মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের রাজশাহী আঞ্চলিক কার্যালয়ের কলেজ শাখার সহকারী পরিচালক (এডি) মো. আলমাছ উদ্দিন অনিয়ম আর ঘুষ বাণিজ্যের কারণে ‘দুর্নীতির বরপুত্র’ খ্যাতি পেয়েছেন। নিয়ম ভেঙে ও ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে রাজশাহী অঞ্চলের বিভিন্ন কলেজের শিক্ষকদের এমপিও করে দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগের তদন্তও চলছে তার বিরুদ্ধে। রাজশাহী অঞ্চলের ডিগ্রি তৃতীয় স্তরের শিক্ষকদের বিশেষ এমপিওভুক্তিতে করেছেন ভয়াবহ জালিয়াতি।
Advertisement
৫ আগস্টের পর নতুন পরিচালক অধ্যাপক মোহা. আছাদুজ্জামানকেও তার অপকর্মের সঙ্গী বানিয়েছেন আলমাছ। ফলে মিলেমিশে বাণিজ্যে নেমেছেন পরিচালক ও সহকারী পরিচালক। ১০৩ জনের নাম পাঠালেও এমপিও হয়েছে ১৬৫ জনের। ফলে চূড়ান্ত এমপিও তালিকায় অবৈধভাবে অতিরিক্ত ৭৬ জন শিক্ষকের নাম ঢুকিয়েছেন তিনি ও পরিচালক।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ডিগ্রি স্তরে গভর্নিং বডি কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত তৃতীয় শিক্ষকদের বিশেষ এমপিওভুক্ত করতে গত বছরের ১৫ জুলাই মাউশি রাজশাহী অঞ্চলের তৎকালীন পরিচালক (কলেজ) অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ ব্যানার্জী ১০৩ জন শিক্ষকের একটি তালিকা মাউশি অধিদপ্তর, ঢাকার মহাপরিচালক বরাবর পাঠান। এরপর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চাহিদা অনুযায়ী এমপিওভুক্ত তৃতীয় শিক্ষকদের নাম, পদবি, বিষয়, প্রতিষ্ঠানের নাম ও শিক্ষার্থীর সংখ্যাসহ ২০৭ জনের তথ্য মাউশি রাজশাহী অঞ্চলের বর্তমান পরিচালক অধ্যাপক আছাদুজ্জামান গত বছরের ২ ডিসেম্বর পাঠান। এই ২০৭ জনের মধ্যে ৪২ জনের এমপিও আগে থেকেই ছিল। যোগ্য তালিকার ১০৩ জনের মধ্য থেকেই এমপিওভুক্ত হওয়ার কথা।
তবে অনুসন্ধানে জানা গেছে, এই ১০৩ জনের মধ্যে গত নভেম্বরে ৮৯ জনের এমপিও হয়েছে। আর আগে থেকেই এমপিওভুক্ত ছিল ৪২ জন। হিসাব অনুযায়ী, রাজশাহীর আঞ্চলিক পরিচালকের সবমিলিয়ে ১৩১ জন শিক্ষকের এমপিও’র নাম-তালিকা পাঠানোর কথা। কিন্তু চূড়ান্ত এমপিও তালিকায় পাঠিয়েছেন ২০৭ জনের তথ্য। সেই হিসেবে চূড়ান্ত এমপিও তালিকায় অবৈধভাবে অতিরিক্ত ৭৬ জন শিক্ষকের নাম ঢুকিয়েছেন পরিচালক।
Advertisement
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাউশির পরিচালক হিসেবে যোগদানের মাত্র ৪ মাসেই আছাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে নিয়মভেঙে টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষ নিয়োগ, বিভিন্ন বেসরকারি কলেজের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের এমপিও করে দেওয়ার বিস্তর অভিযোগ উঠেছে। এরমধ্যে অন্য একটি কলেজে উপাধ্যক্ষ পদ থেকে বরখাস্ত থাকা অবস্থায় মাহবুবুর রহমান নামের এক শিক্ষককে বগুড়ার নন্দীগ্রামের মুনসুর আলী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগের ব্যবস্থা করেন পরিচালক অধ্যাপক আছাদুজ্জামান। বিধি অনুযায়ী, অধ্যক্ষ নিয়োগের ক্ষেত্রে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন প্রয়োজন। কিন্তু এই অধ্যক্ষের অনুমোদনের কোনো কাগজপত্র না থাকার পরও তিনি কয়েক লাখ টাকার বিনিময়ে তাকে এমপিওভুক্ত করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
একইভাবে নাটোরের গুরুদাসপুরের রোজী মোজাম্মেল হক ডিগ্রি কলেজে অধ্যক্ষ নিয়োগে মামলা চলমান থাকা ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন না থাকার পরও মো. মাহাতাব উদ্দিন নামের এই অধ্যক্ষের এমপিওভুক্তি করেছেন তিনি। বগুড়ার মহাস্থান মহিসওয়ার ডিগ্রি কলেজে ২০১৭ সালে ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে বাংলা বিভাগে প্রভাষক পদে হেলাল উদ্দিন নামের একজন নিয়োগ পান। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র অনুযায়ী, ২০১৭ সালে নিয়োগের ক্ষেত্রে অবশ্যই এনটিআরসিএ কর্তৃক সুপারিশকৃত হতে হবে। কিন্তু তা না হওয়া সত্ত্বেও পরিচালক আছাদুজ্জামান তাকে এমপিওভুক্ত করেছেন। রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার মহব্বতপুর খানপুর ডিগ্রি কলেজে হারুন অর রশিদ নামের একজন অর্থনীতি বিভাগে প্রভাষক পদে প্যাটার্ন (জনবল কাঠামো) বহির্ভূতভাবে নিয়োগ পেয়েছেন। অথচ তাকে পরিচালক ও এডি আলমাছ টাকার বিনিময়ে সমন্বয়ের মাধ্যমে এমপিওভুক্ত করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রাধানগর বরেন্দ্র কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে প্রভাষক পদে আশরাফুল হক নামের একজন প্যাটার্ন বহির্ভূতভাবে নিয়োগ পেয়েছেন। তাছাড়া এই শিক্ষকের ব্যানবেইসে তথ্য আপডেট না থাকার পরও আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে তাকে এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। এমনিভাবে নওগাঁর রাণীনগর আবাদপুকুর কলেজের ভূগোল বিভাগে প্রদর্শক পদে মোহা. নাজমুল হককে, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার ড. মোজাহারুল ইসলাম মডেল কলেজে কৃষি বিভাগে মো. আব্দুল লতিবের প্রভাষক পদে প্যাটার্ন বহির্ভূত নিয়োগ হওয়ার পরও তাদেরকে এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। অথচ জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০২১ অনুযায়ী, প্যাটার্ন বহির্ভূত এসব পদে এমপিওভুক্তির সুযোগ নেই।
এছাড়া নাটোরের লালপুর উপজেলার কলশনগর কলেজে স্বপ্না খাতুন (মনোবিজ্ঞান) ও মোহা. রাশেদুল ইসলাম (সাচিবিক বিদ্যা), নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার আজম আলী কলেজে প্রভাষক (হিসাববিজ্ঞান) পদে এবং সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার নাটুয়ারপাড়া ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক (দর্শন) মো. আব্দুল বাকীর নিয়োগ প্যাটার্ন বহির্ভূত হওয়ার পরও এমপিওভুক্ত করা হয়েছে।
Advertisement
এর আগে রাজশাহীর পবা উপজেলার ডাঙ্গেরহাট মহিলা কলেজের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীর প্রায় ৫১টি পদের অধিকাংশই এমপিওভুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ইউজিসি অনুমোদিত বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের (নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়) বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স ডিগ্রিধারী মো. মামুনুর রহমান খানকে (প্রভাষক, ইংরেজি) এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। ওই কলেজে মনোবিজ্ঞানের প্রভাষক হিসেবে ইসরাত জাহান ও আইসিটির ল্যাব সহকারী হিসেবে নিয়োগ পাওয়া প্যাটার্ন বহির্ভূত মো. আব্দুল করিমের এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। প্রত্যয়ন কমিটির আপত্তির পরও সমাজবিজ্ঞান বিভাগে প্রভাষক সুরাইয়া পারভীনের এমপিও পাকাপোক্ত করা হয়েছে। ওই কলেজে রসায়ন বিভাগের প্রভাষক হাসিবুল ইসলাম, জীববিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মো. রফিকুল ইসলাম ও আরবি বিভাগের প্রভাষক দেলোয়ার হোসেনের এমপিওভুক্ত হয়েছে, অথচ এই তিনজনই ভুয়া নিবন্ধন সনদে নিয়োগ পেয়েছিলেন।
কৃষি শিক্ষা বিভাগের প্রভাষক মোস্তফা মাহমুদ ফিরোজ নিয়োগের সময় অনার্সের ভুয়া সনদ দাখিল করেছিলেন। এই বিষয়টি এমপিওভুক্তির সময় পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে উল্লেখ থাকার পরও তাকে এমপিওভুক্ত করা হয়েছে।
২০১৫ সালের ১১ নভেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র অনুযায়ী ওই বছরের ২২ অক্টোবরের পরে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে কোনো পদে নিয়োগ প্রদান করা হলে তা অবৈধ। অথচ রাজশাহী মেট্রোপলিটন কলেজে ২০১৭ সালে প্রভাষক পদে নিয়োগ পাওয়া আব্দুর রউফকে গত বছরের নভেম্বরে এডি আলমাছ এমপিওভুক্তির ব্যবস্থা করেছেন। এছাড়া বগুড়া করোনেশন কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগে প্রভাষক পদে মোহা. বাদশা মিয়া নামের একজনের সমন্বয়কৃত এমপিওভুক্তি করা হয়েছে, যা মন্ত্রণালয়ে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সব উপেক্ষা করে এডি আলমাছ এই ব্যক্তির ১২ লাখ টাকা এরিয়া বিল প্রদান করেছেন।
তদন্তের মুখে আলমাছটাকার বিনিময়ে এমপিওভুক্তিসহ নানা কাজ করে দেওয়ার নামে মাউশির রাজশাহী আঞ্চলিক কার্যালয়ের তৎকালীন পরিচালক (কলেজ) ড. বিশ্বজিৎ ব্যানার্জি, সহকারী পরিচালক (কলেজ) মো. আলমাছ উদ্দিন, সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট (সেসিপ) প্রকল্পের গবেষণা কর্মকর্তা মানিক চন্দ্র প্রামাণিক, সহকারী পরিদর্শক মো. আসমত আলী ও মো রাশেদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠলে গত ৮ জানুয়ারি রাজশাহী কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক মু. যহুর আলীকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়। কমিটি ইতোমধ্যেই তদন্ত কাজ সম্পন্ন করেছে। এখন চলছে প্রতিবেদন তৈরির কাজ।
তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক যুহুর আলী বলেন, তদন্তে অনেক কিছুই বেরিয়ে এসেছে। বিভিন্ন পক্ষ লিখিত বক্তব্য দিয়েছে। আমরা বুঝতে পারছি, কলেজে শিক্ষক নিয়োগ থেকে এমপিও করা পর্যন্ত বিপুল টাকার লেনদেন হয়েছে। শিক্ষাখাতে এ ধরনের অধঃপতন জাতিকে শেষ করে দিচ্ছে। এজন্য শিক্ষক এমপিওভুক্তির সিস্টেমটা নিয়ে আমাদের ভাবা উচিত।
আলমাছ এখনো বহালএদিকে দুর্নীতিতে অভিযুক্ত কর্মকর্তা আলমাছের অপসারণ দাবিতে স্থানীয় শিক্ষক, বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা মানববন্ধন, বিভাগীয় কমিশনারকে স্মারকলিপি ও দুদকে একাধিকবার অভিযোগ দিলেও এখনো স্বপদে বহাল থেকে দুর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। ইতোমধ্যেই নানা কৌশলে বর্তমান পরিচালক অধ্যাপক আছাদুজ্জামানকেও নিজের কব্জায় নিয়েছেন আলমাছ। সহকারী পরিচালক আলমাছের পরামর্শ ছাড়া কোনো ফাইলেই স্বাক্ষর করেন না তিনি। আলমাছও ফিরে গেছেন নিজের পুরোনো চেহারায়। এখনো তিনি ঘুষের কারবার চালিয়ে যাচ্ছেন নির্বিঘ্নে। এ যাত্রায় আলমাছের সঙ্গী হয়েছেন পরিচালকও।
পরিচালক ও উপ-পরিচালকের পদশূন্য থাকায় গত বছরের ৫ নভেম্বর থেকে ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত মাউশি রাজশাহী অঞ্চলে নিজের এডির পদসহ পরিচালক ও উপ-পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন আলমাছ। মাত্র কয়েকদিনে ঝড়ের গতিতে আলমাছ তিন শতাধিক এমপিওসহ ৯৩০টি ফাইল অগ্রবর্তী করেন। সবমিলিয়ে গত বছরের ১ মে থেকে ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত নতুন করে ৬৩০টি এমপিও ফাইলসহ ১ হাজার ২৭৭টি ফাইল অগ্রবর্তী করা হয়।
এমপিও করে দেওয়ার নামে মোটা অংকের ঘুষ নেয়ার একাধিক প্রমাণ মিললেও সংশ্লিষ্টরা সেখানেই তাকে দুর্নীতি করে দেওয়ার সুযোগ অব্যাহত রেখেছেন বলে মনে করছেন কলেজশিক্ষক সমিতির নেতারা।
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষক ফোরামের রাজশাহী বিভাগীয় আহ্বায়ক অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম বলেন, মাউশির রাজশাহী অফিসে ১-২ জন ছাড়া কেউ সৎ নন। গত নভেম্বরে কয়েকদিন সহকারী পরিচালক আলমাছ একইসময়ে সহকারী পরিচালক, উপ-পরিচালক ও পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন। ওই সময় তিনি শিক্ষকদের এমপিও করার নামে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। আমাদের শিক্ষকদের নানাভাবে ফাঁদে ফেলে তিনি সুবিধা আদায় করেন। আলমাছ সাবেক প্রতিমন্ত্রী পলকের ঘনিষ্ঠ ছিলেন।
ভুক্তভোগী অধ্যক্ষরা যা বলছেনআলমাছের ঘুষকাণ্ডে ক্ষুব্ধ কলেজের অধ্যক্ষরাও। তার মারমুখী ও বেপরোয়া আচরণে আতঙ্কিত অনেকেই। নাটোরের মহারাজা ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘আমার কলেজের এক শিক্ষকের এমপিও করে দেওয়ার নামে এডি আলমাছ ৪ লাখ টাকা নিয়েছেন। পরে আমাকে একদিন ফোন করে এক রেস্টুরেন্টে ডেকে নিয়ে ৪০ হাজার টাকা নেন। কিন্তু ওই শিক্ষকের এমপিও করে দেননি, এমনকি এখন পর্যন্ত কোনো টাকাও ফেরত দেননি।’
নাটোরের সিংড়া উপজেলার রহমত ইকবাল কলেজের অধ্যক্ষ মো. মনসুর রহমান বলেন, ‘আমার কলেজের দুজন শিক্ষক এমপিওর জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু তাদের আবেদন অনুমোদন না হওয়ায় ১৩ জানুয়ারি ওই শিক্ষকদের নিয়ে আমি মাউশিতে যাই। যাওয়ার পর এডি আলমাছ আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। এমনকি আমাকে মাউশি কার্যালয় থেকে বের করে পুলিশে দেওয়ার হুমকি দেন।’
এ বিষয়ে সহকারী পরিচালক আলমাছের অনিময়-দুর্নীতির বিষয়ে কথা বলতে সোমবার (২৪ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টায় এ প্রতিবেদক মাউশির রাজশাহী আঞ্চলিক কার্যালয়ে ৫ম তলায় তার কক্ষে যান। কিন্তু প্রতিবেদকের উপস্থিতি টের পেয়েই তিনি নিজের চেয়ার থেকে উঠে সিঁড়ি দিয়ে দ্রুতগতিতে নিচে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় প্রতিবেদক আলমাছের সঙ্গে অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখনিই আসছি, অপেক্ষা করেন’।
পরে প্রায় দুই ঘণ্টা মাউশি কার্যালয়ে তার বক্তব্যের জন্য অবস্থান করা হলেও তিনি আর নিজ দপ্তরে আসেননি। এমনকি পরেরদিন মঙ্গলবারও দুপুর পর্যন্ত তার কার্যালয়ে অপেক্ষা করেও পাওয়া যায়নি।
পরিচালক অধ্যাপক আছাদুজ্জামান জানান, আলমাছ অফিসে আসেননি। পরে তিনি নিজেই মুঠোফোনে আলমাছকে অফিসে আসতে বলেন। কিন্তু আলমাছ জানিয়ে দেন, সাংবাদিকরা যা ইচ্ছে লিখুক। তিনি কোনো বক্তব্য দেবেন না।
এমপিওভুক্তিতে অনিয়ম, দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগের বিষয়ে মাউশির রাজশাহী অঞ্চলের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহা. আছাদুজ্জামান বলেন, ‘আমি আসার পর জানামতে কোনো অনিয়ম হয়নি। টাকা লেনদেনের কথাও জানা নেই। তবে আমার আগে টাকা লেনদেন হয়েছে বলে শুনেছি। এ বিষয়ে তদন্তও চলছে।’
এফএ/এমএস