দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলকে তার পদ থেকে অপসারণ করেছেন দেশটির সাংবিধানিক আদালত। এর ফলে আগামী ৬০ দিনের মধ্যে দেশটিতে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ততদিন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী হান ডাক-সু ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করবেন।
Advertisement
আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, ইউন গত বছর সামরিক আইন জারি করে জনগণের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করেছেন।
শুক্রবার (৪ এপ্রিল) দক্ষিণ কোরিয়ার সাংবিধানিক আদালত এই রায় ঘোষণা করে। আদালতের মতে, গত বছরের ৩ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল স্বল্প সময়ের জন্য সামরিক আইন জারি করেন। তার দাবি ছিল, রাষ্ট্রবিরোধী শক্তি ও উত্তর কোরিয়াপন্থি ব্যক্তিরা সরকারে অনুপ্রবেশ করেছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় তিনি সামরিক আইনের আশ্রয় নেন। তবে আদালত মনে করে, এই পদক্ষেপ ছিল সংবিধানবিরোধী ও জনগণের অধিকার হরণ করে।
গত বছরের ডিসেম্বর ৩ তারিখে ইউন সামরিক আইন ঘোষণা করার পর সংসদ ভবনে সেনাবাহিনী ও পুলিশ মোতায়েন করেন, যা ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। যদিও তিনি কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ওই ঘোষণা প্রত্যাহার করেন, কিন্তু এর মধ্যেই রাজনৈতিক অস্থিরতা চরমে পৌঁছে যায়।
Advertisement
এরপর জানুয়ারিতে জাতীয় পরিষদ দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে ইউনকে অভিশংসিত করার সিদ্ধান্ত নেয়। যদিও ইউন নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছিলেন, আদালতের রায়ের ফলে তিনি এখন চূড়ান্তভাবে ক্ষমতা হারালেন। শুক্রবার আদালতের আট বিচারকের মধ্যে ছয়জন প্রেসিডেন্ট ইউনকে অপসারণের পক্ষে রায় দেন।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া ও জনসাধারণের প্রতিক্রিয়া
বিরোধী ডেমোক্রেটিক পার্টির মুখপাত্র জো সেউং-লা আদালতের সিদ্ধান্তকে ‘জনগণের মহান বিজয়’ বলে অভিহিত করেছেন ও ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হান ডাক-সুকে সংবিধান মেনে দেশ পরিচালনার আহ্বান জানান।
এদিকে, হান ডাক-সু আদালতের রায় মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে জনগণের প্রতি শান্তিপূর্ণ আচরণ বজায় রাখার আহ্বান জানান।
Advertisement
তবে সিউলে ও অন্যান্য শহরে আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। ইউনের সমর্থকরা তাকে পুনর্বহালের দাবি জানিয়ে রাস্তায় নেমেছে। অন্যদিকে, বামপন্থিরা তার অভিশংসন উদযাপন করছে।
সূত্র: নিক্কেই এশিয়া, আল জাজিরা
এসএএইচ