ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সবশেষ নির্বাচনের ফল বাতিল করে বিএনপি দলীয় মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেনকে বিজয়ী ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন আদালত। তবে ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনের পর এরই মধ্যে ৫ বছর পার হয়েছে। ফলে এ রায়ের পর প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, মেয়র পদে ইশরাক হোসেন বসতে পারবেন কি না?
Advertisement
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) জানতে চাওয়া হয় ইশরাক হোসেনের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাহেরুল ইসলাম তৌহিদের কাছে। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, নির্বাচনের পাঁচবছর পার হয়ে গেছে। সেক্ষেত্রে ইশরাক হোসেনের মেয়রের দায়িত্ব পাওয়ার বিষয়টি নির্বাচন কমিশন দেখবে। আদালত মেয়র ঘোষণা করেছেন। কবে, কীভাবে তিনি মেয়রের দায়িত্ব পাবেন সেটা নির্বাচন কমিশনের বিষয়।
অ্যাডভোকেট তাহেরুল ইসলাম তৌহিদ আরও বলেন, ২০২০ সালের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট চুরি হয়েছিল। প্রকাশ্যে নৌকা মার্কায় সিল মারতে বাধ্য করা হয়েছিল। এজন্য তখন আমরা মামলা করেছিলাম।
এর আগে আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম ইশরাক হোসেনকে বিজয়ী ঘোষণা করে রায় দেন।
Advertisement
আদেশে নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী ঘোষিত সাবেক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসকে মেয়র হিসেবে সরকারের গেজেট বাতিল করা হয়। একই সঙ্গে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে ঘোষণা দেন। রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন ইশরাক হোসেন।
আরও পড়ুনইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র ঘোষণাজনগণ অসাধারণ, কিন্তু রাজনৈতিক নেতৃত্ব আমাদের ধ্বংস করেছেঅনিয়ম, দুর্নীতি ও অগ্রহণযোগ্যতার অভিযোগে ডিএসসিসি নির্বাচন ও ফলাফল বাতিল চেয়ে ২০২০ সালের ৩ মার্চ মামলা করেছিলেন মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন। মামলায় তৎকালীন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা, রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আবদুল বাতেন ও দক্ষিণ সিটির মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসসহ মোট আটজনকে বিবাদী করা হয়।
ইশরাকের আইনজীবী তাহেরুল ইসলাম তৌহিদ বলেন, অনিয়ম, দুর্নীতি ও অগ্রহণযোগ্যতার অভিযোগে আমরা নির্বাচন বাতিল চেয়ে মামলা করেছিলাম। একই সঙ্গে তাকে (ইশরাক হোসেন) মেয়র হিসেব ঘোষণার আবেদন করি। আদালত আজ আমাদের পক্ষে রায় দিলেন।
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে উত্তরে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ও দক্ষিণে আরেক আওয়ামী লীগ প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়র নির্বাচিত হন। নির্বাচন কমিশন ওই বছরের ২ ফেব্রুয়ারি ভোটের গেজেট প্রকাশ করেন। এরপর থেকে তারা শপথ নিয়ে মেয়র পদে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তাদের মেয়র পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
Advertisement
নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, ফলাফলের গেজেট প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে সংক্ষুব্ধ প্রার্থী বা তার মনোনীত ব্যক্তিকে আবেদন করতে হয়। মামলার পর পরবর্তী ১৮০ দিনের মধ্যে তা নিষ্পত্তি করবেন ট্রাইব্যুনাল। সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি রায়ে খুশি না হলে ৩০ দিনের মধ্যে তিনি নির্বাচনী আপিল ট্রাইব্যুনালে যেতে পারবেন। নির্বাচনী আপিল ট্রাইব্যুনাল ১২০ দিনের মধ্যে আপিলটি নিষ্পত্তি করবেন।
এমআইএন/কেএসআর/জেআইএম