতে পারছে না। সিঁড়ি বেয়ে সেতুতে উঠতে গিয়ে প্রায়ই শিশুরা দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। কারও সাহায্য ছাড়া সেতুতে উঠতে পারেন না বয়স্করা।
Advertisement
সেতুর দুই পাড়েই রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন অফিস। ছগির মৃধা নামের একজন শিক্ষক বলেন, ‘সেতুটির দক্ষিণ পাড়ে কাঁচাবাজারসহ উভয় পাড়ে স্থায়ী মার্কেট রয়েছে। ফলে জায়গাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষকে সেতুটি পারাপার করতে হয়। কিন্তু সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করায় প্রতিদিন এসব মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।’
বাজারে আসা উপজেলা সদরের বাসিন্দা মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘সেতু নির্মাণের দুই বছর পার হলেও এখনো তৈরি হয়নি দুপাশে চলাচলের রাস্তা। এতে সেতুর কোনো সুবিধাই আমরা পাচ্ছি না।’
ভ্যানচালক জমির উদ্দিন বলেন, ‘এ রাস্তা দিয়ে কোনো যানবাহন চলাচল করে না। মানুষের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আনা-নেওয়া করতে খুবই কষ্ট হয়। এত টাকার সেতু এখন অকেজো হয়ে পড়ে আছে।’
Advertisement
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজাপুর রাজারের পুরোনো সেতুটি ভেঙে নতুন সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০২১ সালে। ২০২৩ সালের মে মাসে ঢালাইয়ের কাজ সম্পূর্ণ শেষ হয়। সেতুর সংযোগ সড়কসহ প্রাক্কলন ব্যয় ধরা হয় এক কোটি ৬০ লাখ টাকা। তবে সেতু ঢালাইয়ের কাজ শেষ হওয়ার এক বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়নি।
সেতুটির ঠিকাদারির কাজ করেন জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক রেজাউল করিম জাকির ওরফে জিএস জাকির। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তিনি আত্মগোপনে চলে যান। এরপর সেতুটি ওই অবস্থাতেই রয়েছে।
এ বিষয়ে রাজাপুর উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী অভিজিৎ মজুমদার বলেন, সেতুটির সংযোগ সড়ক খুব শিগগির নির্মাণ করে দেওয়া হবে।
আতিকুর রহমান/এসআর/জিকেএস
Advertisement